বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:৩২ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:-বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার শ্রীপুরে মৃত্যু ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে দেড় একর জমি জাল-জালিয়াতি দলিল সম্পাদন করে হাতিয়ে নিয়েছিল।জালিয়াতি চক্রের সদস্যদের ধরতে মাঠে নামছে দূর্নীতি দমন কমিশনের তদন্ত টিম জানান, দূদকের পরিচালক মোঃ আকতার হোসেন।
পুলিশ-স্হানীয়রা জানায়,শ্রীপুর ইউনিয়নের বাহেরচর গ্রামের মেম্বার আঃ সালাম হাওলাদার,শ্রীপুর ইউনিয়নের আ. লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহমুদুল হাসান বেপারী, আ.লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লার প্রকাশ্য মদদে বাহেরচর গ্রামের শামসুল হক মাতুব্বর ক্রেতা সেজে ওই গ্রামের ৩ বছর আগেই মৃত: কাসেম খাঁনকে জীবিত দেখিয়ে,শ্রীপুর গ্রামের সিরাজ ফকিরকে দাতা দাঁড় করিয়ে দলিল সম্পাদন করেছে।
দেড় একর জমি দখলের পরে ওরারিশগনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে দলিল দেখানো হলে,জালিয়াতি চক্রের সদস্যদের নাম বেরিয়ে আসে।ওই জাল-জালিয়াতি দলের সদস্যদের বাঁচাতে মেম্বার-চেয়ারম্যান আ.লীগ নেতারা মরিয়া হয়ে উঠেছেন।স্হানীয়দের অভিযোগ ৫লাখ টাকার বিনিময়ে জালিয়াতি চক্রের সদস্যদের বাঁচাতে মেম্বার-চেয়ারম্যান,আ. লীগের নেতারা পূর্নরায় দলিলসহ জমি ফেরত শর্তে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে!
শ্রীপুর ইউনিয়নের সেচ্ছাসেবকলীগের নেতা ও কাসেম খাঁনের বড় জামাতা মোঃ দুলাল সিকদার(দুলাল মেম্বার) সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে জানিয়েছেন,আমার শশুর মৃত্যুর ৬/৭ মাস পরে অর্থাৎ চলতি বছরের ২৯ এপ্রিল সোমবার শামসুল হক মাতুব্বর,সিরাজ সিকদারের ছেলে সালাউদ্দিন টিটু সিকদার(সার্ভেয়ার),খলিল মৃধার ছেলে সাইফুল মৃধা,জামাল ভূইয়া ছেলে মিন্টু ভূইয়া,আসমত আলী বেপারীর ছেলে জয়নাল বেপারী,সিরাজ ফকির সহ ৮/১০ জনের যোগসাজজে শ্রীপুর থেকে পাতারহাট রেজিষ্ট্রারী অফিসে গিয়ে জাল দলিল সম্পাদন পূর্বক দেড় একর জমি দখলে নিয়াছে।আমার ছোট শ্যালককেও উৎখাত করার চেষ্টা করেছিল।
এনিয়ে ঝগড়া-বিবাদ হলে,শামসুল হক মাতুব্বর বলেছে-তোর বাপ আমার কাছে জমি বিক্রি করে সাফ-কাবলা দলিল দিয়েছে।স্হানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে,সে আমাদের বিরুদ্ধে শ্রীপুর পুলিশ ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেয়।শালিস-মিমাংসা সময়ে জাল দলিল বাহির করে।আমার শশুরের সই জাল এবং মৃত্যুর পর দলিল প্রমাণিত হওয়ায় সত্যতা স্বীকার করেছে।শ্রীপুর ইউনিয়নের আ.লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মোঃ হারুন মোল্লা,সাবেক মেম্বার মাহমুদ হাসান বেপারী, মেম্বার সালাম হাওলার পূর্নরায় জমি দলিলের মাধ্যমে ফেরত দেয়ার রায় দিয়েছে।এধরনের জাল-জালিয়াতি চক্রের কঠিন সাজা দরকার।কিন্তু লাখ লাখ টাকার ঘুষ বানিজ্যের কারণেই চুপসে গেছেন।
