শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ১১:৫৭ অপরাহ্ন
হুমায়ূন কবির রোকনঃ আওয়ামী মানে জনতা,আওয়ামী লীগ মানে জনতার কথা বলে যে রাজনৈতিক দল।যদিও রাজনীতি মানে নীতির রাজা না রাজার নীতি বিষয়টা প্রায় আড়াই হাজার বছর ধরে সমাজে অমীমাংসিত।তবু বলা যায়,আওয়ামী লীগ উভয় ক্ষেত্রেই অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ৭০ বছরের রাজনীতির চর্চ্চার মাধ্যমে।একটা বিশ্বখ্যাত চলচ্চিত্র আছে ম্যান ফর অল সীজন।বলা যায়, আন্দোলন,নির্বাচন,উন্নয়ন সব ক্ষেত্রেই আওয়ামী লীগ আন্তরিক ছিলো,আছে,থাকবে।জনগন ভোট দেয় কেন?গনতন্ত্র এবং উন্নয়ন অক্ষুন্ন রাখার জন্য।ভোট কাউকে নেতা বানায় না।নির্বাচন নেতা তৈরীর কোন ফর্মূলা নয়।জনতার সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি নির্বাচিত করার জন্যই নির্বাচন।তিনিই যোগ্য প্রতিনিধি যিনি মসনদের মোহকে অতিক্রম করে জনতার আকাঙ্খা বাস্তবায়নের দরুন কাজ করেন।৭০ দশকের একটি গান এখনও সর্বাধিক জনপ্রিয়- মুজিব বাইয়া যাওরে.. বঙ্গপিতা কি বাইবে?নৌকা !যে নৌকা বঙ্গবন্ধুর,সে নৌকা আওয়ামী লীগের।এখন যা জননেত্রী শেখ হাসিনার।পন্ডিত নেহেরুর একটা কথা বঙ্গবন্ধু বেশ গুরুত্ব দিতেন-অত্যাধিক সতর্কতার চেয়ে ঝুঁকিপূর্ন আর কিছু নেই।নির্বাচন এবং আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুকে উভয় ক্ষেত্রেই সতর্ক থাকতে হতো।এবং তিনি তা ছিলেন বিধায় দেশ ও জাতিকে শেষ পর্যন্ত বাচাঁতে পেরেছেন কিন্তু নিজেকে বাঁচাতে পারেননি।নিঃশেষ হয়ে গেলো তার গোটা পরিবার।ইন্নালিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন।মহান স্রষ্টা তার কোন নিয়ামতকে অস্বীকার করতে নিষেধ করেন।সেহেতু বেঁচে যাওয়া দুই বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনা,শেখ রেহানা নিশ্চয়ই ৭৫’পরবর্তী আল্লাহপাকের নেয়ামত।আজ জননেত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীন বাংলাদেশের সরকার প্রধান।তিনি দেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে দিয়েছেন এখন কেবল অগ্রযাত্রা।রবীন্দ্রনাথ বলেছেন,বাঙ্গালী কাতল মাছ হয়ে জন্মায়,পুঁটি মাছ হয়ে মারা যায়।কিন্তু না,জননেত্রী শেখ হাসিনার তুমুল কর্মক্ষমতা এবং মেধার দ্বারা দেশকে বিশ্বের দরবারে নিয়ে গেছেন।কিন্তু তার একার পক্ষে আর কত সম্ভব? তার মনোনীত প্রার্থীকে ব্যালটের মাধ্যমে জয়যুক্ত করা না হলে রবীন্দ্রনাথের কথারই যে পুনঃরাবৃত্তি হবে।গনতন্ত্র মাঝপথে মুখ থুবড়ে পড়বে।শেখ হাসিনার মনোনীত প্রার্থী বলতে ভুল বোঝার কোন অবকাশ নেই।তিনি গনতন্ত্র যেমন বোঝেন,গনতান্ত্রিক কেন্দ্রীকতাও তেমন বোঝেন। কেন্দ্রীয় কমিটি তথা প্রেসিডিয়াম সদস্যদের মতামতকে তিনি সর্বদাই গুরুত্ব দিয়ে এসেছেন। এখনও দেন।তিনি যখন দ্ব্যর্থহীন কন্ঠে বলেন,প্রার্থী নয় নৌকার জন্য কাজ করবেন,নৌকায় ভোট দিবেন।তখন একথা আর বলার অপেক্ষা রাখে না যে,স্বজনপ্রীতিকে তিনি কোন হিসাবের মধ্যেই রাখেন না।দূর্যোগে,সংকটে মানুষ আওয়ামী লীগকেই স্মরণ করে।মানুষ আওয়ামী লীগকে কেন ভোট দেয়?যে কোন ব্যূরোক্র্যাসীকেই আ.লীগ গৌন বিবেচনা করে,জনগন,জনমতকে গনতন্ত্রের উন্নয়নের নিয়ামক শক্তি মনে করে,পল্টনে গলাবাজী করার চেয়ে দেশের অবকাঠামোগত উন্নয়নে জোর দেয় যা প্রমানীত।স্বাধীনতা বিরোধী,জঙ্গীবাদ দমনে আপোষহীন,আন্তর্জাতিক বিশ্বে তিনি সর্বদা মিত্র বাড়াতে সচেষ্ট থাকে,পররাষ্ট্রনীতিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রথমে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয় জাতিসংঘকে।যার জন্য জাতিসংঘ বাংলাদেশকে শুধু যে মৌখিক গুরুত্ব দেয় তা নয় বরং অনেক বিষয়ে জাতিসংঘ বাংলাদেশের উপর নির্ভরও করে। স্বরাষ্ট্র নীতিতে যে কোন ধরনের অবক্ষয়ের বিরুদ্ধেই আওয়ামী লীগ সোচ্চার।যত আলোচনাই থাক,নিঃসন্দেহে জননেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক জীবিত কিংবদন্তী।যিনি বিগত রক্তাক্ত পাথর সময়ের বাংলাদেশকে শুধু অবলোকনই করেননি অনেক ধকল সয়ে আজও বেঁচে আছেন,এজন্য আল্লাহতায়ালার কাছে অশেষ শুকরিয়া।বঙ্গবন্ধু তার আপন মামা,কিন্তু সে পরিচয় নিয়ে তিনি বসে থাকেন নি।পার্বত্য চট্রগ্রামের বিদ্রোহীদেরকে শান্তিচুক্তির আওতায় এনে এক যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করেছেন।যারা হিল ট্র্যাকসে থাকেন কিংবা বোঝেন তারা জানেন জনসংহতি সমিতি তথা শান্তি বাহিনী জুম্মো জাতীয়তাবাদের নিশান ওড়ানো কি ভয়াবহ একটা বিষয়। জননেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ একাধারে সংসদ সদস্য,পার্বত্য শান্তিচুক্তি বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান,স্থানীয় সরকার বিষয়ক সংসদীয় কমিটির প্রধান।তার সুযোগ্য সন্তান সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ অবশ্যই সে আলোর ঝলকানি,কিন্তু হঠাৎ আলোর ঝলকানি নয়।বাংলার রক্তাক্ত অভ্যূদয়ের সাথে সেও বেড়ে উঠেছে,৭৫’এর সেই বিভীষিকায় তার মা বেগম শাহানারা আবদুল্লাহ রক্তাক্ত আহত হয়ে ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন তার বুকে তখনও আগলে ছিলো সেদিনের শিশু সাদিক,অবুঝ শিশু সাদিকের প্রায় সামনেই নিহত হলো তার ভাই সুকান্ত আবদুল্লাহ।৪ দিন নিখোঁজ ছিলেন শিশু সাদিক আর তার মা।৪ দিন পরে যখন জননেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ দু’জনকে জীবিত দেখতে পান তার সেদিনের অনুভূতি আজও কোন কথন লিখনি ব্যক্ত করতে পারেনি।আজ সাদিক আবদুল্লাহ মেয়র প্রার্থী। ক্ষমতাসীন দলের হয়েও সাদিক ক্ষমতার দাপট দেখায়নি,বরং রাত বিরাত বিরাতে যে যখন তাকে চেয়েছে সে তাকে পেয়েছে।সাদিক মনের দিক থেকে বড়লোক,কিন্তু টাকার দিক থেকে নয়।বাপ,ভাইদের কাছ থেকে ধার করা টাকায় নির্বাচন করছেন।নির্বাচিত হলে মেয়র সাদিকের পক্ষে যা সম্ভব হবে অন্য কারো পক্ষে তা সম্ভব নাও হতে পারে বলে বিজ্ঞ অনেক মহলের অভিমত।কেননা সাদিকের পিতা মন্ত্রীর মর্যাদায় দেশের শীর্ষ স্থানীয় প্রভাবশালী রাজনীতিবিদ।পিতা-পুত্রের সম্পর্কের বাইরেও একই রাজনীতি করার সুবাদে নির্বাচিত হলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশন সাদিকের মাধ্যমে তার কাছ থেকে আর্থ সামাজিক উন্নয়নের জন্য অনেক কিছু আদায় করতে পারবে।দেশের সার্বিক উন্নয়নের প্রশ্নে জননেতা আবুল হাসানাত আবদুল্লাহর কাছে প্রতিপক্ষ রাজনীতি বলে কিছু নেই,তবু জাত্যাভিমানের দরুন ভিন্ন রাজনৈতিক নেতা-নেত্রীর কাছে কিছু না চাওয়ার ছেদো গরিমা আমাদের এখনও গেলোনা,এর জন্য আমরা নিশ্চয়ই অনেকখানি পিছিয়ে আছি।
Leave a Reply