বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩৩ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশালে এক যুবককে আটকের পর হাতকড়া পড়িয়ে হাতে ইয়াবা দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের বিরুদ্ধে। ইয়াবা দিয়ে নির্যাতন করে ফাঁসানোর অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী যুবক নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোডের বেগের বাড়ির মো. মারুফ সিকদার।
এ ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্ত কর্মকর্তার বিচার দাবি করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তবে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানো এবং নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার। অপরদিকে অভিযোগ তদন্ত করে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন সংস্থার অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি ভিডিও পাওয়া যায়। ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বরিশাল মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদারের অফিস কক্ষে হাতকড়া পরিহিত এক যুবকের হাতে ৫টি ইয়াবা দিয়ে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করা হচ্ছে। মাদকের কথা স্বীকার না করায় তাকে বেত্রাঘাত করা হয়। এ সময় নির্যাতিত যুবক পানি পান করতে চাইলে তা না দিয়ে নোংরা ভাষায় গালাগাল করা হয়। বেতের লাঠি হাতে পরিদর্শক মালেক নির্যাতন করেন ওই যুবককে। এমন একটি ভিডিও এসেছে এই প্রতিবেদকের হাতে।
গত ২২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টার দিকে মারুফ সিকদারকে আটক করা হয় নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোড থেকে। তার থেকে ৫টি ইয়াবা উদ্ধার হয়েছে অভিযোগ করে ওই রাতেই নগরীর কাউনিয়া থানায় একটি মামলা করেন পরিদর্শক আব্দুল মালেক। ওই মামলায় ১৭ দিন হাজতবাসের পর কারাগার থেকে মুক্ত হলেও ফের হয়রানির আশঙ্কায় ওই কর্মকর্তার বিচার চাইতে ভয় পাচ্ছেন তিনি।
স্থানীয় বাসিন্দা মো. মিজানুর রহমান জানান, মারুফের বিরুদ্ধে মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ কখনো শোনেনি তারা। মারুফকে অন্যায়ভাবে মাদক দিয়ে ফাঁসানো এবং নির্যাতনের ঘটনা তদন্ত করে অভিযুক্তের কঠোর বিচার দাবি করেন স্থানীয়রা।
নগরীর কাউনিয়া বিসিক রোড থেকে গত ২২ সেপ্টেম্বর প্রত্যক্ষদর্শীদের উপস্থিতিতে ইয়াবাসহ মারুফ সিকদার নামে ওই যুবককে আটক করা হয়েছে বলে দাবি করেন মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের পরিদর্শক আব্দুল মালেক তালুকদার। তাকে কোনো ধরনের নির্যাতন এবং ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু বলেন, মাদক দিয়ে কাউকে ফাঁসানো এবং নির্যাতন করা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কাজ নয়। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কোনো টর্চার সেল নয়। তিনি যে নির্যাতন করেছেন সে দায় তার নিজের। এই দায় সংস্থা নেবে না। এ ঘটনা তদন্ত করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর যথাযথ ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানান অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু।
দিনমজুর বাবা-মায়ের দুই সন্তানের মধ্যে মারুফ ছোট। ওই ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলা থেকে বাঁচতে মারুফের পরিবার মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সঙ্গে আপসের চেষ্টা করছে বলে জানিয়েছে এলাকাবাসী।
Leave a Reply