পটুয়াখালীতে মাথায় ডিম ভেঙে অদ্ভুত এক জন্মদিন উদযাপন করছে একদল শিক্ষার্থী Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ১৭ জুন ২০২৪, ১১:০৩ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- [email protected] অথবা [email protected] আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




পটুয়াখালীতে মাথায় ডিম ভেঙে অদ্ভুত এক জন্মদিন উদযাপন করছে একদল শিক্ষার্থী

পটুয়াখালীতে মাথায় ডিম ভেঙে অদ্ভুত এক জন্মদিন উদযাপন করছে একদল শিক্ষার্থী




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥  সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও ভিডিও প্রচার করার ওয়েবসাইট ইউটিউব দেখে নতুন বা অদ্ভুত কিছু তৈরির নতুন ঘটনা নয়। পশ্চিমা সংস্কৃতি হুবহু নকল করার ঘটনাও ঘটেছে। এবার তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে অদ্ভুত জন্মদিন উদযাপন। পটুয়াখালীর একদল শিক্ষার্থী কখনও ল্যাম্পপোস্টে আবার কখনও গাছের সঙ্গে হাত-পা বেঁধে কোমরে রশি পেঁচিয়ে মাথায় ডিম ভেঙে অদ্ভুত এক জন্মদিন উদযাপন করছে। তাদের এ জন্মদিন উদযাপনকে অপসংস্কৃতি ও সামাজিক অবক্ষয় বলে মনে করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা। একই সঙ্গে এমন জন্মদিন উদযাপন বন্ধে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় শিক্ষকরা।

 

 

স্থানীয় সূত্র জানায়, ভিনদেশি সংস্কৃতির আদলে অদ্ভুত এক জন্মদিন উদযাপন করেছে পটুয়াখালীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের একদল শিক্ষার্থী। দিন দিন বেপরোয়া হয়ে উঠছে তাদের জন্মদিন উদযাপন। গত ২০ ডিসেম্বর ছিল শহরের সেন্টারপাড়া এলাকার বাসিন্দা পুষ্পিতার (ছদ্মনাম-ঠিকানা) ১৭তম জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে শীতের বিকেলে সড়কের ওপর এই কিশোরীর শরীরে ময়দা গুলিয়ে পানি মাখা হয়। এরপর তার মাথায় একে একে ডিম ভাঙেন বন্ধুরা। এ অবস্থায় তার ভিডিও ধারণ করা হয়। পরে সেগুলো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়া হয়। পটুয়াখালী সরকারি বালিকা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে পুষ্পিতা।

 

 

গত ২৭ নভেম্বর ছিল সদর উপজেলার বাসিন্দা আরমান আলীর (ছদ্মনাম) ১৮তম জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে তাকে ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে বাঁধা হয়। এরপর পুরো শরীরে পেঁচানো হয়। এ অবস্থায় তার মাথায় ডিম ভাঙেন বন্ধুরা। সেই সঙ্গে চলে আনন্দ-উল্লাস। প্রথমে এ ঘটনা দেখে ভয় পেলেও পরে খোঁজ নিয়ে স্থানীয়রা জানতে পারেন জন্মদিন উদযাপন।

 

 

চলতি বছরের ১ জানুয়ারি ছিল আরমান আলীর বন্ধু আকাশের ১৭তম জন্মদিন। জন্মদিন উপলক্ষে তাকেও ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে বেঁধে কোমরে রশি পেঁচিয়ে মাথায় ডিম ভেঙে অদ্ভুত জন্মদিন উদযাপন করে বন্ধুরা। একইভাবে বন্ধু বিলাসের ১৯তম জন্মদিন উপলক্ষে রোববার (০২ ফেব্রুয়ারি) কলাপাড়া শহরের শহীদ মিনার চত্বরে অদ্ভুত জন্মদিন পালন করা হয়। পুরো শরীরে ময়দা গুলিয়ে পানি ঢেলে মাথায় ডিম ভেঙে বিলাসের জন্মদিন উদযাপন করে বন্ধুরা।

 

 

এভাবে জন্মদিন পালনের বিষয়ে জানতে চাইলে বিলাস বলেন, আসলে আমরা সবাই এভাবে অভ্যস্ত। জন্মদিন উপলক্ষে জাঁকজমকপূর্ণ পার্টি দেয়া হয়। সেখানে কেক কাটা হয়। অন্যান্য বছরের চেয়ে এবার আরও চমকপ্রদ ছিল আমার জন্মদিন উদযাপন। আমাকে ল্যাম্পপোস্টের সঙ্গে বাঁধা হয়। দুই হাত এবং কোমরে রশি বেঁধে ৩৫ বন্ধু ৩৫টি ডিম আমার মাথায় ভাঙে। পুরো শরীরে ময়দা মেখে জন্মদিন উদযাপন করেছি আমরা। এবারের জন্মদিন আমার সারাজীবন মনে থাকবে। ওই দিন রাতে কেক কেটে সব বন্ধুর অংশগ্রহণে জন্মদিনের দ্বিতীয় পর্ব পালন করা হয়। গত চার বছর ধরে এভাবেই জন্মদিন উদযাপন করছি আমরা। এতে আমরা অনেক মজা পাই, আনন্দ পাই।

 

 

পটুয়াখালী ইউথ ফোরামের সভাপতি মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, অদ্ভুত এই জন্মদিন উদযাপন অপসংস্কৃতি এবং সামাজিক অবক্ষয়। পারিবারিক ও সামাজিক মূল্যবোধের অভাবে এসব কর্মকাণ্ড করে বেড়ায় কিছু তরুণ। এটি অন্যদের জন্য হুমকি। এভাবে জন্মদিন পালন একসময় সহিংস আকার ধারণ করবে।

 

 

তিনি বলেন, জন্মদিন পালনের নামে ল্যাম্পপোস্টে বেঁধে পুরো শরীরে ময়দা মেখে মাথায় ডিম ভাঙা দেখলে মনে হয় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ বেঁধেছে। এসবের প্রভাবে পুরো সমাজ ব্যবস্থা ধ্বংস হয়ে যাবে। জন্মদিন পালনের নামে মাদক সেবন, খুন এমনকি ধর্ষণেও জড়িয়ে গেছে এই প্রজন্মের কতিপয় তরুণ-তরুণী।

 

 

সুশীল সমাজের প্রতিনিধি গোলাম আহাদ বলেন, এসব কেমন ধরনের জন্মদিন উদযাপন আমি বুঝতেছি না। জন্মদিন পালনের এমন সংস্কৃতি কোথায় পেল তারা। হাঁত-পা বেঁধে মাথায় ডিম ভাঙা, ময়দায় পানি মিশিয়ে, আবার কালো রঙ কিংবা মাটি দিয়ে পুরো শরীরে মাখা দেয়া এসব কিসের লক্ষণ? আমার মনে হয় এসব মানসিক অসুস্থতা। এসব কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। না হলে আগামীর প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে।

 

 

পটুয়াখালী আবদুল করিম মৃধা কলেজের অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, অদ্ভুত জন্মদিন যারা উদযাপন করছে তাদের মা-বাবাও এসব পছন্দ করেন না। কোনো সুস্থ মা-বাবা এসব সমর্থন করেন না। এসব উদযাপন প্রযুক্তির অপব্যবহার ও সামাজিক অবক্ষয়। তিনি আরও বলেন, সামাজিক মূল্যবোধের চরম বিপর্যয়, পারিবারিক মূল্যবোধের অভাব এবং নৈতিক অবক্ষয়ের ভয়ঙ্কর এক চিত্র এসব উদযাপনে ফুটে উঠেছে। এসব অপসংস্কৃতি বন্ধ করে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া জরুরি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD