মঙ্গলবার, ২১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:২৪ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিনিধি॥ টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে ওয়ারেন্ট অফিসার পদে চাকুরি পাইয়ে দেয়ার কথা বলে প্রতারণাকালে সাইফুল ইসলাম (২৫) নামের এক ভূয়া মেজরকে আটক করেছে র্যাব-৮ সদস্যরা। এসময় জব্দ করা হয়েছে তার সাথে থাকা ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনী’ লেখা সাদা রংয়ের একটি প্রাইভেট কার।
আজ সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২টার দিকে নগরীর চৌমাথা লেক সংলগ্ন এলাকা থেকে স্থানীয়রা তাকে আটক করে র্যাবের হাতে সোপর্দ করে। তবে কৌশলে পালিয়ে গেছে ভুয়া মেজরের সাথে থাকা প্রাইভেট কারের চালক।
আটককৃত সাইফুল ইসলাম বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার বিশারকান্দি ইউনিয়নের কুমারের পাড় এলাকার নুরুজ্জামান হাওলাদারের ছেলে বলে দাবি করেছে।
এর আগে গত বছরের ২৮ অক্টোবর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালে ভূয়া চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে রোগীর সেবা করতে গিয়ে কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশের হাতে আটক হয়েছিলো।
ভুক্তভোগী নগরীর চৌমাথা এলাকার ডি.আর মটরস এন্ড কার ডেকোরেশনের মালিক মো. ইশতিয়াক তুহিন জানান, সাইফুল প্রায়ই তার প্রাইভেট কার ডেকরেশনের মালামাল কিনতে বাসতো। সেই সুযোগে তিনি দোকান মালিক ও তার পরিবার সম্পর্কে খোঁজ খবর নিতো।
এক পর্যায় তিনি নিজেকে সেনাবাহিনীর মেজর পরিচয় দিয়ে দোকান মালিকের ছেলে ইশতিয়াক তুহিনের ছোট ভাইকে চার লাখ টাকার বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে চাকুরি পাইয়ে দেয়ার প্রস্তাব দেয়।
এতে রাজি হয়ে যায় ইশতিয়াক ও তার বাবা। সে অনুযায়ী সোমবার (২৩ সেপ্টেম্বর) তুহিনের ভাই’র বায়োডাটা ও নগদ ৫০ হাজার টাকা নিতে পুনরায় ডিআর মটরস এন্ড কার ডেকোরেশন নামক প্রতিষ্ঠানে আসে।
তুহিন বলেন, ‘ওই ব্যক্তি নিজেকে সেনাবাহিনীর লোক পরিচয় দিলেও তার আরণ এবং ভাব-ভঙ্গি সন্দেহজনক মনে হয়। কেননা তিনি কখনো নিজেকে সেনাবাহিনীর মেয়র আবার কখনো চিকিৎসক পরিচয় দেয়। ফলে সাইফুলের বিষয়টি র্যাব-৮ কে অবহিত করেন তারা।
পরে র্যাব সদস্যা ঘটনাস্থলে পৌছে ভূয়া মেজর সাইফুল ইসলামকে আটক ও তার ব্যবহৃত প্রাইভেটক কারটি জব্দ করে র্যাব-৮ সদর দপ্তরে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে র্যাব-৮ কার্যালয় থেকে প্রেরিত ই-মেইল বার্তায় এই তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, সাইফুল ইসলাম নামের ওই প্রতারক বিগত ২-৩ বছর ধরে নিজেকে চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে সহজ সরল মানুষের সাথে প্রতারনা করে আসছিলো। সে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধিন রোগীদের ফাঁদে ফেলে সে রোগী ও তাদের স্বজনদের টাকা হাতিয়ে নেয়।
এছাড়া বিগত ২ বছর পূর্বে শেবাচিম হাসপাতালের চিকিৎসক পরিচয় দেয়া প্রতারক সাইফুল একই হাসপাতালের আব্দুর রশিদের কাছ থেকে তার ছেলেকে চাকুরি দেয়ার কথা বলে এক লাখ ৫ হাজার টাকা নিয়ে উধাও হয়ে যায়।
সর্বশেষ গত বছরের ২৮ অক্টোবার সাইফুল তার গলার সাথে স্টেথোস্কোপ ঝুলিয়ে হাসপাতালের ক্যান্সার বিভাগের সামনে ঘোরাফেরা করছিলো। তখন আব্দুর রশিদ নামের ওই কর্মচারী তাকে চিনে ফেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সাহায্যে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
Leave a Reply