উজিরপুর প্রতিনিধি ॥ বরিশালের উজিরপুর পৌরসভার ভিআইপি রোডের একটি বাড়ি থেকে বৃহস্পতিবার সকালে আলেয়া বেগম (৬০) নামের এক বিধবা নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করেছে থানা পুলিশ। একাই বসবাস করতেন তিনি। মরদেহ উলঙ্গ অবস্থায় ঘরের মেঝেতে পড়ে ছিল। প্রাথমিকভাবে পুলিশ ধারণা করছে, শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করা হয়েছে এবং হত্যার আগে তাকে ধর্ষণ করা হয়ে থাকতে পারে।

উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুস সালাম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, একটি রহস্যজনক হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে এবং পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে তদন্তে কাজ শুরু করেছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নিহত আলেয়া বেগম মৃত নুরে আলম তালুকদারের স্ত্রী। তার একমাত্র ছেলে মাহতাব হোসেন ঢাকায় কর্মরত এবং দুই কন্যা বিবাহিত হয়ে শ্বশুরবাড়িতে থাকেন। ফলে আলেয়া বেগম দীর্ঘদিন ধরে একাই বসবাস করতেন।

পাশের বাড়ির বাসিন্দা আফসানা বেগম জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে আলেয়া বেগমকে খুঁজে না পেয়ে সন্দেহ হয়। এরপর দরজা খোলা পেয়ে ঘরে ঢুকে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। মরদেহ ছিল উলঙ্গ অবস্থায় এবং চারপাশে ছিল রক্তের দাগ। তিনি চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন এবং পরে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।

খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছায় উজিরপুর থানা পুলিশ ও বানারীপাড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) একরামুল আহাদ। তিনি তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং হত্যার মূল রহস্য উদঘাটনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে নির্দেশনা দেন।

এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকেই মনে করছেন, এটি পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড হতে পারে। পুলিশ বলছে, হত্যাকারীরা হয়তো পরিচিত কেউ, কারণ ঘরের দরজায় ভাঙচুরের কোনো চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তদন্তে হত্যার ধরন ও সম্ভাব্য ধর্ষণের প্রমাণ মিললে মামলাটি আরো ভয়াবহ রূপ নিতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

এখন পর্যন্ত কোনো সন্দেহভাজনকে আটক করা না হলেও থানা পুলিশ জানিয়েছে, তারা আশপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহসহ বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সহায়তায় তদন্ত শুরু করেছে।

এ ঘটনা যেন আর পুনরাবৃত্তি না ঘটে, সেজন্য দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করেছে স্থানীয় জনগণ