আলিমাবাদ ইউনিয়নের আ.লীগের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আমির হোসেন গাজী সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বলেন-মাহমুদ বেপারী,সালাম হাওলাদার,হারুন মোল্লা ৫লাখ টাকা খেয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা মরিয়া হয়ে ওঠেছে।শামসুল হক মাতুব্বর এভাবে ১৫/২০টি জাল দলিল সম্পাদন করে গরীবের সম্পদ আত্মসাৎ করেছে।এই জাল জালিয়াতি চক্রের কঠিন শাস্তি দাবি করেছেন এলাকার জনসাধারন।
বাহেরচর গ্রামের মেম্বার আঃ সালাম হাওলাদার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেছেন,আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে শামসুল হক মাতুব্বর নিজের খরচে জমির দলিল দিয়ে ফেরত দিবে।এই বলেই মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন।শ্রীপুর ইউনিয়নের আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মেম্বার মোঃ মাহমুদ বেপারী সাংবাদিকদের জানিয়েছে,সালাম হাওলাদারের বক্তব্যে একই সহমত পোষণ করেছে।
এব্যাপারে শ্রীপুর ইউনিয়নের আ.লীগের সভাপতি ও চেয়ারম্যান মোঃ হারুন অর রশীদ মোল্লা সাংবাদিকদের সঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি।এবিষয়ে মেহেন্দিগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) মোঃ মজিবর রহমান জানায়,অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্হা নেয়া হবে।
বরিশাল জজ আদালতের বিজ্ঞ আইনজীবি ও সরকারী কৌশলী(জিপি) এড. মোঃ ইসমাঈল হোসেন নেগবান বলেন,জারজ সন্তান কখনো বৈধ সন্তান নয়।জাল দলিল সম্পাদনকারী ক্রেতা কখনো বৈধ মালিক হবেনা।সে কিভাবে দাতা সেঁজে দলিল দিবেন।এই দলিল আইনগত বৈধতা পাবেনা।আইনগত সমাধান জাল দলিলের বিরুদ্ধে আদালতে প্রথমে দলিল বাতিল মামলা করতে হবে।আদালতের রায়ে দলিল বাতিল হলে,মেহেন্দিগঞ্জ সহকারী কমিশনার(ভূমি) এসি ল্যান্ডের কাছে নামজারী মিসকেসের আবেদন করতে হবে।
ওই আবেদনের ওরারিশগনের নামে জমি কর্তন পূর্বক নামজারী খতিয়ান রেকর্ড সংশোধন হবে।এছাড়াও দলিলের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরী(জিডি) করে সরাসরি ওয়ারিশগনের নামে নামজারী রেকর্ড সংশোধনের আবেদন এসি ল্যান্ডের করা যাবে।এসিল্যান্ড ওয়ারিশ সার্টিফিকেট অনুসারে রেকর্ড সংশোধন করে দেবে।যদি পূর্নরায় দলিল সম্পাদন করা হয়।তাহলে আগের জাল দলিল সম্পাদন একই অপরাধ বলে গন্য হবে।
এবিষয়ে বরিশাল পুলিশ সুপার(এসপি) মোঃ সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান,জাল দলিল সম্পাদন সবচেয়ে ভয়াবহ দূর্নীতি ও ভয়ঙ্কর অপরাধ।এদের কাউকে ছাড় দেয়া হবেনা।উক্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত দাতা-গ্রীহিতা,দলিল লেখক,স্বাক্ষী,সার্ভেয়ার সহ সকলকেই আইনের আওতায় আনা হবে।জাল দলিল সম্পাদনের সঙ্গে সম্পৃক্তদের দ্রুত গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
Leave a Reply