সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৪:০৯ পূর্বাহ্ন
বানারীপাড়া প্রতিনিধি॥ বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার সৈয়দকাঠি ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের আউয়ার গ্রামের মৃত আলেফ খানের ছেলে দিনমজুর মো. রেজাউল খানের বসতবাড়ি পুড়ে সম্পূর্ণ ছাই হয়ে গেছে। তার ঘরের সকল আসবাবপত্র ও জামা-কাপড় আগুনের লেলিহান শিখায় শেষ হয়ে গেছে। সরেজমিনে দেখা গেছে তাদের রান্না করে খাবার মতো এবং রাতে থাকার জন্য কিছুই নেই।
সবই আগুনে কেড়ে নিয়েছে। অন্যের ঘরে কোনমতে দিনাতিপাত করছেন এই অসহায় পরিবারটি। জানাগেছে গত ৬ জুন দিবাগত রাত ৩টা থেকে সাড়ে ৩টার মধ্যে ওই ঘরে আগুন লাগে। ওই সময়ে রেজাউল খান একাই তার ঘরের মধ্যে ঘুমিয়ে ছিলেন। আগুন লাগার পরে তার ডাকচিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা আগুন নেভানোর জন্য প্রাণপন চেষ্টা করেও ঘরটিকে রক্ষা করতে পারেনি। মুহুর্তের মধ্যে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
তবে ভোর ৫টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয় প্রতিবেশীরা। জানাগেছে জলন্ত আগুনের মধ্য থেকেই রেজাউল খান বেড়িয়ে আসতে গিয়ে গুরতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে তিনি বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজে চিকিৎসারত রয়েছেন। এদিকে সরেজমিনে জানা যায় স্থানীয় মৃত খালেক সরদারের ছেলে বাবুল সরদার, মৃত ছোমেদ সরদারের ছেলে ছালেক সরদার গংদের সাথে রেজাউল খানের বসতবাড়ির জমিসহ অন্য সম্পত্তি নিয়ে দীর্ঘ বছর পর্যন্ত বিরোধ চলে আসছে। এনিয়ে ৬ জুন সকালে রেজাউলের মা জাহেদা বেগমকে মেরে আহত করে ছালেক সরদারের স্ত্রী শহর বানু। যা বাবুলের মা সালেহা বেগম স্বীকার করেছেন। এই বিরোধের জেড়েই তারা ঘরে আগুন দিয়েছে বলে জানান, রেজাউলের মা জাহেদা বেগম।
দুই গ্রুপের বিরোধ নিয়ে বহুবার শালিস-মিমাংশারও চেষ্টা করা হয়েছে বলে জানান, শালিসদার সৈয়দকাঠি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারেণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম মৃধা, সাবেক ইউপি সদস্য মো. শাহজাহান, ছাত্রলীগের সাবেক আহবায়ক তানবীর আহমেদ বাবু। তারা আরও বলেন, প্রতিবারই ছালেক ও বাবুল গংরা মিমাংশার রায় না মেনে আদালতের দারস্থ হয়েছেন। এছাড়াও একই ই¦উনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. হানিফ হাওলাদার ও যুবদল নেতা আব্দুর রহিমও ওই শালিশ মিমাংশায় ছিলেন।
অনেক স্থানীয়রা জানান, পরিকল্পিতভাবে রেজাউলের ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়া হয়েছে। তাদের দাবী এর সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দূর্বত্তদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার। এ বিষয়ে অভিযুক্ত বাবুল ও ছালেককে সরজমিনে না পাওয়ায় তাদের বক্তব্য সংযুক্ত করা সম্ভব হয়নি। তবে বাবুলের মা সালেহা বেগম জানান, ৬ জুন সকালে রেজাউলের মা জাহেদা বেগমকে ছালেক সরদারের স্ত্রী শহর বানু মেরে আহত করে এবং কাঠের যে গুরি দিয়ে আঘাত করে সেটি ভেঙ্গে যায়। ওই সময়ে তারা রেজাউলকে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছিলো বলে প্রতিবেশীরা জানান। ঘটনার ৩দিন আগে রেজাইলের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তার বাপের বাড়ি থাকায় সে ঘরে একাই ছিলো।
৬ জুন রাতে রেজাউল ঘরের যে স্থানে ঘুমিয়ে ছিলো সেই জায়গা থেকেই আগুনের সূত্রপাত হয়েছে বলেও ধারণা করছেন স্থানীয়রা। এতে ঘরে থাকা আসবাবপত্র ও স্বর্ণালংকারসহ প্রায় ৫ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা যায়। এই অসহায় পরিবারটিকে সরকারিভাবে একটি ঘর দেয়ার দাবী জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
Leave a Reply