শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৮:৫৬ অপরাহ্ন
মো. সুজন মোল্লা,বানারীপাড়া (বরিশাল) প্রতিনিধি: বানারীপাড়ায় বেসরকারি ঋণদান প্রতিষ্ঠান উদ্দীপন (এনজিও) থেকে ঋণ নিয়ে পরিশোধ করতে না পারায় বাইশারী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শেণির কর্মচারী পরপর ২বার মিনি স্ট্রোক করা জাহানারা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে তাকে জেলে পাঠিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। সে বাইশারী ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের মৃত মো. সালেক মালের স্ত্রী।
জাহানারা বেগম ঠিক সময় ঋণের টাকা পরিশোধ করতে না পারায় বানারীপাড়া উপজেলা শাখা উদ্দীপন এনজিও’র কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে বরিশাল আদালতে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় বানারীপাড়া থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার (১২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২টার দিকে জাহানারা বেগমকে তার কর্মস্থল বাইশারী বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে ওইদিনই জেল হাজতে পাঠান।
জাহানারা বেগমের বড় ছেলে মো. মিঠু মাল জানান,২০১৮ সালের প্রথম দিকে উদ্দীপন এনজিও থেকে প্রথমে তার স্ত্রী শান্তা ইসলামের নামে ২০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। সেই টাকা পরিশোধের পরে দ্বিতীয় মেয়াদে ৩০ হাজার টাকা নেয় তারা। দ্বিতীয় মেয়াদের অর্ধেক পরিমান টাকা পরিশোধ হবার পরে তার স্ত্রীর নাম পরিবর্তন করে মা জাহানারা বেগমের নামে মাসিক কিস্ততে ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন তারা। প্রতিবারের টাকা দিয়েই প্যারালাইটসয়ে আক্রান্ত তার পিতা মো. সালেক মালের চিকিৎসার জন্য ধারকরা টাকা পরিশোধ করেন বলেনও তিনি জানান।
চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী মা জাহানারা বেগমের সামান্য বেতনের টাকা দিয়ে প্রায় ১৫ বছর পর্যন্ত প্যারালাইটসে আক্রান্ত পিতার চিকিৎসা করাতে ও সংসার চালাতে গিয়ে যাবতীয় সহায় সম্বল বলতে যা কিছু ছিলো তার বেশির ভাগই বিক্রি করতে হয়েছে তাদেরকে। বর্তমানে মাথা গোঁজার ঠাই বলতে যে সম্পত্তিটুকু আছে সেখানেই পরিবারের ৪ সদসস্যের বসবাস তাদের।
পিতা অসুস্থ্য থাকাকালীন সময় আত্বীয়-স্বজনদের কাছ থেকে ধারদেনা করেই পিতার চিকিৎসা করাতে হতো তাদের। ধারের সেই টাকা পরিশোধ করতেই উদ্দীপন এনজিও থেকে ঋণ নিতে হয়েছিলো তাদের।
শেষ পর্যায়ে সুদসহ ৫২ হাজার টাকার জন্য তার মা জাহানারা বেগমকে জেলে যেতে হয়েছে,তার মধ্য থেকে অনেক টাকাই তারা পরিশোধ করেছেন এবং তাদের কিছু টাকা সঞ্চয়ও আছে বলে জানান মিঠু মাল।
তবে ঋণের বইটি তাদের কাছে না থাকায় (বইটি এনজিওর কাছে) ঠিক কতো টাকা বর্তমানে ঋণদান প্রতিষ্ঠানটি তাদের কাছে পাবেন তা তারা বলতে পারছেন না। ঋণের বই উদ্দীপন এনজিও নিয়ে যাওয়ার পরেও তারা মাসিক (এক মাস পরপর) কয়েকটি কিস্তি পরিশোধ করেছেন বলেও জানান মিঠু মাল।এবিষয়ে বানারীপাড়া উপজেলা শাখার উদ্দীপন এনজিওর ম্যানেজার মো. কামরুল ইসলামের মুঠোফোনে (০১৭১৬০৪০৩১৭) জানতে চাইলে নম্বরটি ব্যাস্ত পাওয়া যায়।
Leave a Reply