বরিশালের মুলাদীতে গড়ে উঠেছে ‘অন্বেষণ গণপাঠাগার ও সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র’ Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ১৬ জুন ২০২৪, ০৯:১৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশালের মুলাদীতে গড়ে উঠেছে ‘অন্বেষণ গণপাঠাগার ও সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র’

বরিশালের মুলাদীতে গড়ে উঠেছে ‘অন্বেষণ গণপাঠাগার ও সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র’

বরিশালের মুলাদীতে গড়ে উঠেছে ‘অন্বেষণ গণপাঠাগার ও সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র’




মুলাদী প্রতিনিধি॥ বরিশাল জেলার মুলাদী উপজেলায় নাজিরপুর ইউনিয়নে নিজ অর্থায়নে গড়ে উঠেছে ‘অন্বেষণ গণপাঠাগার ও সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র’। যুবসমাজ যখন বিভিন্ন নেশায় জড়িয়ে পড়ে পথ হারিয়ে ফেলে, সে পথ থেকে ফিরিয়ে রাখার জন্য নতুন আশার আলোর দিকে আনার জন্য ২০১৩ সালে নিজের ২০ শতাংশ জমিতে ব্যক্তিগত অর্থায়নে গড়ে তুলেছেন ‘অন্বেষণ পাঠাগার ও সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র’। এখানে সব বয়সি পাঠকদের জন্য পাঠাগারটি সাজানো হয়েছে বিভিন্ন ধরনের বই দ্বারা। কথা হয় পাঠাগারের লাইব্রেরিয়ান সজলের সাথে। তিনি বলেন, সপ্তাহে ৬ দিন পাঠাগারটি খোলা থাকে বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত। পাঠাগারে সব বয়সি মানুষদের ভিড় জমে থাকায় তাদের পদচারণায় মুখরিত পাঠাগার চত্ত্বর। এছাড়াও গান শেখার আসর, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিকমূলক আয়োজনের ব্যবস্থা আছে এখানে।

 

 

সমাজে সুষ্ঠু, সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার অন্যতম চালিকাশক্তি হল সুশিক্ষা ও সুস্থ্য বিনোদন। আর সুস্থ্য বিনোদনের অন্যতম উপাদান হলো বিভিন্ন ধরনের শিল্প, ক্রিড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা ও অংশগ্রহণ। গ্রামীণ জনপদে অপসংস্কৃতি, কুসংস্কার, ধর্মান্ধতা ইত্যাদির বিপরীতে এ ধরনের কাজের জন্য সেবামূলক প্রাতিষ্ঠানিক সুযোগ-সুবিধা অত্যন্ত সীমিত।

 

 

বাস্তবতাকে বিবেচনায় রেখে মুলাদী উপজেলার আড়িয়াল খাঁ ও জয়ন্তী নদী বিধৌত নাজিরপুর গ্রামে পাঠাগার কেন্দ্রীক সমাজ উন্নয়ন শ্লোগান নিয়ে হাটি হাটি পা পা করে এগিয়ে চলছে ‘অন্বেষণ গণপাঠাগার ও সমাজ উন্নয়ন কেন্দ্র’। যিনি নিজ উদ্যোগে ও নিজস্ব জমিতে গড়ে তুলেছেন প্রতিষ্ঠানটি। তিনি হলেন গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (অব:) মো: ইমদাদুল হক (মজনু)। তিনি নিজ গ্রাম নাজিরপুর ১৯৫৫ সালে ২রা ফেব্রুয়ারি মুসলিম সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা মরহুম আবদুল মান্নান সিকদার, মাতা মরহুমা মাহফুজা বেগম। প্রাথমিক শিক্ষা নিজ গ্রামে নাজিরপুর সরকারি মডেল প্রাথমিক বিদ্যালয়, এসএসসি রামারপোল মাধ্যমিক বিদ্যালয়, এইচএসসি বরিশাল বিএম কলেজ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে অনার্স পাশ করেন। তিনি নিজেকে ধীরে ধীরে আলোকিত করতে থাকেন লেখাপড়ার মাধ্যমে।

 

 

পাঠক পাঠিকাদের মন কেড়ে নেয়ার জন্য প্রায় শতাধিক বিভিন্ন প্রজাতির ফুল ও ফলের গাছ রয়েছে পাঠাগারটি ঘিরে। গ্রামটির পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে আড়িয়াল খাঁ নদ। এ নদের পাড়ে প্রায় দেড় হাজার বৃক্ষ রোপণ, ফল, ফুল ও ওষধিগাছসহ প্রায় ৪৮ প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়েছে।

 

 

চারিদিক নদী দ্বারা বেষ্টিত নাজিরপুর গ্রামটি মনে হয় একটি দ্বীপ অঞ্চল। স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ বঞ্চিত ছিল এই বিচ্ছিন্ন গ্রামটির মানুষ। আজ তার সহযোগিতায় গ্রামটি হতে চলেছে পুরো আলোকিত। মনের মাধুরী দিয়ে সাজিয়েছেন গ্রামটিকে ইমদাদুল হক (মঞ্জু)। তিনি ব্যক্তি জীবনে খুব অর্থবিত্তের মালিক নন। যখনই সুযোগ পেয়েছেন তখনই ভেবেছেন এই গ্রামের মানুষের কথা। ২০১৫ সালে অবসর গ্রহণের পর থেকেই গ্রামকে নিয়ে ভাবনা তার আরো বেড়ে গিয়েছে। নিজের সব সম্বল ব্যয় করেছেন তার গ্রামকে সাজাতে। যে গ্রামটি এক সময় হারিকেন অথবা কুপির মিন মিন আলোতে জ্বলে থাকতো আজ তার চেষ্টায় সে গ্রামে রয়েছে প্রায় ৩ হাজার পল্লী বিদ্যুতের মিটার। গ্রাহকদের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে বিদ্যুতের অভিযোগ কেন্দ্র।

 

নদী ভাঙ্গন রোধে প্রায় চার কিলোমিটার পিলার দিয়ে পাইলিং, ঢাকা-নাজিরপুর মহাসড়কে আড়িয়াল খাঁ নদের উপরে নির্মাণাধীন ব্রিজ, রাস্তাঘাট, কালভার্ট, পুল, ছোট বড় ১৭টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অনার্স কোর্সসহ একটি ডিগ্রি কলেজ, মসজিদ ও বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। এছাড়াও নাজিরপুরে রয়েছে জেলা পরিষদের একটি ডাকবাংলো, লঞ্চ যাত্রীদের যাত্রী ছাউনি, টার্মিনাল ও নৌ পুলিশ ফাঁড়ি। নিজের কষ্টার্জিত অর্থে গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষদের স্বাস্থ্য সেবাসহ শিক্ষা ক্ষেত্রেও রয়েছে অনেক অবদান। শিক্ষা ক্ষেত্রের পাশাপাশি নাজিরপুরকে মাদকমুক্ত করার আন্দোলনকে জনগণের মাঝে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে।

 

এ বছরের মধ্যেই এলাকায় সম্পূর্ণ মাদকমুক্ত করতে প্রশাসনসহ এলাকার সর্বসাধারণ ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। আজ নাজিরপুর গ্রামটি অজপাড়াগাঁও হয়েও যেন এক আদর্শ গ্রাম। একবুক ভালবাসার অপূর্ব নিদর্শন।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD