বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৭ অপরাহ্ন
রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি॥ অপরাধের প্রতিবাদ করায় পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় এক বৃদ্ধ বাবাকে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে ছেলে।
নিরুপায় সেই বাবা রোববার দুপুরে রাস্তায় ঘুরছিল, লাঠিভর দিয়ে। পরনে জামাও ছিল না। এমন অবস্থায় তাকে দেখতে পান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মাশফাকুর রহমান।
সব শুনে ইউএনও নিজের গাড়িতে করেই বৃদ্ধকে তার বাড়িতে নিয়ে যান। অবশেষে ইউএনওর হস্তক্ষেপে নিজের বাড়িতে ঠাঁই মিলেছে বৃদ্ধের।
৭০ বছরের ওই বৃদ্ধের নাম মোকলেছ মীর। তার বাড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের পুলঘাট বাজার সংলগ্ন হাপুয়াখালী গ্রামে।
জানা গেছে, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে রোববার দুপুর ১টায় বৃদ্ধ মোকলেছ মীরের স্ত্রী তানিয়া বেগমের সঙ্গে পুত্রবধূ আম্বিয়া আক্তারের কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে ছেলে হোসেন মীর তার সৎ মা তানিয়াকে ঘাড় ধাক্কা দেয়।
এটি দেখে প্রতিবাদ করে হোসেনের বাবা। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ঘর থেকে বৃদ্ধ বাবাকে বের করে দেয় হোসেন। পরে নিরুপায় বাবা রাস্তায় ঘুরে ইউএনওর দেখা পান। পরে ইউএনওর হস্তক্ষেপে বিকাল ৩টায় বাড়িতে ঠাঁই মিলেছে বৃদ্ধের।
বৃদ্ধ মোকলেছ মীর বলেন, হোসেনের মা মারা যাওয়ার পর তানিয়াকে বিয়ে করেন তিনি। এরপর থেকেই তাদের প্রতি ছেলে হোসেন ও পরিবারের অন্যদের অবহেলা শুরু হয়। তবে ছেলের প্রতি তার কোনো অভিযোগ নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাশফাকুর রহমান বলেন, বিষয়টি খুবই দুঃখজনক। আমি ওই বৃদ্ধকে রাস্তায় পেয়ে ঘটনাটি শুনে তার বাড়িতে যাই। গিয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে তাকে বাড়িতে রেখে আসি। ভবিষ্যতে ওই ছেলে যদি তার বাবার সঙ্গে এ ধরনের কাজ আবারও করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কারণ বাবা-মায়ের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব সন্তানের। কোনো সন্তান বাবা-মায়ের দায়িত্ব না নিলে আইন অনুযায়ী জেল-জরিমানা হবে। তিনি আরও বলেন, এই করোনার উদ্ভূত পরিস্থিতিতে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিতে পারে। তাই শুধু এখানেই নয়, সারা দেশে সোশ্যাল ক্রাইসিস হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স হতে পারে। কারণ হল মনস্তাত্ত্বিকভাবে সংকটাপন্ন মানুষ যখন আরও বেশি সংকটে পড়ে, তখন পরিবারের একটু দুর্বল যারা তাদের ওপর মানসিক নির্যাতনের সুযোগ তৈরি হয়। তখন সংসারের বৃদ্ধ-বৃদ্ধা, প্রতিবন্ধী ও কর্মহীন মানুষ উপেক্ষিত ও অবহেলিত হতে পারে। এ সব আমাদের সবারই নজর দেয়া উচিত।
Leave a Reply