শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৩৩ অপরাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২১ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করেছে টাইগাররা।দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সাকিব আল হাসান ও মুশফিকুর রহিমের অর্ধশতক এবং মাহামুদুল্লাহ রিয়াদের ঝড়ো ইনিংসে ভর করে ৬ উইকেট হারিয়ে ৩৩০ রান তুলে বাংলাদেশ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ৪০ ওভার পর্যন্ত এগিয়েই ছিল প্রোটিয়ারা। তবে শেষদিকে মোস্তাফিজুর রহমান আর মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বোলিং তোপে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান তুলতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
ওভালে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার দলকে দারুণ শুরু এনে দেন। ওপেনিং জুটিতে আসে ৬০ রান। তামিম দলীয় ৬০ রানের মাথায় ফেলুকাওয়ার শিকার হয়ে সাজঘরে ফেরেন।
আউট হওয়ার আগে ২৯ বলে ১৬ রান করেন তামিম। দলকে বড় স্কোরের আশা দেখিয়ে ফিরে যান সৌম্য সরকারও। ক্রিস মরিসের শিকার হওয়ার আগে এই ব্যাটসম্যান ৩০ বলে করেন ৪২ রান। তখন বাংলাদেশের স্কোর ছিল ৭৫।
এরপর মুশফিকুর রহিম ও সাকিব আল হাসান ১৪২ রানের দুর্দান্ত জুটি গড়েন। এটি দক্ষিণ আফিকার বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ জুটি। ২১৭ রানের মাথায় সাকিব ৮৪ বলে ৭৪ রান করে ফিরলে ভাঙে এই জুটি। এরপর দলীয় ২৪২ রানের মাথায় ইমরান তাহিরের শিকার হন মোহাম্মদ মিথুন।
স্কোরবোর্ডে ৮ রান যোগ হতে না হতেই সেঞ্চুরির কাছে থাকা মুশফিকও ফিরে যান। এরপর মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ আর মোসাদ্দেক হোসেনের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে ৩০০ রান পার করে বাংলাদেশ। যদিও দলীয় ৩১৬ রানের মাথায় মোসাদ্দেক সাজঘরে ফেরেন। এই জুটিতে আসে মূল্যবান ৬৬ রান। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ তুলে ৩৩০ রান।
বাংলাদেশের ইতিহাসে এটিই সর্বোচ্চ রান। এর আগে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩২৯ রান তুলেছিল টাইগাররা। সাকিব আল হাসান ৭৫ (৮৪), মুশফিকুর রহিম ৭৮ (৮০), সৌম্য সরকার ৪২ (৩০), মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ ৪৬ (৩৩) রান করেন।
বিশাল টার্গেটে খেলতে নেমে শুরুটা দারুণ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে দশম ওভারে এসে মিরাজের বলে ক্যাচ উঠিয়ে দেন ডি কক। যদিও মেুশফিক সেই ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হন। তবে মুশফিকের হাত গলে বল বের হলে রান নিতে যান দুই ব্যাটসম্যান।
সাথে সাথে বল কুড়িয়ে সোজা থ্রোতে স্ট্যাম্প ভেঙে দেন মুশফিক। এ ব্যাটসম্যান দ্রুত ফিরলেও ডু প্লেসিকে নিয়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলেন এইডেন মার্করাম। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে তারা তোলেন ৫৩ রান। ২০তম ওভারে এসে প্রতিরোধ ভেঙে দেন সাকিব আল হাসান। নিজের দ্বিতীয় স্পেলে বোলিংয়ে এসে বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সরাসরি বোল্ড করেন ৪৪ রান করা মার্করামকে।
মার্করাম আউট হতেই মারমুখি হয়ে উঠেন ডু প্লেসি। ৪২ বলেই এই ব্যাটসম্যান তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। তবে তাকে বেশিক্ষণ ক্রিজে থাকতে দেননি মিরাজ। নিজের দ্বিতীয় স্পেলে এসেই দলীয় ১৪৭ রানের মাথায় তাকে সোজা বোল্ড করেন। এই ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার আগে ৫৩ বলে করেন ৬৩ রান।
তবে অধিনায়কের বিদায়ের পরও দমে যায়নি প্রোটিয়ারা। এরপর ডসেনকে নিয়ে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন মিলার। ৩৬তম ওভারে এসে সেই জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজ। তিনি ৩৮ রান করা মিলারকে ফেরান। যদিও এর আগে তিনবার ক্যাচ উঠান মিলার। তবে বাংলাদেশ সেটা লুফে নিতে পারেনি।
ডসেন ফিরতেই তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে প্রোটিয়াদের ইনিংস। একা ডুমিনি চেষ্টা করে গেলেও দলকে জয়ের দিকে এগিয়ে নিতে পারেননি। মোস্তাফিজ, সাকিব আর সাইফের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত ৮ উইকেট হারিয়ে ৩০৯ রান তুলতে সক্ষম হয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
বাংলাদেশ ৩৩০-৬ (৫০)
সাকিব আল হাসান ৭৫ (৮৪), মুশফিকুর রহিম ৭৮ (৮০), সৌম্য সরকার ৪২ (৩০), মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ ৪৬ (৩৩)।
আন্দিল ফেলুকাওয়া ১০-৫২-২, ক্রিস মরিস ১০-৭৩-২, ইমরান তাহির ১০-৫৭-২।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৩০৯-৮ (৫০)
ডু প্লেসি ৬৩ (৫৩), এইডেন মার্করাম ৪৫ (৫৬), জেপি ডুমিনি ৪৫ (৩৭), ভ্যান ডার ডাসেন ৪১ (৩৮)।
মোস্তাফিজুর রহমান ১০-৬৭-৩, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন ৮-৫৭-২, সাকিব আল হাসান ১০-৫০১, মেহেদি মিরাজ ১০-৪৪-১।
Leave a Reply