শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:২৮ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ পাবনার সাঁথিয়ায় বিয়ের দাবিতে লালচাঁদ (২৮) নামে এক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রের বাড়িতে শান্তা আক্তার (২৩) নামে এক তরুণী অনশন শুরু করেছেন।
মঙ্গলবার দুপুরে সাঁথিয়া উপজেলার করমজা ইউনিয়নের শামুকজানি চকপাড়া গ্রামে লালচাঁদের বাড়িতে ওঠেন শান্তা। লালচাঁদ ও শান্তা সম্পর্কে মামাত-ফুফাত ভাই বোন।
শান্তা বলছেন, তার সাফ কথা- লালচাঁদ তাকে বিয়ে না করলে তিনি আত্মহত্যা করবেন। তবে প্রেমিক লালচাঁদের দাবি- তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে।
প্রেমিক লালচাঁদ শামুকজানি গ্রামের রাহেদ খাঁ’র ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। অনশনরত তরুণী বেড়া উপজেলার সানিলা শাহপাড়া গ্রামের আতোয়ার প্রামানিকের মেয়ে।
শান্তা আক্তার জানান, লালচাঁদের সাথে তার দীর্ঘ ৬ বছরের প্রেমের সম্পর্ক। ৪ বছর আগে শান্তাকে তার বাবা-মা পাবনা সদর উপজেলায় বিয়ে দেন এবং সে সংসারের একটি ছেলেও রয়েছে। কিন্তু বিয়ের পরও তাদের পরকীয়া চলতে থাকে। লালচাঁদ শান্তাকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে এক বছর আগে শান্তা বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটিয়ে নানা বাড়ি শামুকজানি গ্রামে (লাল চাঁদের বাড়িও এ গ্রামে) থেকে যান।
এ সময় লালচাঁদ শান্তার সাথে স্বামীর মত অধিকার ভোগ করেন। স্থানীয়রা ও লালচাঁদের পরিবার টের পাওয়ার পর লালচাঁদ শান্তাকে নিয়ে বেড়া পৌর সদরে সানিলা পাড়ায় স্বামী- স্ত্রী পরিচয়ে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। এ সময় লালচাঁদ মাঝে মধ্যে ঢাকায় যাতায়াত করতেন। কিন্তু তার বাড়ির লোকজন জানতেন তিনি ঢাকাতেই আছেন।
কয়েক মাস পর শান্তা তাকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান লালচাঁদ। পড়াশোনা শেষের কথা বলে বিষয়টি এড়িয়ে যেতে থাকেন।
শান্তা জানান, লাঁলচাদের পরিবার বিষয়টি এবারও ঘটনা জানার পর তাকে বেড়া থেকে পালিয়ে যেতে বলেন। সে মোতাবেক গত (বুধবার) ২৬ আগস্ট সন্ধ্যায় লালচাঁদ গোপনে ভাড়া বাসা থেকে পালিয়ে চলে যান। তখন তিনি মহাবিপদে পড়ে যান।
এরপর গত ২৭ আগস্ট শান্তার সাথে লালচাঁদের কথা হয়। এসময় বিয়ের কথা বললে তিনি সাফ জানান, তার পক্ষে বিয়ে করা সম্ভব নয়। এরপর থেকে শত চেষ্টা করেও আর যোগাযোগ করতে পারেননি তিনি।
এ ঘটনার পর থেকে শান্তা লালচাঁদের বাড়িতে যোগাযোগ করলে স্থানীয় এক ব্যক্তি তাকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চুপ থাকতে বলেন।
শান্তা বলেন, তিনি নিরুপায় হয়েই সোমবার থেরে বিয়ের দাবিতে অনশন করছেন। প্রেমিক লাঁলচাঁদ তাকে বিয়ে না করলে তিনি আত্মহত্যা করবেন।
এ বিষয়ে লালচাঁদ মোবাইল ফোনে জানান, শান্তা তার সম্পর্কে আত্মীয়। তার সাথে মাঝেমধ্যে ফোনে কথা হতো। তাকে ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্র চলছে।
করমজা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হোসেন আলী বাগচী বলেন, প্রতারণা করে থাকলে তার শাস্তি হওয়া দরকার। তার কাছে অভিযোগ আসলে তিনি গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
রাত ১০ টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত শান্তা লালচাঁদের বাড়ি অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে।
সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান মঙ্গলবার রাতে জানান, বিয়ে বা পরকীয়ার বিষয়টি পুলিশের দেখার বিষয় নয়। তবে প্রতারণার ব্যাপারে অভিযোগ এলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জানান, সোমবার রাত পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ দেন নাই।
Leave a Reply