মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:২০ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দীর্ঘ ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে যাচ্ছে জেলেরা। তবে হতাশ জেলেরা, জালে ধরা পড়ছে ঝাঁকে ঝাঁকে জাটকা, বড় সাইজের ইলিশ নেই বললেই চলে। স্বল্পমূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে ইলিশ।
মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, শ্রাবণ-ভাদ্র মাস ইলিশ প্রজননের ভরা মৌসুম। এ সময় ২২ দিন ইলিশ আহরণ বন্ধ রাখে সরকার। এ ছাড়া সারা বছরই ইলিশ কম-বেশি ডিম ছাড়ে। তবে ইলিশ বড় হওয়ার মৌসুমের কারণে সরকার ৬৫ দিন ২৩ জুন পর্যন্ত মাছ ধরা বন্ধ রাখে।
এ ছাড়াও বঙ্গোপসাগরে সামুদ্রিক মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধির স্বার্থে প্রতিবছর ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত ৬৫ দিন সব ধরনের নৌযানে সব প্রকারের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ থাকে। এরপরই শুরু হয় সাগরে মৎস্য আহরণ। করোনাকালীন অর্থ সংকটের সময় ৬৫ দিন পর সাগরে মৎস্য আহরণ করতে গেলে এবার জেলেদের জালে ধরা পড়ছে জাটকা ইলিশ।
আড়তদার আবুল কাসেম বলেন, বর্তমানে ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তু জেলেদের জালে মিলছে না বড় ইলিশ, ধরা পড়ছে ছোট সাইজের জাটকা ইলিশ, বিশেষ করে ৩শ থেকে ৩৫০ গ্রামের ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে। সাধারণত জেলেদের জালে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ জাটকা ধরা পড়ে। তবে এবার ছোট আকারের ইলিশ মিলছে বেশি।
এ প্রসঙ্গে সামুদ্রিক মৎস্য দফতর চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন এ প্রতিনিধিকে বলেন, অন্যান্য বছর এ সময়ে ইলিশের আকার তুলনামূলক বড় ছিল। এবার আহরণের শুরুতে ছোট ইলিশ মিলছে। তবে এ মুহূর্তে এটা সমস্যা বলা যাবে না। আরও কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপর প্রকৃত তথ্য জানা যাবে।
ইলিশ নিয়ে এখনও ব্যাপক গবেষণা চলছে। বর্তমান প্রজননকাল যথার্থ কিনা সেটা গবেষণায় আরও দেখতে হবে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সব সংস্থা কাজ করছে।
অন্যদিকে সোনালি যান্ত্রিক মৎস্য শিল্প সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বাবুল সরকার জাটকা নিয়ে ভিন্ন কথা বলেছেন। তিনি বলেন, মৎস্য আহরণ শুরু হলেও বৈরি আবহাওয়ার কারণে জেলেরা গভীর সাগরে যেতে পারছে না। সীতাকুণ্ডের সলিমপুর, ভাটিয়ারী, কুমিরা, বাশঁবাড়িয়া, বাড়বকুণ্ড, মুরাদপুর, সৈয়দপুরসহ বিভিন্ন এলাকার জেলেরা উপকূলীয় এলাকার কাছাকাছি মাছ আহরণের কারণে ছোট সাইজের ইলিশ ধরা পড়ছে। গভীর সাগরে বড় সাইজের ইলিশের আবাস। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে গভীর সাগরে মাছ আহরণ করতে যাবে জেলেরা। এরপর সাগরে বড় আকারের ইলিশ ধরা পড়বে।
জেলা মৎস্য অফিসার ফারহানা লাভলী বলেন, সরকার একটা নির্দিষ্ট সময়ে সমুদ্রে সব ধরনের মাছ আহরণ নিষিদ্ধ ঘোষণার বিষয়ে যথেষ্ট গবেষণা করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সুতরাং বর্তমানে জেলেদের জালে কিছু জাটকা ধরা পড়লেও আশা করি কয়েকদিন পর এ সমস্যা আর থাকবে না।
এ ব্যাপারে সীতাকুণ্ড উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শামিম আহমেদ বলেন, জেলেদের জালে কেমন ইলিশ ধরা পড়ছে আমরা পর্যবেক্ষণ করছি, সাগরের গভীরে মাছ ধরতে গেলে তখন বুঝা যাবে ছোট বড় ইলিশের আসল রহস্য, একটু অপেক্ষা করতে হবে আমাদের।
Leave a Reply