শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৬:৫৪ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশালের উজিরপুরে কলেজছাত্র সোহাগ সেরনিয়াবাত হত্যা মামলায় দুজনকে ফাঁসি ও চারজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত।
বুধবার বেলা ১১টার দিকে বরিশালের জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক টিএম মুসা এ রায় ঘোষণা করেন।
ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- দাদা বাহিনীর প্রধান জিয়াউল হক লালন ও তার সহযোগী রিয়াদ সরদার। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- দাদা বাহিনীর সদস্য বিপ্লব, ওয়াসিম সরদার, মামুন ও ইমরান। তাদের সবার বাড়ি বরিশালের বিভিন্ন উপজেলায়।
নিহত সোহাগ সেরনিয়াবাত উজিরপুর উপজেলা সদরের বিএন খান কলেজ সংলগ্ন এলাকার ফারুক সন্যামাতের ছেলে। তিনি বিএন খান কলেজে দ্বাদশ শ্রেনিতে লেখাপড়ার পাশাপাশি ব্যবসা করতেন। বিএন খান কলেজ মোড় সংলগ্ন এলাকায় সোহাগ সেরনিয়াবাতের জামা-কাপড়ের দোকান ছিল।
জানা গেছে, রায় ঘোষণার সময় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ইমরান ছাড়া বাকিরা আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন। রায়ের পর কড়া নিরাপত্তা প্রহরায় তাদের কারাগারে পাঠানো হয়।
মামলার রায়ের বরাত দিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (বিশেষ পিপি) লস্কর নুরুল হক জানান, জিয়াউল হক লালন সর্বহারা দলের সদস্য ছিলেন। পরে দল ত্যাগ করে নিজেই দাদা বাহিনী নামে একটি দল গড়ে তোলেন। ওই দলের প্রধান ছিলেন তিনি নিজেই। ২০১২ সালের মাঝামাঝি সময়ে দাদা বাহিনীর সদস্যরা সোহাগের কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ২০১২ সালের ৮ নভেম্বর সোহাগের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করা হয়।
এ ঘটনায় হত্যচেষ্টা মামলা করেন সোহাগের মা শাহনাজ পারভীন। এতে আরো ক্ষুব্ধ হন দাদা বাহিনীর সদস্যরা। এরই জেরে ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে সোহাগকে নিজ বাড়ির সামনে ধারালো অস্ত্র দিয়ে নির্মমভাবে কোপানো হয়। এতে ঘটনাস্থলেই সোহাগ নিহত হন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, হত্যাকারীরা আগে থেকেই সোহাগের বাড়ির সামনে ওত পেতে ছিল। সোহাগ মোটরসাইকেলে বাড়ির সামনে পৌঁছানোর সঙ্গে সঙ্গেই জিয়াউল হক লালনের নেতৃত্বে দাদা বাহিনীর সদস্যরা হামলা চালায়।
এ ঘটনায় ৫ সেপ্টেম্বর উজিরপুর থানায় হত্যা মামলা করেন সোহাগের মামা খোরশেদ আলম মিন্টু। ২০১৪ সালের ১১ নভেম্বর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তৎকালীন জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক শাহাবুদ্দিন চৌধুরী। ৩১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় এ রায় দেয় আদালত।
Leave a Reply