শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৩৫ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চ অগ্নিকাণ্ডে বাবা-মা ও ছোট ভাইকে হারিয়েছে হাফছা। সেই হাফসা এবার দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে। রেজাল্ট শুনেই বাবা-মা ভাইয়ের কথা মনে করে কান্না থামছে না হাফছার। খুঁজছে বাবা-মা ভাইকে।
লঞ্চ দুর্ঘটনায় নিহত আব্দুল হাকিম শরীফ ও পাখি বেগম দম্পতি বড় মেয়ে হাফসা। সে বরগুনার সদর উপজেলার কালীরতবক দাখিল মাদরাসা থেকে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
দক্ষিণ বড় লবনগোলা গ্রামের নিখোঁজ আব্দুল হাকিম শরীফের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, ওই দম্পতির তিন সন্তান সুমাইয়া (১৪), ফজলুল হক (১০) ও হাফছা বেগমকে (১৮)। তিনজনই মাদরাসা পড়ুয়া শিক্ষার্থী। বাবা-মা ও ভাইয়ের ছবি হাতে নিয়ে বারবার মূর্ছা যাচ্ছিল তিন ভাই বোন।
কান্নাজড়িত কণ্ঠে হাফসা বেগম বলে, ‘আমি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করেছি। আমার বাবা মা আমার রেজাল্ট দেখে যেতে পারেনি। আমাকে নিয়ে তাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। এই রেজাল্ট দিয়ে কি হবে?’
হাফসার স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্তানদের বাবা-মায়ের কাছে রেখে কাজের সন্ধানে ঢাকা থাকতেন শরীফ-পাখি দম্পতি। তাদের ইচ্ছে ছিল হাফছা পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলে ভালো ছেলে দেখে বিয়ে দেবেন। বরগুনার বেতাগী উপজেলার সরিষামুড়ি ইউনিয়নে হাফসার বিয়ের জন্য পাত্র দেখে রেখেছিলেন তারা। উভয়পক্ষের মতামতে আজ শুক্রবার ছিল সেই বিয়ের দিনক্ষণ।
সেই বিয়ের কেটাকাটা করতেই স্বামীর কাছে ঢাকা এসেছিলেন পাখি বেগম। ফেরার পথেই ঘটে দুর্ঘটনা। আর খুঁজে পাওয়া যায়নি তাদের।
পাখি বেগমের মা ফরিদা বেগম কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, নাতি ভালো রেজাল্ট করলো। শুধু আমার মেয়ে আর জামাই দেখে যেতে পারল না। এই কষ্ট আমি কোথায় রাখি। যদি তাদের লাশ পেতাম তাও মনে শান্তনা দিতে পারতাম।
Leave a Reply