উন্নয়ন কাজ শেষ হলেও আগৈলঝাড়ায় খালে বাঁধ অপসারণ না করায় পানি সংকটে ইরি-বোরো চাষ Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ০৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৪ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




উন্নয়ন কাজ শেষ হলেও আগৈলঝাড়ায় খালে বাঁধ অপসারণ না করায় পানি সংকটে ইরি-বোরো চাষ

উন্নয়ন কাজ শেষ হলেও আগৈলঝাড়ায় খালে বাঁধ অপসারণ না করায় পানি সংকটে ইরি-বোরো চাষ




থানা প্রতিনিধি॥  বরিশালের আগৈলঝাড়ায় তীব্র পানি সেচ তীব্র সংকটের কারনে অনাবাদী রয়েছে কৃষকের জমি। উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নের ২৭টি প্রকল্পের আওতায় আভ্যন্তরীণ ৮৬ কি.মি. খাল খননের প্রকল্প গত দুই যুগেও বাস্তবায়ন না হওয়ায় পানি সংকটের মুখে পড়ে জরুরীভাবে খালগুলো পুণঃ খননের দাবি জানিয়েছেন কৃষকেরা। আভ্যন্তরীণ খালগুলো ভরাটের কারণে পানির তীব্র সংকটের কারণে চলতি বোরো মৌসুমে চাষ করা জমিতেও আশাতীত ফলন না হকার আশংকায় চরম হতাশা চাষিরা।

উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে কৃষি অধিদপ্তর, বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন(বিএডিসি), স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস থেকে দুই যুগ আগে খাল খননের প্রকল্প গ্রহন করে তা দাখিল করা হলেও আজও ওই প্রকল্প লাল ফিতায় বন্দি রয়েছে। অন্যদিকে সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য খালে দেয়া বাঁধের কারনেও পানি প্রবাহ ব্যহত হচ্ছে। উন্নয়ন কাজ শেষ হলেও খালে দেয়া বাঁধ ঠিকাদার অপসারণ না করায় জোয়ারের সময়ও খালে পনি পাচ্ছে না কৃষকেরা।

উপজেলা কৃষি অফিসার নাসির উদ্দিন জানান, সেচের জন্য উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে ২৭টি প্রকল্পর আওতায় ৮৬কি. মি. খাল খননের প্রকল্প দাখিল করা হয়েছে অন্তত দুই যুগ আগে। কিন্ত কৃষকের জন্য পানি সেচের কোন ব্যবস্থা আজও বাস্তবায়ন হয়নি।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, দাখিলকৃত প্রকল্পের মধ্যে উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নে মোট ২২কি.মি. খালের মধ্যে রয়েছে বাশাইল গ্রামের মতিউর রহমানের স্ব-মিল থেকে ছোট বাশাইল-গোয়াইল-ছোট ডুমুরিয়া পর্যন্ত ৮কি.মি., একই এলাকায় কামাল সরদারের বাড়ী থেকে হায়াতুলাহ ফলিয়ার বাড়ী পর্যন্ত দেড় কি.মি., দক্ষিণ বাহাদুরপুর হইতে মাগুরা ছাদেক বেপারীর বাড়ী পর্যন্ত ৩কি.মি., বাহাদুরপুর রেজিঃ প্রাঃ বিদ্যালয় থেকে বটু বকুলার বাড়ী পর্যন্ত দেড় কি.মি., রামানন্দেরআঁক স্কুল থেকে ক্লাব বাড়ী পর্যন্ত আড়াই কি. মি., বাশাইল খন্দকার বাড়ীর ব্রিজ থেকে চেংগুটিয়া ঢালীবাড়ী মসজিদ পর্যন্ত আড়াই কি.মি., রাজিহার জোড়া ব্রিজ থেকে কুমার ভাঙ্গা পর্যন্ত ৩কি.মি.সহ ২২কি.মি. খাল খনন জরুরী হয়ে পরেছে।

বাকাল ইউনিয়নে শুকিয়ে যাওয়া খালের পরিমান ১৭কি.মি.। এর মধ্যে ১নং ব্রিজ থেকে আদাবাড়ী পর্যন্ত দেড় কি.মি., কোদালধোয়া থেকে বড়মগরা পর্যন্ত ২ কি.মি., কোদালধোয়া থেকে ফেনাবাড়ী পর্যন্ত ২কি.মি., কোদালধোয়া শিমুলবাড়ী পর্যন্ত দেড় কি. মি., বাকাল ১নং ব্রিজ থেকে কোদালধোয়া পর্যন্ত ৪কি.মি., বাকাল হাট থেকে আমবাড়ী পর্যন্ত ২কি.মি. ও রাজিহার বাজার থেকে বাকাল হাট পর্যন্ত ৪কি.মি. সহ ১৭কি.মি. খাল পুনঃ খননের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

