পৌরসভায় নির্বাচন: প্রচারে বাধার অভিযোগ বিএনপির Latest Update News of Bangladesh

মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০২৪, ০৬:৪৭ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




পৌরসভায় নির্বাচন: প্রচারে বাধার অভিযোগ বিএনপির

পৌরসভায় নির্বাচন: প্রচারে বাধার অভিযোগ বিএনপির

পৌরসভায় নির্বাচনে প্রচারে বাধার অভিযোগ বিএনপির




পটুয়াখালী প্রতিনিধি॥ দক্ষিণের চার পৌর নির্বাচনের প্রচারে সরব আওয়ামী লীগ। তবে ঠিক তার উল্টো চিত্র বিএনপি শিবিরে। আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থীরা বলছেন, ব্যাপক হারে জনসমর্থন হারানোয় প্রচার চালানোর মতো লোক নেই বিএনপিতে। অপরদিকে বিএনপির অভিযোগ- ‘প্রচারে বাধা দিচ্ছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। রাতের অন্ধকারে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে ধানের শীষের পোস্টার-ব্যানার।

 

 

এদিকে নির্বাচন প্রশ্নে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপির এ টানাপোড়েন ছাপিয়ে যেটি সবচেয়ে বেশি আলোচিত হচ্ছে তা হল ভোটারদের ভাবনা। নির্বাচনী পরিবেশ জমজমাট হলেও বহু ভোটারের আশঙ্কা নিজের ভোট নিজে দিতে পারবের কিনা- তা নিয়ে।

 

 

২৮ ডিসেম্বর পৌর নির্বাচনের প্রথম ধাপে বাকেরগঞ্জ, উজিরপুর, বেতাগী ও কুয়াকাটায় ভোট যুদ্ধ হবে। এর মধ্যে ৩টিতে লড়াইয়ের হিসাবটা আওয়ামী লীগ-বিএনপির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও সম্পূর্ণ ভিন্ন পরিস্থিতি পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটায়। এখানে ধানের শীষ নয়, নৌকার প্রার্থীর লড়াইটা হবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ‘জগ’ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নামা আনোয়ার হাওলাদারের সঙ্গে।

 

 

ধানের শীষ নিয়ে বিএনপির প্রার্থী আবদুল আজিজ মুসল্লি মাঠে থাকলেও তার অবস্থান অনেকটাই দুর্বল। নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে কোনো অভিযোগও করেননি তিনি। স্রেফ এটুকুই বললেন, ইভিএম নিয়ে টেনশনে আছেন। ভোট দেয়ার নতুন এ পদ্ধতি সম্পর্কে ভোটাররা জানেন না। ফলে জটিলতা হতে পারে।’

 

 

নির্বাচন প্রশ্নে বিএনপি প্রার্থীর নির্লিপ্ত ভূমিকার কারণ খুঁজতে গিয়ে মেলে নৌকা-জগের জমজমাট লড়াইয়ের খবর। এর আগের পৌর নির্বাচনেও এখানে বর্তমান মেয়র নৌকার প্রার্থী বারেক মোল্লার সঙ্গে লড়াইয়ে নেমেছিলেন আনোয়ার। তখন তিনি ছিলেন জাতীয় পার্টির। পরে দল পাল্টে যোগ দেন আওয়ামী লীগে।

 

 

নির্বাচন প্রশ্নে আনোয়ার হাওলাদার বলেন, ‘২০১৫ সালে প্রথম পৌর নির্বাচনে ভোট কেন্দ্র থেকে আমার এজেন্টদের বের করে সিল মেরে ভোটের বাক্স ভরেছিল বারেক মোল্লার সন্ত্রাসীরা। এবারও একই প্রক্রিয়ার দিকে এগোচ্ছেন তিনি।’

 

 

অভিযোগ সম্পর্কে বারেক মোল্লা বলেন, ‘গেল নির্বাচনে সে (আনোয়ার) গোহারা হেরেছে। আওয়ামী লীগ দাবি করলেও দলের প্রাথমিক সদস্যপদ পর্যন্ত নেই তার। আনোয়ার হাওলাদারের পক্ষে হত্যা মামলার আসামি ও সন্ত্রাসীরা মাঠে থাকায় নির্বাচনী পরিবেশ চরমভাবে বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা করছি। এ ব্যাপারে প্রশাসনের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’ এ দু প্রার্থীর বিরোধ ইতোমধ্যে সংঘর্ষে পর্যন্ত গড়িয়েছে। এ পর্যন্ত ৪ দফা সংঘর্ষ হয়েছে ‘নৌকা’ ও ‘জগ’ প্রতীকের কর্মী-সমর্থকদের।

 

 

বরিশাল নগর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে থাকা বাকেরগঞ্জ পৌর এলাকায় ঢুকতেই চোখে পড়ে কাউন্সিলর আর নৌকার মেয়র প্রার্থীর পোস্টারের ছড়াছড়ি।

 

 

