শনিবার, ২৫ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:২৩ পূর্বাহ্ন
মো. সুজন মোল্লা,বানারীপাড়া॥ জীবদ্ধশায় ছিলেন দারিদ্রতার সাথে সংগ্রাম করা একজন সাদাসিদে নারী। বিবাহের পর থেকেই কষ্টকে জয় করার তীব্র আশা বুকে ধারণ করে জীবন নামক যান্ত্রিক যানটি চালিয়ে আসছিলেন বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার প্রতান্তনাঞ্চল বিশারকান্দি ইউনিয়নের দিন মজুর দিভূদান চৌধুরীর স্ত্রী মেরী চৌধুরী।
খ্রিষ্টান সমাপ্রদায়ের এই গৃহবধুর কোল জুরে ফুটফুটে দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে, বড় ছেলের বয়স ১০ ও ছোট ছেলের ৪ বছর। এরমধ্যেই মেরী চৌধুরী জটিল কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।
বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়ে সহায় সম্বল বলতে যা কিছু ছিলো তার সবটুকুই শেষ করেছেন স্বামী দিভূদান। একেবারে অন্তিম সময় নিয়ে এসেছিলেন বানারীপাড়া উপজেলা ৫০ শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানে চিকিৎসারত অবস্থায় শনিবার ১২ ডিসেম্বর রাতে বিচিত্র এ ভূবনের মায়া ত্যাগ করে পারি জমান অনন্ত কালের জীবনে।
জীবনের সুখ ও দুঃখের সারথীর মৃত্যুর পরে তার লাশটি যে ভ্যান ভাড়া দিয়ে বাড়িতে নিয়ে যাবেন, এমন অর্থ ছিলোনা তার কাছে। এ খবর পেয়ে বানারীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও সলিয়াবাকপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াউল হক মিন্টু ৫ হাজার টাকা দেন লাশ বাড়িতে নিয়ে যাবার জন্য।
লাশ বাড়িতে নেওয়ার পরে শেষকৃত্য সহ অন্যান্য কার্য সম্পাদন করার জন্য অর্থের প্রয়োজন হয়ে পরে আবারো। বানারীপাড়া প্রেসক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিক শাহিনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি পোষ্ট দেখে পটুয়াখালি জেলার মঠবাড়িয়া থানায় কর্মরত পুলিশের উপ-সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মো. জাহিদুল ইসলাম জাহিদ মেরী চৌধুরীর শেষ কৃত্যানুষ্ঠানের জন্য ৩ হাজার টাকা বিশারকান্দির চৌকিদার মোস্তফা ও সিদ্দিকের মাধ্যমে তার পরিবারের কাছে পাঠিয়ে দেন।
পুলিশের এই অফিসার বানারীপাড়া থানায় কর্মরত থাকাবস্থায় অনেক সামাজিক ও সেবা মূলক কাজ করে মানবতার পুলিশ খেতাবে ভূষিত হয়েছিলেন। তাকে বলা হতো মানবতার ফেরিওয়ালাও। জীবনের শেষ যাত্রায় স্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়ে যারা সহযোগীতা করেছেন, জানিয়েছেন সহমর্মিতা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন দিনমজুর দিভূদান।
Leave a Reply