সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৫ পূর্বাহ্ন
এইচ, এম হেলাল॥ বরিশাল নগরীতে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে সরকারি নির্দেশনা মেনে বন্ধ রাখা হয়েছে গণপরিবহন। এমন পরিস্থিতিতে দিন আনে দিন খাওয়া পরিবহন শ্রমিকরা পড়েছেন মহা সংকটে। সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে মালিকরাও নেই তাদের পাশে। সাধারণ পরিবহন শ্রমিকরা বলছেন গাড়ির চাকা না ঘুরলে তাদের আয় রোজগার হয় না।
সরকারি সাহায্যের দিকে তাকিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তারা। স্বাভাবিক সময়ে কল্যাণ তহবিলের নামে শ্রমিক ও মালিক সমিতি প্রতিদিন চাঁদা নিলেও এখন পাঁশে নেই তারা। এ অবস্থায় শ্রমিকরা বলছেন, করোনা হলে আমাদের মারা যেতে হবে না , না খেয়ে আমরা মারা যাব।
বছরের পর বছর যে টাকা গুলি দিই এ টাকা গুলি কোথায় এ প্রশ্ন এখন সকল পরিবহণ শ্রমিকদের। বরিশাল জেলা সড়ক (বাস-মিনিবাস,কোচ,মাইক্রোবাস) শ্রমিক ইউনিয়নে শ্রমিক রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪ হাজর। শ্রমিকদের অভিযোগ, এমন সংকটে তাদের পাশে দাঁড়ানো তো দুরের কথা খোঁজ খবরও নিচ্ছেননা শ্রমিক ইউনিয়ন ও বাস মালিকরা।
এমন পরিস্থিতিতে কেউ কেউ অনাহারেও দিন যাপন করতে হচ্ছে পরিবার নিয়ে। শনিবার (২৫ এপ্রিল ) নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টারমিনাল এলাকায় বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখা গেছে, দু-একটি রিক্সা দাঁড়িয়ে আছে কোন সড়কেই নেই গণপরিবহন। রাস্তায় নেই মানুষের ছোটাছুটি।
আগে প্রতিটি বাস কাউন্টারের সামনে যাত্রীদের জটলা থাকত সেখানে এখন বসার টুল রয়েছে। যেসব মোড়ে বাসের জটলা লেগে থাকত সেখানে এখন দু-একটি রিক্সা দাঁড়িয়ে আছে। কোন সড়কইে নেই গণপরিবহন। রাস্তায় নেই। মানুষের ছোটাছুটি। অপরদিকে শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক ফরিদ হোসেনকে খুঁজে না পাওয়ার অভিযোগ একাধিক শ্রমিকদের।
তাদের দাবী করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে সরকারি নির্দেশনা মেনে বন্ধ রাখা হয়েছে গণপরিবহন। সাহায্য সহযোগিতা নিয়ে মালিকরাও নেই তাদের পাশে। এখন পর্যন্ত শ্রমিক ইউনিয়নের সংগঠন থেকে কোন সাহায্য দেয়া হয়নি ।
প্রশ্ন থেকে যায় এখানে কল্যাণ তহবিলের নামে প্রত্যেক শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রতি মাসে ২০টাকা হারে চাঁদা উত্তলন করা হয়। পাশাপাশি মালিক সমিতি কল্যাণ তহবিলে প্রতিদিন ১০০টাকা দিয়ে আসছেন শ্রমিক ইউনিয়নকে। এমন পরিস্থিতিতে শ্রমিকদের পাশে শ্রমিক ইউনিয়নের পক্ষ থেকে সাহায্য না পাওয়া হতাশ হয়ে পরেছেন শ্রমিকরা।
সুত্র বলছে, মাস পূর্বে বরিশাল জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শ্রমিক ইউনিয়নের মাঝে দুইটন চাল বিতরন করেছেন সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। ওই সময় সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন অনেক হিমসিম খেয়ে শ্রমিকদের চাল বিতরন করেন,সব শ্রমিকদের চাল দিতে পারেননি তিনি।
এদিকে দেখা মেলেনি সংগঠনটির সাধারন সম্পাদক ফরিদ হোসেন’র। অপর এক সুত্র বলছে, শ্রমিক ইউনিয়নের ১৩০ এর শ্রমিক ও ২নং কাশিপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান কামাল হোসেন লিটন মোল্লা বেশ কিছু দিন শ্রমিকদের খাদ্যসামগ্রী দিয়ে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি। যদিও তিনি একজন সাধারন শ্রমিকদের মত। সংগঠনের কোনো পদ না থাকা সত্যেও সব সময় শ্রমিকদের পাশেই রয়েছেন।
নাম বলতে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, বরিশাল- ঢাকা পরিবহনের হেলপার ,বরিশাল এসে করোনা ভাইরাসের কারনে বন্ধ রাখা হয়েছে পরিবহনটি। দুই দিন ধরে পকেটে টাকা দিয়ে কলা রুটি খেয়েছি। সাবেক সাধারন সম্পাদক শাহআলম চাচায় ডেকে খেচুরি আর একটা পেইজ দিয়ে বলছে খাও বাবা করোনা ভাইরাস দুর হলে সব ঠিক হয়ে যাবে । টেনশন করিস না।
সোহেল নামে এক শ্রমিক বলেন, শাহাআলম চাচায় তো কয় দিন ধরে খেচুরি খাওয়ার ব্যবস্থা করছে এখন তা ও বন্ধ হইয়া গেছে।
এ বিষয় ২৮ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, বরিশাল জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শ্রমিক ইউনিয়নের মাঝে দুইটন চাল বিতরন করা হয়েছে। সব শ্রমিকদের চাল দিতে পারিনি তবে জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের মাঝে আবারো চাল বিতরন করা হবে এতে হতাশ হবার কিছু নেই । সাধারন সম্পাদকের বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি মন্তব্য করতে রাজি হননি।
জরুরি ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতে বের হয়ে কেউ কেউ আবার ফিরে যাচ্ছেন ঘরে। মোড়ে মোড়ে রয়েছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা। এক্ষেত্রে সরকারি সাহায্য সহযোগিতা প্রয়োজন।
Leave a Reply