শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৩৬ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দুবাইয়ে ড্যান্সবারের আড়ালে নারী পাচারের অভিযোগে জনপ্রিয় কোরিওগ্রাফার ইভান শাহরিয়ার সোহাগকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাকে গ্রেফতারের পরেই একে একে বেড়িয়ে আসছে এই কাজের সঙ্গে জড়িত অনেকেরই নাম। আর সেই তালিকায় রয়েছে ঢাকাইয়া সিনেমার অভিনেত্রী অপু বিশ্বাসের ম্যানেজার গৌতমের নামও।
জানা যায়, দুবাইয়ে ড্যান্স বারের মালিক আজম খান, তার ভাই নাজিম এবং এরশাদের কাছে নৃত্যশিল্পীদের তুলে দিতেন গৌতম। তিনি শোবিজ পাড়ায় অপু বিশ্বাসের ম্যানেজার ও কোরিওগ্রাফার হিসেবে পরিচিত। দুবাইয়ে নৃত্যশিল্পীদের পাচারের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া অন্তত দুই আসামির জবানবন্দিতে গৌতমের নাম উঠে এসেছে। তার পুরো নাম গৌতম সাহা।
এ ব্যাপারে দেশিয় গণমাধ্যকে অপু বিশ্বাস বলেন, তিনি চলচ্চিত্রে অনেকের সঙ্গে কাজ করলেও গৌতম নামে তার কোনো ম্যানেজার নেই, কখনো ছিলও না। অবশ্য কোরিওগ্রাফার গৌতমসহ চলচ্চিত্র অঙ্গনে গৌতম নামের বেশ কয়েকজনকে চেনেন তিনি।
তবে চলচ্চিত্র সংশ্নিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নারী পাচারে অভিযুক্ত গৌতমই অপু বিশ্বাসের ম্যানেজার। এদিকে এ ব্যাপারে গৌতমের ভাষ্য, কাজের ক্ষেত্রে ইভান শাহরিয়ার সোহাগসহ অনেককে চিনলেও দুবাইয়ে কোনো নৃত্যশিল্পীকে তিনি পাঠাননি। তাছাড়া তিনি যতবার বিদেশ গেছেন, তা রেকর্ড রয়েছে। মানব পাচার মামলায় গ্রেফতার একাধিক আসামি তার নাম জানিয়েছেন জানালে তিনি তড়িঘড়ি ফোনটি কেটে দেন। পরে কয়েকবার তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তার মোবাইল ফোন ব্যস্ত দেখা যায়।
এর আগে জুলাই মাসে দুবাই পুলিশের তথ্যের ভিত্তিতে গত মাসে সিআইডি আজম খানসহ তার পাচারকারী চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেফতার করে। এরপর তাদের মধ্যে ৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। সেই জবানবন্দির ভিত্তিতেই গ্রেফতার করা হয় সোহাগকে।
সিআইডি জানায়, নাচের আড়ালে নারী পাচার করে থাকেন তারা। সোহাগ ট্রান্স ট্রুপ নামে একটি ডান্স কোম্পানি পরিচালনা করে আসছিলেন। বিভিন্ন করপোরেট অনুষ্ঠানে নাচ করে তার দল।
চক্রটির বাংলাদেশের মূলহোতা আজমসহ তার দুই সহযোগী ময়না ও মো. আলামিন হোসেন ওরফে ডায়মন্ডকে গ্রেফতারের পর সিআইডি জানায়, প্রথমে হোটেলে চাকরি দেয়ার কথা বলে ২০/২২ বছর বয়সী তরুণীদের প্রলুব্ধ করা হতো। বিশ্বস্ততা অর্জনের জন্য বেতন হিসেবে ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা নগদ পরিশোধ করা হতো। শুধু তাই নয় দুবাইয়ে যাওয়া-আসা বাবদ সব ধরনের খরচও দিত দালাল চক্র। কিন্তু দুবাই যাওয়ার পরে তাদেরকে হোটেলে জিম্মি করা হয়, জোরপূর্বক দেহ ব্যবসাসহ ড্যান্সক্লাবে নাচতে বাধ্য করা হয়।
গত আট বছরে এভাবে প্রলুব্ধ করে চাকরির নামে বাংলাদেশের শতাধিক তরুণী-কিশোরীকে দুবাইয়ে পাচার করা হয়েছে। তাদেরকে দিয়ে প্রস্টিটিউশনে জড়াতে বাধ্য করেছে আন্তর্জাতিক নারী পাচার চক্র।
Leave a Reply