সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৬ পূর্বাহ্ন
এইচ, এম হেলাল॥ ছবি দেখলে মনে হবে একটি সিনেমা হলের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়। তবুও তাদের মুখে হাসি মোবাইল ফোনে ছবি দেখে কখন যে পেটের ক্ষুদা হারিয়ে যায় তাও জানা নেই ওদের। রুটি আর কলা দিয়ে বেলা ফুরিয়ে যায় তবুও রাত শেষে দিনের বেলায় রাস্তার দিকে চেয়ে থাকে তারা।
বলছি কেন্দ্রীয় নথুল্লাবাদ বাস টারমিনালের অনাহারে থাকা শ্রমিকদের কথা। ভাইরাস সংক্রমণের প্রভাবে সরকারি নির্দেশনা মেনে বন্ধ রাখা হয়েছে গণপরিবহন। দিন আনে দিন খাওয়া পরিবহন শ্রমিকরা পড়েছেন বিপাকে। দেখা মিলছে না শ্রমিকদের ভোটে নির্বাচিত হওয়া জন প্রতিনিধিদের।
সরজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কেন্দ্রীয় বাস টারমিনাল নথুল্লাবাদ এলাকায় সারিবদ্ধ ভাবে রাখা হয়েছে গণপরিবহন । এসব পরিবহনে বসে শ্রমিকরা মোবাইল ফোনে বাংলা সিনোমা আবার কেউ বা আবার বাংলা নাটক দেখছেন। শ্রমিকরা বলছেন, রাস্তায় নামলেই পুলিশ ধাওয়া করে।
কথা হয় সোহেল নামে এক শ্রমিকের সাথে, তিনি জানান, কিছু দিন আগে ৮ কেজি করে শ্রমিকদের মাঝে চাল বিতরন করা হয়েছে।সকাল থেকে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে জোটেনি ৮ কেজি চাল। শ্রমিক সোহেল’র মত কেন্দ্রীয় বাস টারমিনালে রয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার শ্রমিক।
শ্রমিকদের প্রতি অভিযোগ করে বসেন বরিশাল জেলা সড়ক (বাস-মিনিবাস,কোচ,মাইক্রোবাস) শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন।তার দাবী শ্রমিকরা প্রতি মাসে কল্যাণ তহবিলে যে চাঁদা জমা রাখেন এতে বছর শেষে তাদের দিগুন দিচ্ছে সংগঠনটি। চিকিৎসা সেবা,এককালিন একলক্ষ টাকা ও বছর শেষে ঈদ বোনাস ।
একজন শ্রমিক দিচ্ছেন প্রতি মাসে ২০ টাকা যা বছর শেষে ২৪০ টাকা আসে এতে চাঁদার চাইতে শ্রমিকদের বেশি দেয়া হচ্ছে বলে মনে করেন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি জাহাঙ্গীর হোসেন। তিনি এও বলেণ, শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতির পক্ষ থেকে অসহায় শ্রমিকদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরন করা হবে বলে জানান ওই নেতা।
এদিকে মালিক সমিতির ভারপ্রাপ্ত সহসভাপতি মোঃ ইউনুস আলী খান বলেন ভিন্ন কথা।তিনি বললেন বরিশাল জেলা প্রসাশক’র কাছ থেকে শ্রমিক ইউনিয়ন ও মালিক সমিতি মিলে চাল নিয়ে আসা হইছে। চাল বিতরন সময় আলু দেয়া হয়েছে দাবী করেন মালিক সমিতির সভাপতি বলেন, দুইটন চালের পাশাপাশি আমরা মালিক সমিতি আরো পুরোন করে দিছি। দোকানদার,ব্যাবসায়ী, শ্রমিক ইউনিয়নের অনেকে কার্ড নিয়া আমাদের গাড়িতে চলে।
আমাদের গাড়ির স্টাফ যারা তাদেরকে লিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। শ্রমিকদের প্রতি ক্ষেপে বলেন, অনেক শ্রমিকদের কার্ড নেই তারা দুই একদিন কাজ করে চলে যায় তারা চাল পাননি। চাল বিতরন করছেন শ্রমিক ইউনিয়ন তারা ভালো জানেন,আমরা ভালো জানবো ও না। শ্রমিক ইউনিয়ন সভাপতি- সাধারন সম্পাদক মিলে দিছে।
শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক ফরিদ হোসেন উপস্থিত না থেকেও তিনি বললেন আমরা একবার শ্রমিকদের মাঝে দুইটন চাল দিছি। সংগঠনের পক্ষ থেকে শ্রমিকদের কবে নাগাদ খাদ্যসামগ্রী দেয়া হবে তা খোলাশা করেনি। মালিক সমিতির সাথে কথা বলে যৌথ ভাবে দেব।
শ্রমিকদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী দেয়ার সিধান্ত হইছেলে কোনো এক অদৃশ্য কারনে তা বাতিল করা হয়েছে।
করোনাভাইরাস কত দিন থাকে সেটার উপর লক্ষ করে আর দেয়া হয়নি। চাল বিতরন সময় যাদের কাছে পাইছি তাদের দিয়া দিছি।
চাল বিতরন সময় কোনো শ্রমিক বাদ পরেনি।
দুরের শ্রমিকরাবাদ পরছেন তারা আসতে ও পারে নাই,চাল নিতে পারে নাই। দুইটন চাল ২০০/৩০০ জন শ্রমিকদের মাঝে বিতরন করা হয়েছে। অন্য এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন আমি বাসায় লকডাউনে ছিলাম ভালো বলতে পারবোনা । সুত্র বলছে বাস মালিক সমিতির যার যার গাড়ি আছে তারা চালক,হেলপার, সুপারভাইজারদের আর্থিক সহযোগিতা করে যাচ্ছেন।
ধারাবাহিক পর্ব নিয়ে থাকছি আজ…
Leave a Reply