গৈলা ইউনিয়নে ফুলশ্রী ডাক্তারখানা থেকে উত্তর শিহিপাশা হয়ে কুমার ভাঙ্গা পর্যন্ত সাড়ে তিন কি.মি., নিমতলা থেকে টেমার হয়ে সেরাল হাই স্কুল পর্যন্ত ৩কি.মি., গৈলার আবুল হোসেন লাল্টুর বাড়ীর ব্রিজ থেকে গুপ্তের হাট পর্যন্ত আড়াই কি.মি., রথখোলা থেকে ভদ্রপাড়া পর্যন্ত ৩কি.মি, রশিদ ফকিরের ব্রিজ থেকে রামের বাজার পর্যন্ত ২কি.মি, পতিহার জুরান সরকারের বাড়ী থেকে কারিকর পাড়া পর্যন্ত ১কি.মি., কালুরপাড় থেকে রামের বাজার পর্যন্ত ২কি.মি. ও কালুপাড়া গেট থেকে আস্কর বলভ বাড়ী পর্যন্ত ৫কি.মি.সহ মোট ২২কি.মি.।

রত্নপুর ইউনিয়নে মিশ্রিপাড়া বাজার থেকে চাউকাঠী পর্যন্ত ৩কি.মি., মোহনকাঠী কলেজ থেকে থানেশ্বরকাঠী পর্যন্ত ৪কি.মি., বরিয়ালী ওয়াপদা থেকে মোলাপাড়া-ত্রিমুখী-বারপাইকা-দুশমী পর্যন্ত ৭কি.মি., কাঠিরা-দুশুমী থেকে দক্ষিণে উজিরপুর সীমানা পর্যন্ত ৬কি.মি., ছয়গ্রাম তালুকদার বাড়ী থেকে ডাক্তার বাড়ী পর্যন্ত ২কি.মি. ও ঐচারমাঠ থেখে কাঠিরা পর্যন্ত ৩কি.মি. সহ ২৫কি.মি. খালে পানি সরবরাহ না থাকায় পুনঃ খনন দরকার।

উপজেলায় গ্রামীণ শাখা খালগুলোর ২৭টি প্রকল্পের আওতায় সর্বমোট ৮৬ কি.মি. খাল খনন জরুরী হয়ে পরেছে। এ খালগুলোতে অতীতের মত পানি সরবরাহ নিশ্চিত করতে না পারলে আগৈলঝাড়া উপজেলায় অদূর-ভবিষ্যতে পতিত জমির পরিমান বাড়ার পাশাপাশি স্থানীয় খাদ্য উৎপাদন সহসাই কমে যাবে বলে চাষিদের পাশপাশি কৃষি কর্মকর্তাও আশংকা প্রকাশ করেছেন।

সূত্র মতে, সরকারের বিভিন্ন দপ্তর পূর্বে খাল খননের প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও বেশ কয়েক বছর পর্যন্ত এ কর্মসূচি বাস্তবায়নে সরকারী অগ্রাধিকার পাচ্ছে না। কাবিখা, কাবিটা, টিয়ার, জিয়ারসহ এডিপি ও এলজিইডি বিভিন্ন অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়ন করলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদাসীনতার কারণে খাল পুণঃ খননের মত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাদ দিয়ে বিভিন্ন অনগ্রাধিকার প্রকল্প বাস্তবায়নে কাজ করছে।

রাজিহার গ্রামের কৃষক সত্য রঞ্জন হালদার জানান, তার এলাকার মতো অনেক ইরি ব্লকের জমি এবছর পানির অভাবে চাষ করতে পারছে না কৃষকেরা। তার উপর ধানের বাজার মূল্য কম থাকায়ও জমি চাষে আগ্রহ হারাচ্ছে কৃষক। উপজেলার আভ্যন্তরীণ খালগুলো জরুরী ভাবে পুন খননের দাবি জানিয়েছেন কৃষকেরা।

সংশিষ্ট কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, উপজেলায় চলতি বছর ২৬হাজার কৃষক পরিবারের মাধ্যমে ৯ হাজার ৬’শ ৪৭ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফসল উৎপাদনের লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ৪৩ হাজার ৩শ ১৩ মে. টন চাল। তবে সেচ সংকটের কারণে উৎপাদন চরমভাবে ব্যহত হচ্ছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD