সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১২:৩৩ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বান্দবীর সাথে অবৈধ সম্পর্ক তাহিরপুর উপজেলায় নব-যোগদানকারী ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজের। এই খরব সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হলে তাহিরপুর উপজেলা জুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে।ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজের অবৈধ সর্ম্পকের ফল সেই বান্দবী এখন সন্তান সম্ভবা। কিন্তু সব কিছুই গোপন রেখে আসিফ চাইছিলেন অনাগত সন্তানকে গর্ভপাত ঘটাতে। কিন্তু রাজি হলেন না বান্ধবী। এ নিয়ে সম্পর্কের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে হাটে হাড়ি ভেঙে দিল সেই ভোক্তভোগী বান্দবী।
এ ঘটনা গড়ায় প্রশাসনের সর্বোচ্চ পর্যায়ে। ময়মনসিংহের ভুক্তভোগী ওই নারী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব বরাবর একটি লিখিত অভিযোগে। সর্বশেষ এনিয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত নেমেছে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন।
জানা যায়, তাহিরপুর উপজেলায় নব-যোগদানকারী ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজের তার পূর্বে বিয়ে করা স্ত্রীর সাথে ডির্ভোস হয়। কিন্তু শ্বশুর পেশাদার উকিল হওয়ায় বিবাহ বিচ্ছেদ বিলম্বিত হচ্ছিল চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এডিসি(এলএ)আসিফ ইমতিয়াজের(পরিচিতি নং-১৬৭৫৩)। কিন্তু নতুন বান্ধবীর সাথে সংসার করার তর সইছিল না তার। শেষ পর্যন্ত পৃথক বাসা নিয়ে সংসার শুরু করেন বিয়ের আগেই। অসাবধানতাবশত পেটে চলে আসে সন্তান। অভিযোগ ওঠায় চট্টগ্রাম থেকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)হিসেবে বদলি করা হয়।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ঐ নারীর লিখিত অভিযোগ, বিগত বছরের এপ্রিল মাসে বান্ধবীর মাধ্যমে আসিফ ইমতিয়াজের সাথে আমার পরিচয় হয়। পরে জানতে পারি তার ডিভোর্স হয়ে গেছে। সেই সূত্র ধরে কয়েকদিন ফোনে কথা হয়। এরপর এপ্রিল মাসে তার সাথে ঢাকায় এসে সাক্ষাৎ করি। প্রথম সাক্ষাতেই আমাদের বিয়ে নিয়ে কথা হয়।
এরপর মে মাসের প্রথম সপ্তাহ সে মিরপুর-৬ নম্বরে একটি বাসা ভাড়া নেয়। বাসা নেয়ার খবর দেয়ার পর আমি ঢাকায় আসি।ওই বাসায় তার বোন-ভগ্নিপতির সাথে কথা হয়। তাদের সামনেই মে মাসের মধ্যে বিয়ে করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন আসিফ। ওই সময় আসিফ ডিভোর্স সম্পর্কে জানায় তার আগে শ্বশুর আইনজীবী হওয়ায় ডিভোসের প্রক্রিয়াটায় একটু সময় বেশি লাগছে। যেদিন ডিভোর্স পেপার হাতে পাবে পরের দিনই বিয়ে করবেন। এমন আশ্বাস ও তার বোন ও ভগ্নিপতিকে সাক্ষী রাখায় আমি তার সাথে থাকতে রাজি হই। বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্থানে একসাথে থাকতাম।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের জানুয়ারিতে আমি গর্ভবতী হই। এটা তাকে জানানোর পরই আমার সাথে খারাপ আচরণ শুরু করে। ওই শিশু নষ্ট করার জন্য প্রচন্ড চাপ দেয়। এক সপ্তাহ পরই সে আমাকে ফেসবুকসহ সব যোগাযোগ মাধ্যমে বøক করে দেয়। তার সাথে আমি কোনো যোগাযোগ করতে পারছিলাম না। নানাভাবে তাকে ম্যাসেজ দেয়ার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হই। পরে চট্টগ্রামে গিয়ে তার সাথে সাক্ষাৎ করার চেষ্টা করেও পারিনি। পরে ডিসির সাথে সাক্ষাৎ করে ঘটনা বলা পর তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন এবং একজন এডিসিকে দায়িত্ব দেন।
এডিসি তার কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি পুরোপুরি অস্বীকার করে। আমি সব ডকুমেন্ট দেয়ার পর এডিসি তাকে চট্টগ্রাম থেকে বদলির করার সুপারিশ করেন। তার সুপারিশ মতে চলতি বছরের এগ্রিল মাসে তাকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও)হিসেবে বদলি করা হয়। এরপর থেকে তার সাথে আমার কোনও যোগাযোগ নেই। আর জানুয়ারি মাসে তার সাথে আমার শেষ সাক্ষাৎ হয়। এরপর সে দেখা করতে চাইলেও আমি করিনি। এখন পর্যন্ত নানাভাবে তিনি (ইউএনও) আমাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, আমি ইউএনওকে ডেকে ওই নারীর অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি ওই নারীর সাথে তার সম্পর্ক থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন। পরবর্তীতে মন্ত্রিপরিষদ থেকে এসংক্রান্ত একটি চিঠি পাবার পর ইতোমধ্যে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(উপ পরিচালক স্থানীয় সরকার)কে তদন্তভার দেয়া হয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ ইমতিয়াজের সরকারি মুঠোফোনে কল করলেও তিনি বলেন, আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। আমি খুবই ব্যস্ত আছি এই বিষয়ে আপনার সাথে পরে কথা বলব।
Leave a Reply