ফেঁসে যেতে পারে বাকেরগঞ্জের প্রধান শিক্ষক মাহতাব Latest Update News of Bangladesh

রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০৩:৩০ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




ফেঁসে যেতে পারে বাকেরগঞ্জের প্রধান শিক্ষক মাহতাব

ফেঁসে যেতে পারে বাকেরগঞ্জের প্রধান শিক্ষক মাহতাব




নিজস্ব প্রতিনিধি॥  বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া আবুল কাশেম মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকে মাহতাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির পর এবার ছাত্রীকে বিয়ে করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

একই এলাকার আফালকাঠী জেএ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক থাকাকালীন সময়ে এক ছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। পরে বাধ্য হয়ে ওই ছাত্রীকে বিয়ে করে লম্পট শিক্ষক মাহতাব। সম্প্রতি ওই প্রধান শিক্ষকের দুর্নীতি ও অনিয়ম নিয়ে সাংবাদিকদের অনুসন্ধানে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া আবুল কাশেম মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্বস্বাৎ করলে অনুসন্ধানে নামে বরিশালের সাংবাদিকরা। তার অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যাপারে বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে একটি অভিযোগ জমা দিয়েছেন ওই স্কুলের সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমান।

অভিযোগ সূত্রে ও অনুসন্ধানে জানা গেছে, ১৯৭২ সালে বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া আবুল কাশেম মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে তৈরি করেন দাতা সদস্য বজলুর রহমান মোল্লা। এরপর থেকে ওই এলাকার শিক্ষা বিস্তারে ওই স্কুলটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করে।

কিন্তু ১৯৯৮ সালে এক ভদ্রবেশী দরবেশ যিনি মাহতাব উদ্দিন স্কুলের প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পান। নিয়োগের পর থেকে নানা রকম অন্যায় ও দুর্নীতিতে মেতে ওঠেন প্রধান শিক্ষক মাহতাব। এমনকি শিক্ষক ও দপ্তরি নিয়োগের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা আত্বস্বাৎ করেন। বিষয়টি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমানের হাতে ধরা পড়ে। এরপর থেকে সভাপতি সাইফুর রহমানকে সড়ানোর জন্য নানা রকম ষড়যন্ত্র শুরু করে প্রধান শিক্ষক মাহতাব।

অবশেষে সাবেক সভাপতি সাইফুর রহমানের স্বাক্ষর জাল করে বিনা নির্বাচনে প্রধান শিক্ষক মাহতাবের বাড়ীতে বসে পকেট কমিটি করেন। ওই পকেট কমিটির বিষয় স্কুল ম্যানেজিং কমিটির অন্যান্য সদস্যরা জানেনই না। অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, ম্যানেজিং কমিটি গঠন প্রক্রিয়া বাদ দিয়ে প্রধান শিক্ষকের নিজের মনগড়া এবং অর্থের বিনিময়ে সভাপতি নির্বাচন করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠে।

এই ঘটনা আড়াল করতে নলুয়া আবুল কাশেম মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহতাব উদ্দিন বিদ্যালয়ের রেজিষ্টার খাতাও সরিয়ে ফেলেছেন। এমনকি কোন পন্থায় তিনি ম্যানেজিং কমিটি গঠন করেছেন তার কোন কাজগপত্র দেখাতে পারেন নি তিনি। রেজুলেশন বই পর্যন্ত স্কুলে নেই বলে প্রধান শিক্ষন স্বীকার করেছেন। এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া আবুল কাশেম মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম বরিশাল মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছেন।

অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, বিদ্যালয়ের সভাপতিকে না জানিয়ে প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছামত বিদ্যালয় পরিচালনা ও আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য বিধিবর্হিভূত ভাবে একটি কমিটি গঠন করেছেন। যেখানে নির্বাচনের জন্য নিযুক্ত প্রিজাইডিং অফিসার বিদ্যালয়ে না গিয়ে বাকেরগঞ্জে তার নিজ কার্যালয়ে বসে কমিটি নির্বাচন করেছেন। কমিটিতে যে শিক্ষক প্রতিনিধি রয়েছে তাও প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী নির্বাচন করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। অভিযোগ পত্রে আরো উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ সাইফুল ইসলাম ও তার বাবা দাতা সদস্য থাকা অবস্থায় তাদেরকে এ বিষয়ে কিছু না জানিয়ে উক্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

বিষয়টির সত্যতা যাচাইয়ের জন্য বাকেরগঞ্জ উপজেলার নলুয়া আবুল কাশেম মোল্লা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ম্যানেজিং কমিটি গঠনের জন্য কোন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়নি। এছাড়াও এরসাথে সংশ্লিষ্ট কোন কাগজপত্রও তার কাছে নেই। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহতাব উদ্দিন বলেন, পূর্বের কমিটি থাকা অবস্থায় ৯০ দিনের জন্য নতুন কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। যেখানে নির্বাচনের তফসিল ও খসড়া ভোটার তালিকা করা হয়েছে, সেখানে সভাপতি স্বাক্ষর করেছেন।

তবে কথা অনুযায়ী তিনি কোন কাগজ দেখাতে পারেনি। এছাড়াও তিনি বলেন প্রতিদ্বন্ধি না থাকার কারনে নামের তালিকা করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে প্রেরন করা হয়েছে। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের একাডেমীক সুপারভাইজার এনামুল হক প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে উপস্থিত থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন। তবে অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের একাডেমীক সুপারভাইজার এনামুল হক প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে উপস্থিত থেকে নির্বাচন সম্পন্ন করেছেন মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে।

এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা বলেন, কাউকে কোন কিছু না জানিয়ে কোন প্রকার নোটিশ না করেই তিনি মাহমুদুল ইসলামকে অবৈধভাবে সভাপতি করে নিজের লোকদের নিয়ে কমিটি গঠন করেছেন প্রধান শিক্ষক। স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ে দীর্ঘ ২০ বছর যাবৎ বিভিন্ন ভাবে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বেতন বাবদ নেয়া বিগত বছরগুলোর রশিদ দেখতে চাইলে তিনি তা দেখাতে পারেননি। কেবল মাত্র ২০১৯ সালের একটি রশিদ বিদ্যালয়ে রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় বিদ্যালয়কে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের পুজিঁ বানিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন বলেও অভিযোগ করেন তারা। আরো জানা যায়, বিগত সালে এই প্রধান শিক্ষক বর্তমান কমিটিতে স্থান পাওয়া মাহমুদুল ইসলাম নোমানের মা মৃত: মাহমুদা হককে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে থেকে নলুয়া আবুল কাশেম মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিযুক্ত করেন।

যা সরকারী নিয়ম উপেক্ষ করে এই নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে। যেখানে নিয়োগ বাবদ প্রধান শিক্ষক মাহতাব উদ্দিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তাকে কোন প্রক্রিয়ায় নিয়োগ প্রদান করা হয়েছিল জানতে চাইলে তারও কোন কাগজপত্র দেখাতে পারেননি তিনি। প্রধান শিক্ষক মাহতাব বলেন , পেনশনের জন্য ফাইল ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আমাদের কাছে কিছুই নেই। শুধু তাই নয় প্রধান শিক্ষক মাহতাব উদ্দিন ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জেএসসি পরীক্ষার ফরম পুরন বাবদ ৮‘শ টাকা করে হাতিয়ে নিয়েছেন দীর্ঘদিন যাবৎ। বিদ্যালয়টিতে মাত্র ২৯৯ জন শিক্ষার্থীর রয়েছে।

জরাজীর্ন ভবন আর বিদ্যুৎবিহীন ভাবে ক্লাস করছে শিক্ষার্থীরা। একাধিক শিক্ষার্থী অভিযোগ করে বলেন, বিদ্যালয়ের ভবনের অবস্থা খুবই খারাপ। ঝুঁকির মধ্যে পাঠদান করতে হচ্ছে তাদেরকে। প্রতিমাসের বেতন বাবদ অর্থ আদায় করা হলেও দেয়া হয়না কোন রশিদ। এ বিষয়ে বাকেরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাধবী রায় বলেন, আমরা কোন অভিযোগ পাইনি। তবে শিক্ষা বোর্ডে অভিযোগের বিষয়ে আমাদের কাছে আসলে আমরা আইনগত যে ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন তা নেব।

বিদ্যালয়ে রেজুলেশন বই না থাকার বিষয়ে তিনি বলেন এটি অবশ্যই বিদ্যালয়ে থাকতে হবে। সর্বপরি বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে বলে তিনি জানান। এদিকে, গোপন সূত্রে জানা গেছে আগামী কয়েকদিনে মধ্যে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মাহতাবসহ দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলা করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। তবে এলাকাবাসীর দাবি, এমন দুর্নীতিবাজ শিক্ষককে অচিরেই ওই স্কুল থেকে অব্যাহতি প্রদান করে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD