শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:০৬ অপরাহ্ন
বাবুগঞ্জ প্রতিনিধি ॥ প্রায় দেড় মাস যাবৎ বাবুগঞ্জের গুরুত্বপূর্ণ মীরগঞ্জ খেঁয়া ঘাটের দরপত্র অহব্বান নিয়ে ইজারাদার ও জেলা পরিষদের মধ্যে চলছে রশি টানাটানি। নিয়মানুযায়ী প্রতি বাংলা নতুন বছর অর্থাৎ ১ বৈশাক থেকে এক বছরের চুক্তিতে খেঁয়া ঘাটের ইজারার টোল আদায় শুরু।
সে মতে বাংলা ১৪২৬-২৭ (ইংরেজী ২০১৯-২০)সালের ইজারার দরপত্র চৈত্র মাসেই আহবান করা হয়। প্রথম দুই দফায় কোন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এতে দরপত্র সংগ্রহ না করাতে জেলা পরিষদ বৈশাক মাসের জন্য ঘাটটি অস্থায়ী চুক্তিতে স্থানীয় মাঈনুল হোসেন পারভেজকে লিজ দিয়ে তৃতীয় দফায় পুনঃদরপত্র আহবান করে জেলা পরিষদ এবং একমাত্র বাবুগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পারভেজ ট্রেডার্সের অনুকুলে দরপত্র সংগ্রহ করেন প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মাঈনুল হোসেন পারভেজ।
পারভেজ সরকারি নিয়মে থেকে এক মাস ঘাটে শুধু বৈশাক মাসে টাকা টোল আদায় করেন যার মধ্যে ঘাঁটসহ বিবিধ খরচ রয়েছে টাকা। সে অভিজ্ঞতার আলোকে তিনি বাৎররিক হিসেব করে টাকার সংখ্যা উল্লেখ করে দরপত্র সংগ্রহ করেন। যেখানে অন্যকোন প্রতিষ্ঠানের উপস্থিতি ছিল না।
পারভেজ বলেন, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান তার সহকারির মাধ্যমে উৎকোচের বিনিময়ে তাকে ইজারা পাইয়ে দেয়ার চুক্তির প্রস্তাব করেন। এ নিয়ে পারভেজের সাথে দফায় দফায় আলোচনা হলেও তিনি দাবীকৃত উৎকোচ দিতে অস্বীকৃতি জানান। এমনি ভাবে একে একে ৬ষ্ঠ দফায় দরপত্র আহবান করেন জেলা পরিষদ এবং প্রতিবারই দরদাতা হিসেবে শুধু পারভেজ ট্রেডার্সই একক ভাবে দরপত্র সংগ্রহ করেন।
সপ্তম বারে অন্য এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে আতাত করে উৎকোচের বিনিময়ে ৭৪ লাখ ৫০ হাজার টাকায় চুড়ান্ত দরদাতা হিসেবে ইজারা পাইয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন বলে জানান পারভেজ। এ ব্যপারে তিনি বলেন, এতে সরকার প্রায় অর্ধকোটি টাকার রাজস্ব হারাবে তাই সরকারি রাজস্ব ফাঁকি না দিয়ে সরকারের ঘোষিত ১ কোটি ১৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকায়ই দরপত্র সংগ্রহ করা হবে। সে মতে তিনি ৮ম বারের মত দরপত্র আহবানের জন্য গত ১৪মে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বরাবর লিখিত আবেদনও করেছিলেন।
কিন্তু চেয়ারম্যান কোন বিষয়ে কর্নপাত না করে পারভেজকে দেয়া অস্থায়ী চুক্তির ইজারার মেয়াদ আরো ২০ দিন বাড়িয়ে দেন। পারভেজ অনুপায় হয়ে ১৬ মে বরিশাল সহকারি জেলা জজ আদালতে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অফিযোগ নং দেওয়ানী-১৫৫/১৯। প্রয়োজনে তিনি উচ্চ আদালতে যাবেন বলেও জানান।
এ ব্যপারে বরিশাল-৩(বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসনের সংসদ সদস্য গোলাম কিবরিয়া টিপু বলেন, আমি সবকিছুই শুনেছি। ৪টি উপজেলা বাবুগঞ্জ,মুলাদী,হিজলা, মেহেন্দীগঞ্জ ও জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকার প্রায় লক্ষাধীক সাধরণ মানুষ মীরগঞ্জ খেঁয়া এবং ফেরী পারাপারের উপর নির্ভর করে সড়ক পথে যাতায়াত করেন। শুধু তাই নয় বিভিন্ন পণ্যবাহী যানবাহনও ওই পথে পারাপার হয়। মীরগঞ্জ ঘাঁটের ইজারা নিয়ে কে রশি টানাটানি করল কে টালবাহানা করল তা দেখার বিষয় নয়। সরকারি নিয়মের বাহিরে ঘাঁটে টোল আদায়ে কোন অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। অনিয়ম হলে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply