রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৩৯ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের স্বাক্ষর জাল করে তৈরি করা প্রবেশপত্রে পরীক্ষা দিতে গিয়ে ধরা খেয়েছে সুব্রত দাস নামে এক পরীক্ষার্থী। এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন শনিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বরিশালের আগৈলঝাড়ায় উপজেলার শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে ওই শিক্ষার্থীর প্রবেশপত্র যাচাই-বাছাই করলে বিষয়টি ধরা পরে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বাকাল নিরঞ্জন বৈরাগী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ওই গ্রামের দীনেশ দাস ও সবিতা রানী দাসের ছেলে সুব্রত দাস টেস্ট পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়ায় স্কুল কর্তৃপক্ষ অনলাইনে সুব্রতর ফরম পুরণ করতে পারেনি।
কিন্তু সুব্রত ফরম পুরণ না করলেও একটি বোর্ডের একটি চক্রের মাধ্যমে ওই বিদ্যালয়ের প্যাড, প্রধান শিক্ষক পুলিন বিহারী জয়ধরের স্বাক্ষর ও সীল জালিয়াতি করে স্কুলকে ফরম পুরণের অনুমতি প্রদানের কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট স্কুলে গিয়ে প্রদর্শন করেন। প্রধান শিক্ষকের জাল কাগজপত্র দেখে সন্দেহ হলে তিনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা বোর্ডকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবহিত করেন।
এ ঘটনার পরে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম শিক্ষার্থী সুব্রত দাসের প্রবেশপত্র বাতিল করার নির্দেশ দিলেও অসাধু ওই চক্রের হাত ধরে সুব্রতর নামে কর্মকর্তাদের নামের সীল ও স্বাক্ষর জাল করে ব্যাবসায় শিক্ষা বিভাগের নিয়মিত ছাত্র হিসেবে প্রবেশপত্র ইস্যু হয়। যার প্রবেশপত্র সিরিয়াল নম্বর-১৯০৩৩০১০। রোল নম্বর-৯০০৬৯১, রেজিস্ট্রেশন নম্বর-১৬১৫৪৪৫৭০৩।
উপজেলা পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস অভিযুক্ত ওই পরীক্ষার্থী ও তার অভিভাবককে জিজ্ঞাসাবাদ করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে বিষয়টি বরিশাল শিক্ষা বোডের্র পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও জেলা প্রশাসককে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শনিবারই পত্র পেরণ করেছেন।
প্রবেশপত্র জালিয়াতির বিষয়টি প্রধান শিক্ষক পুলিশ বিহারী জয়ধর বোর্ডকে জানালে বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম বিষয়টি পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির প্রধান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাসকে ফোনে অবহিত করে ব্যবস্থা নিতে বলেন। বোর্ডের নির্দেশ পেয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা পরীক্ষার প্রথম দিন শনিবার শ্রীমতি মাতৃ মঙ্গল বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রে গিয়ে প্রবেশপত্র যাচাই বাছাই করে পরীক্ষার্থী সুব্রত দাসের সাথে কথা বলেন।
সুব্রত জানায়, টেস্ট পরীক্ষায় সে ফেল করেছিলো। জালিয়াতির বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। প্রবেশপত্রসহ আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র সম্পর্কে তার মা সবিতা দাস জানেন।
তাৎক্ষণিকভাবে সবিতাকে সেখানে হাজির করলে সবিতা জানান, বোর্ডের কর্মচারী ফরিদ ও ভোলার লাল মোহন স্কুলের শিক্ষক মমিন উদ্দিন তার ছেলের ফরম পুরণ ও প্রবেশপত্র দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক প্রফেসর মো. আনোয়ারুল আজিম বলেন, নির্বাহী কর্মকর্তার রিপোর্ট পাওয়ার পর অসাধুচক্রটি ধরতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ রকম ঝালকাঠিতে ১০টি ও পাথরঘাটায় ২৮টি প্রবেশপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিলেও অভিযোগ প্রমাণিত হবার পরে তাদের ফলাফল স্থগিত বা বাতিল করে আইনের আওতায় আনা হবে।
Leave a Reply