বহু খুঁজেও চোখে পড়েনি ধানের শীষের পোস্টার। স্থানীয়রা জানান, বিএনপির তেমন কোনো প্রচার নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ধানের শীষের প্রার্থী মনিরুজ্জামান বলেন, ‘বাকেরগঞ্জ উপজেলার ১৪ ইউনিয়নের সব চেয়ারম্যান এবং আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীরা এখন পৌর এলাকায়। মুখে কিছু না বললেও আমার কোনো কর্মী ভোট চাইতে গেলেই তাদের রক্তচক্ষুর মুখে পড়তে হয়। রাতের অন্ধকারে আমাদের পোস্টার ছিঁড়ে ফেলে নৌকার লোকজন।

 

 

অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে নৌকার প্রার্থী লোকমান হোসেন ডাকুয়া বলেন, ‘লোকবল-জনসমর্থন কিছুই নেই বিএনপির প্রার্থীর। সেখানে তিনি যদি এসব অভিযোগ করেন তাহলে তো আমার আর কিছু বলার নেই। তাছাড়া আমি বা আমার লোকজন যদি এসব করে তাহলে বিএনপি আমার বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করছে না কেন?

 

 

বাকেরগঞ্জের মতোই প্রচারে বাধার অভিযোগ বরগুনার বেতাগী পৌরসভার ধানের শীষ প্রার্থী হুমায়ুন কবির মল্লিক এবং আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মাহমুদুল মহসিনের। দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে মেয়র প্রার্থী হওয়ায় ইতোমধ্যে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে মহসিনকে।

 

 

নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে কোনো পরিবেশই নেই। আমার কর্মী-সমর্থকরা প্রচারণায় নামলেই হুমকি দেয়া হচ্ছে। রাতের আঁধারে ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে পোস্টার-ব্যানার।’

 

 

অভিযোগ সম্পর্কে আওয়ামী লীগ মেয়র প্রার্থী বর্তমান মেয়র গোলাম কবির বলেন, ‘এসব অভিযোগ মিথ্যা ও বানোয়াট। তেমন কিছু হলে তিনি আমার বিরুদ্ধে রিটার্নিং অফিসারের কাছে অভিযোগ দিচ্ছেন না কেন? তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক না থাকায় পরাজয় নিশ্চিত জেনে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।’

 

 

বরিশালের উজিরপুরে অবশ্য বড় কোনো অভিযোগ মেলেনি। সেখানকার বিএনপি প্রার্থী শহিদুল ইসলাম খান বলেন, ‘কোনোরকম বাধা-বিঘ্নের সম্মুখীন এখন পর্যন্ত না হলেও প্রতিনিয়ত আচরণবিধি লঙ্ঘন করে চলেছেন নৌকার প্রার্থী বর্তমান মেয়র গিয়াস উদ্দিন ব্যাপারি। উঠান বৈঠকের নামে তিনি করছেন জনসভা।

 

 

এসব জনসভায় ভূরিভোজ করানো হচ্ছে শত শত মানুষকে। পৌর এলাকায় একটি নির্বাচনী ক্যাম্প হওয়ার কথা থাকলেও তিনি করেছেন ৯টি। এ বিষয়ে অভিযোগ দেয়ার পর অফিসিয়ালি একটা আর ঘোষণাবিহীনভাবে ৮টা ক্যাম্প চালাচ্ছেন তিনি।’ বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে সব অভিযোগ অস্বীকার করেন নৌকার প্রার্থী গিয়াস।

 

 

৪ পৌরসভা ঘুরে বেড়ানোর সময় অন্যরকম একটা সংশয় লক্ষ্য করা গেছে সাধারণ ভোটারদের মধ্যে। বাকেরগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আলামিন হাওলাদার বলেন, ‘গেলবার ভোট দিতে গিয়ে দেখি আমার ভোট দেয়া হয়ে গেছে। এবার কি হয় বুঝতে পারছি না।’ বেতাগী বাস স্ট্যান্ডে কথা হয় আলম মুন্সি নামের একজনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘শুনছি মেয়রের ভোট নাকি নৌকার লোকজন দিয়ে দেবে। আমরা দেব শুধু কাউন্সিলরের ভোট।’ উজিরপুর এবং কুয়াকাটার সাধারণ ভোটারদের মধ্যেও লক্ষ্য করা গেছে এ ধরনের সন্দেহ-সংশয়।

 

 

এসব বিষয় নিয়ে আলাপকালে বরিশালের নির্বাচন দফতরের কর্মকর্তারা বলেন, ‘পুরো বিভাগের মাত্র ৪টি পৌরসভায় নির্বাচন হচ্ছে। নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রে ১ জন করে ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোট হবে ইভিএমে। থাকবে পর্যাপ্ত পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। কোনোরকম অনিয়ম হওয়ার সুযোগ দেখছি না। তারপরও যদি কারও কোনো আশঙ্কা থাকে তাহলে আমাদের জানালে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD