মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:২৮ অপরাহ্ন
আমজাদ হোসেন, বাউফল প্রতিনিধি॥ পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার তেঁতুলিয়া নদীর ধূলিয়া পয়েন্টে শুরু হয়েছে তীব্র নদী ভাঙন। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে ইতিমধ্যে বিলীন হয়ে হয়ে গেছে উপজেলার ধূলিয়া লঞ্চঘাটের গ্যাংওয়ে। গ্যাংওয়ে থেকে পল্টুন বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে বন্ধ রয়েছে নৌ যোগাযোগ। প্রতিদিন এই ঘাট থেকে ঢাকা চাঁদপুর ভোলাসহ বিভিন্ন রুটে কয়েক হাজার যাত্রী চলাচল করে। হঠাৎ নদী ভাঙনের কবলে পড়ে নৌ যোগাযোগ বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছে সাধারন যাত্রীরা।
ধূলিয়া লঞ্চঘাট এলাকার ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দারা ভাঙ্গনের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিজেদের দোকান আর বসত ঘর সরিয়ে নেয়ার কাজে ব্যাস্ত সময় পার করছে। কারো হাতে যেন দম ফেলার সময় নেই। নদী পাড়ের বাসিন্দাদের মধ্যে দেখা দিয়েছে চরম উৎকন্ঠা। তীব্র নদী ভাঙ্গনের কারনে নিদ্রাহীন রাত কাটছে তাদের। ইতিমধ্যে ধূলিয়া নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে কয়েকশত বাড়ি ঘর, ফসলি জমি মসজিদ এবং মাদরাসা। নদী ভাঙ্গনের কারনে হুমকির মুখে রয়েছে ধূলিয়া দাখিল মাদরাসা, এনকে সরকারি প্রাথমকি বিদ্যালয় ভবনসহ একাধিক ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান।
শীঘ্রই নদী ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করা না গেলে যে কোনো সময়ে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে এই শিক্ষা দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ একাধিক ধর্মীয় উপাসনালয়। ভাষা সৈনিক সৈয়দ আশরাফের সমাধি অব্যাহত নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যেতে পারে স্থানীয়রা জানায় সোমবার মধ্য রাত থেকে শুরু হয়েছে তীব্র ভাঙ্গন। ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে স্থানীয় ব্যবসায়ী ডা. মামুন, বরুন মেকার, সুমন গাজী, বিকাশ রায়, স্বপন কুমার মিস্ত্রী, কৃষ্ঞ দাস, নয়ন গাজী, সোহরাব হোসেন ও আল-আমিন শরীফের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
গত কয়েক মাসের ভাঙ্গনে গৃহহীন হয়েছে এই এলাকার কয়েকশত পরিবার। নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে কয়েক হাজার একর ফসলি জমি। বর্তমানে গৃহহীন এসব মানুষ আশ্রয় নিয়েছে স্থানীয় একাধিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গন এবং স্থানীয় মানুষদের বাড়ির আঙিনায়। সব মিলিয়ে নদী ভাঙনের কবলে পড়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে এই জনপদের শত শত মানুষ।
আবুল গাজী নামে এক জেলে জানান, গত দুই বছরে তিন বার তাঁর বসত ভিটে ভেঙ্গে নিয়েছে তেঁতুলিয়া। ভাঙ্গনের হাত থেকে বাঁচতে আবারও ঘর সরিয়ে নিতে হচ্ছে তাঁকে। কিন্তু এবার তিনি কোথায় ঘর বাঁধবেন কিংবা কোথায় আশ্রয় নিবেন কিছুুই জানেন না তিনি। একই অবস্থা সবুজ হাওলাদার, মোশারেফ গাজী, আলতাফ হাওলাদার সহ অসংখ্য পরিবারের।
ধূলিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রব হাওলাদার বলেন, পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী পরিদর্শনের পর নদী ভাঙ্গন রোধে তিন হাজার জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছিলো। কিন্তু তেঁতুলিয়া নদীর তীব্র স্রোতে তা নদী গর্ভেই বিলীন হয়ে গেছে। অচিরেই যদি নদী ভাঙ্গন রোধে কোনো ব্যবস্থা না গ্রহন করা হয় তাহলে এ জনপথে ঘটতে পারে মানবিক বিপর্যয়।
নদী ভাঙ্গন রোধে দ্রত এবং কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করার জোর দাবী জানায় স্থানীয়রা। এ বিষয়ে বাউফল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পিজুস চন্দ্র দের দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন তৈরী করার কাজ চলছে। প্রতিবেদন তৈরী হলে এ বিষয়ে দ্রত ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রেরন করা হবে।
Leave a Reply