মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:১৭ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ গায়ে হলুদের দিনটাকে ভিন্ন ভাবে স্মরণীয় রাখতে চেয়েছিলেন ফারহানা আফরোজ। সে কারণেই গত ১৩ আগস্ট যশোর শহরব্যাপী ভাই-বোন, বন্ধুদের নিয়ে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করেন তিনি। পরে সেই শোভাযাত্রার ছবি ও ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। ব্যতিক্রমী এই আয়োজনের অনেকেই প্রশংসা করলেও কেউ কেউ বিরূপ মন্তব্যও করেছেন। নেটিজেনরা বিষয়টিকে ভালোভাবে নিতে না পারলেও শ্বশুরবাড়ির লোকজন বিষয়টিকে ভালোভাবেই নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন কনে ফারহানা। তবে মানহানির মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন ফারহানার মা।
বুধবার (২৬ আগস্ট) রাতে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে শ্বশুরবাড়ি থেকে যুক্ত হয়ে বাইকার বধূ ফারহানা জানালেন বিয়ে-সংসার, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনা নিয়ে স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির প্রতিক্রিয়া। সেই সঙ্গে জানালেন যশোরে মানহানি মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন তার মা।
বাইকার বধূ বলেন, তার আকদ হয় ২০১৭ সালে। কিন্তু বিয়ের মূল আনুষ্ঠানিকতা হয় গত ১৪ আগস্ট। তার একটি সন্তানও রয়েছে। এখন তিনি ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। বাইক চালিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে যাওয়া এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত-সমালোচিত হওয়ার পর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের প্রতিক্রিয়া কী- এমন প্রশ্নের জবাবে ফারহানা বলেন, আমি এখন পাবনায় শ্বশুরবাড়িতে আছি। আমার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকদের এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। আমার স্বামী অবাক হয়ে বলেছেন, তুমি মোটরসাইকেল চালিয়ে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে গেছো এতে মানুষের সমস্যা কোথায়?
কখন থেকে বাইক চালানো শুরু জানতে চাইলে ফারহানা বলেন, স্কুল জীবনে চুরি করে বাবার মোটরসাইকেল চালানো শিখি। এরপর টুকটাক চালালেও মূলত ২০১৭ সালে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর থেকে পুরোদমে মোটরসাইকেল চালানো শুরু করি। মোটরসাইকেল চালিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতাযাতও করি। সাধারণ ভাবনা থেকেই বাইক চালানো শিখি। ছোট বেলায় প্রাইভেটকারও চালানোও শিখি। বাইক ও প্রাইভেটকার চালানোর মতো হেলিকপ্টার ও প্লেন চালানো যদি এত সহজ হতো তা হলে আমি সেটাও শিখতাম। এক কথায় বলতে গেলে যদি সুযোগ পেতাম তাহলে বিমানও চালাতাম।
সবশেষ বলতে চাই, মানুষের কথাই আমি থেমে যাব না। একটা মেয়ের প্রধান শক্তি তার পরিবার। সেটা বাবার বাড়ি হোক, আর শ্বশুরবাড়ি হোক। পরিবার যদি সঙ্গে থাকে তাহলে মেয়েদের যুদ্ধজয় করার শক্তি অটোমেটিক চলে আসে। পাবনার কাশিনাথপুরের বাসিন্দা ও টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ার হাসনাইন রাফির সঙ্গে যশোর শহরের সার্কিট হাউজ এলাকার মেয়ে ফারহানা আফরোজের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠান হয় গত ১৪ আগস্ট। এর আগের দিন ১৩ আগস্ট ছিল ফারহানার গায়ে হলুদ।
মূলত গায়ে হলুদের দিনে শহরজুড়ে বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজন নিয়ে বাইক র্যালি (মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা) করেন ফারহানা। ওই শোভাযাত্রার ছবি এ কাজে নিযুক্ত ফটোগ্রাফার তার অনুমতি নিয়েই ফেসবুকে দেন। এরপর ব্যতিক্রমী এ আয়োজনের ছবি ভাইরাল হয়। ফারহানা যশোর সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে ২০১১ সালে এসএসসি ও ২০১৩ সালে যশোর আব্দুর রাজ্জাক কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। এখন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ডিআইইউ) থেকে এইচআর-এ এমবিএ করছেন তিনি।
Leave a Reply