সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:৩৭ পূর্বাহ্ন
অনলাইন ডেস্ক: জীবনের সাথে যুদ্ধ করতে করতে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হেরে গেল ৮ বছরের ধর্ষিত শিশু আছিয়া। ধর্ষণের এক বছর পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার (১৭ জুন) ভোরে শিশুটি ঢাকায় আত্মীয়ের আত্মীয়ের বাসায় মৃত্যুবরণ করে।
শিশুটির বাড়ি টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলায়। গত বছরের ৯ জুন শিশুটি ধর্ষণের শিকার হয়। কালিহাতী উপজেলার মালতী গ্রামের তায়েজ আলীর ছেলে মাহবুবকে (১৮) এ ঘটনায় দায়ী করে মামলা হয়। বর্তমানে সে জামিনে রয়েছে।জানা গেছে, ২০১৮ সালের ৯ জুন ধর্ষক মাহবুব প্রলোভন দেখিয়ে আছিয়াকে ডেকে তাদের বাড়িতে নিয়ে যায়। পরে একটি ঘরে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। এতে আছিয়া অসুস্থ হয়ে পড়লে প্রথমে এলেঙ্গার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ও পরে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে তাকে ভর্তি করা হয়। এরপর অবস্থার আরও অবনতি হলে শিশুটিকে ঢাকায় রেফার্ড করা হয়।
২০১৮ সালের ৯ জুন আছিয়ার বাবা আশরাফ আলী বাদী হয়ে একই গ্রামের তায়েজ আলীর ছেলে মাহবুবকে আসামি করে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে এলাকার একটি প্রভাবশালী মহল চেষ্টা করে বলে অভিযোগ করেছে ধর্ষিতার পরিবার। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে ২০১৮ সালের ৩০ আগস্ট মামলার চার্জশিট প্রদান করে।
আছিয়ার নানা হযরত আলী বলেন, ঢাকায় আত্মীয়ের একটি বাসায় সোমবার ভোররাতে আছিয়া ব্যথায় ছটফট করতে থাকে। ওকে হাসপাতালে নেওয়ার আগেই মারা যায়। সোমবার দুপুরের দিকে তাকে কালিহাতীর মালতীতে আনা হয়। ধর্ষণের যথাযথ বিচার চেয়েছেন এলাকাবাসী।কালিহাতীর নারান্দিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শুকুর মাহমুদ বলেন, লাশ বাড়িতে আনার পর আমি গিয়েছিলাম। শিশুটি ঢাকায় ওর আত্মীয়ের বাসায় মারা গেছে। শিশুটিকে স্থানীয় গোরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
এ বিষয়ে টাঙ্গাইল জেলা মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ বলেন, এটি একটি অত্যন্ত বেদনাদায়ক ঘটনা। ধর্ষণের দ্রুত ও যথাযথ বিচার না হওয়ার কারণেই এ ধরনের ঘটনা প্রতিনিয়তই ঘটছে। আসামি মাহবুবের উপযুক্ত শাস্তি হলেই আছিয়ার আত্মা শান্তি পাবে। তিনি আরো বলেন, ধর্ষণ নামক এই ভয়াবহ ব্যাধি রোধ করতে হলে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা ছাড়া বিকল্প নেই।কালিহাতী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মীর মোশারফ হোসেন বলেন, ওই সময় ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হলে অভিযুক্ত ধর্ষক মাহবুবকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়। পরে পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেওয়া হয়। বর্তমানে মামলাটি বিচারাধীন রয়েছে।
Leave a Reply