বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:২৩ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশাল সদর উপজেলার ১ নং রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারন সম্পাদক ও ওয়ার্ড কমিটির দুই সভাপতি লুটেপুটে খাচ্ছেন ইউনিয়নের সবকিছু। যদিও বির্তকিত দুই নেতা বর্তমানে ইউনিয়নের সাধারণ জনগনের কাছে মুর্তিমান আতংক হয়ে উঠেছেন। ফলে কেউ তাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে সাহস পাচ্ছেনা।সূত্র বলছে, ২০১৪ সালের ১৫ আগষ্ঠ শোলনা বাজারে মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষন প্রচার চলাকালীন এই দুই বিতর্কিত আ’লীগ নেতা মানবতাবিরোধী অপরাধী দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ওয়াজ মাইকে প্রচার কারেন যা নিয়ে নিয়ে ইউনিয়ন আ’লীগ নেতা কর্মীদের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়।
এ ঘটনায় ২০১৪ সালের ( ২৫ সেপ্টেম্বর) বৃহস্পতিবার স্থানীয় আ’লীগ নেতা কর্মীদের সমন্বয়ে তিন বিশিষ্ঠ একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিতে স্থানীয় আ;লীগের আজিজ মাস্টার,বাহউদ্দিন ,মাহাতাব উদ্দিন সুরুজ তাদের চুরান্ত রিপোর্ট অনুযায়ী দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অপরাধে দুইজনকে বহিস্কার করা হয়।কিন্তু বর্তমানে বহিস্ককৃত এই দুই নেতা আ’লীগের পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় এখনো চালিয়ে যচ্ছেন জমি দখল, মিমাংসার নামে অর্থ লুটে নেয়াসহ বিভিন্ন রকম অপকর্ম। ১নং রায়পাশা কড়াপুর ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আমিন’র সাথে আতআত করে এসকল অপকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।তবে বর্তমান চেয়ারম্যান আ’লীগ পন্থী হাবিবুর রহমান খোকন এ বিষয়ে কিছুই জানেননা বলে ধারনা করছেন ইউনিয়ন আ.লীগের নেতা কর্মীরা।
বিশ্বস্ত এক সূত্র বলছে, সাবেক ইউপি সদস্য ও ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দাবীদার আনোয়ার হোসেন আয়নাল মেম্বার ২০১৪ সালের (১৮ সেপ্টেম্বর) ৬ মে: টন গম বিক্রি করে অর্থ আত্বসাত করে। গমের পরিমান অনুযায়ী ৩৮,৮৫০ টাকা সরকারী কোষাগারে জমা প্রদানের নিদের্শ দেয়া হলে আয়নাল মেম্বার আইন অমান্য করলে তাকে উক্ত টাকার দিগুন ধার্য্য করে ৭৭,৭০০ টাকা পরিশোধ করার নির্দেশনা দেয়া হয়।তবে সাবেক এই মেম্বার কৌশল অবলম্বন করে বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং সেই গম বিক্রির টাকা আজ পর্যন্ত সরকারী কোষাগারে প্রদান করেননি। কোষাগারের টাকা আত্বসাত করেই আয়নাল মেম্বার খ্যান্ত হয়নি।
এমনকি শোলনা বাজারে একটি জুয়ার আসর থেকে পুলিশ তাকে গ্রাফতার করে।এছাড়াও আয়নাল মেম্বারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে,শোলনা এলাকায় দক্ষিণাঞ্চলের আ’লীগের অভিভাবক আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র পৈতৃক বাড়িতে তার নিজ হাতে বিভিন্ন প্রজাতির গাছের চারা রোপণ করেন।কিন্তু আয়নাল মেম্বার তার পালিত গরুকে ঘাস খাওয়ানোর জন্য বাগানে প্রবেশ করালে গরুতে ব্যাপক গাছ নষ্ট করে ফেলে।
এ নিয়ে হাসানাত আব্দুল্লাহ’র বাড়ির কেয়ারটেকার আফজাল হেসেন আয়নাল মেম্বারকে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি কোনো কর্ণপাত না করে উল্টো আফজালকে অকাত্য ভাষায় গালাগালি ও বিষয়টি যেনো কেউ না যানে সেজন্য হুমকি প্রদান করেন।এ বিষয়ে আফজাল হোসেন ইউনিয়ন আ,লীগ কার্যালয়ে সভাপতি ও সাধারন সম্পাদক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দেন।এদিকে অভিযোগ দেয়ার কারণে আয়নাল মেম্বার ক্ষিপ্ত হয়ে আফজালের চাষকৃত ধান ক্ষেতে ৫/৬ টি গরু দিয়ে সমস্ত ফসল নষ্ট করে দেন।পরবর্তীতে আফজাল আবারো লিখিত অভিযোগ দিলেও আজও তার কোনো ন্যায় বিচার পাননি। সূত্রটি আরও যানায়,সরকারের আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্পে (একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প) বিনামুল্যে অসহায় হত দরিদ্রদের মাঝে বিতরণের কথা থাকলেও আ’লীগের সাধারন সম্পাদক টিপু তারই আপন ভাই দিপুকে এবং আয়নাল মেম্বর পরিবারের সদস্যদের নামে ২টি গরু বিতরন করেন।তার এই স্বজনপ্রীতির ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক সমলোচনার সৃষ্টি হয়। এতে করে ক্ষমতাশীন দল যতটা সুনাম করেছে তা ডুবিয়ে দিয়েছেন বহিস্ককৃত এই দুই নেতা।এদিকে শোলনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি পদ দখল করে রেখেছেন তিনি।
এছাড়াও কড়াপুর পপুলার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠনে তার হস্তক্ষেপে তার সমর্থিত লোকদের কমিটিতে পদ পাইয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।অবৈধভাবে কমিটি বাতিলের জন্য বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ২০১৪ সালের (৩০এপ্রিল) এয়ারপোর্ট থানায় একটি সাধারন ডায়েরী করেন যার নং ১০১৭।সূত্র বলছে,টিপুর পিতা আব্দুল খালেক শোলনা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেখান (যার ইনডেস্ক্র নং ১৯২০৯২)৮ বছর যাবত সরকারী অর্থ আত্বসাত করে।বিষয়টি জানাযানি হলে পরবর্তীতে তাকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়।আনোয়ার হোসেন আয়নালের বিরুদ্ধে এসকল অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য তার ব্যাবহিত (০১৭১৪….৪৯) নাম্বারে ফোন করলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।এবিষয় আমিনুল ইসলাম টিপুকে একাধিকবার ফোন( ০১৭১১….৯০) দিলে তিনি রিসিফ না করায় তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
আমিনুল ইসলাম টিপু ও আনোয়ার হোসেন আয়নালের বিরুদ্ধে সকল অভিযোগের বিষয়ে ইউনিয়ন সভাপতি ফজলুল হক সরদার বলেন,আমিনুল ইসলাম টিপু যা করেছে সেগুলো সত্য তার বিষয়টি আমি অবগত রয়েছি। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ১৫ই আগষ্ঠ শোলনা বাজারে মাইকে বঙ্গবন্ধুর ভাষন চলাকালীন মানবতাবিরোধী অপরাধে দেলোয়ার হোসেন সাঈদীর ওয়াজ মাইকে প্রচার করায় আমিনুল ইসলাম টিপু ও আনোয়ার হোসেন আয়নালকে বহিস্কার করা হয়েছে।
আনোয়ার হোসেন আয়নালের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ’র বাড়ির গাছ গরুতে খেয়ে ফেলে ও নষ্ট করার বিষয়ে আমার কাছে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি, যদি এরকম কোনো অভিযোগ আসতো তাহলে অবশ্যই তার সঠিক বিচার হতো।ইউনিয়ন পরিষদের গম বিক্রির অর্থ আত্বসাত এটা দলীয় কোনো বিষয় না এটার বিষয় ভিন্নতা রয়েছে এই বলে তিনি মুঠো ফোনটি কেটে দেন।স্থানীয় আ’লীগের নেতা কর্মীরা জানান,খবই দ্রুত যদি এই দুই বহিষ্কৃত নেতার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়া হয় তাহলে দিনে দিনে দলের ভাবমূর্তি নস্ট হয়ে যাবে।এমতাবস্থায় বরিশাল জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সম্পাদকের হস্তক্ষেপ অতীব জরুরী।
Leave a Reply