শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৩৩ অপরাহ্ন
থানা প্রতিনিধি॥ রাতের আঁধারে সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে ৫ কিশোর অপরাধীকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে নয়টার দিকে বরিশাল সদর উপজেলার টুঙ্গিবাড়ীয় ইউনিয়ন এই ঘটনা ঘটে।
আটককৃতরা হলো ওই ইউনিয়নের নরকাঠি গ্রামের নয়ন খানের কিশোর ছেলে ওহিদ হোসেন, নূর মোহাম্মদের ছেলে নুরুল ইসলাম, রশিদ খানের ছেলে শুভ হোসেন, সোবহানের ছেলে সোলায়মান ও সাব্বির হোসেন।
এদিকে ছিনতাই’র ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সংশ্লিষ্ট থানার ওসির বিরুদ্ধে। স্থানীয় ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় ডাব চুরির নাটক সাজিয়ে তাদের ছেড়ে দিয়েছেন ওসি।
যদি এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন তালুকদার ও ইউপি সদস্য ধলু মোল্লা। তবে তাদের দুজনের দুই ধরনের বক্তব্য সন্দেহের সৃষ্টি করেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে উলুবেড়িয়ার ব্যবসায়ী সোহাগ শিকদার বৃহস্পতিবার রাতে মোটরসাইকেল চালিয়ে বাড়ি ফিরছিল। পথিমধ্যে রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাস্তার মধ্যে গাছের গুড়ি দেখে দুর থেকেই মোটরসাইকেল ঘুরিয়ে চলে যাবার চেষ্টা করে।
তখন পেছন থেকে তাদের লক্ষ্য করে ধাওয়া এবং ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে ওই পাঁচ কিশোর অপরাধী। এ সময় তাদের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে আসে।
খবর পেলে মহানগরের বন্দর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে ওই পাঁচ কিশোরকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এর পরপরই তাদের ছাড়িয়ে আনতে শুরু হয় দালালদের দৌড়ঝাঁপ। তারা ছিনতাইয়ের ঘটনাটির চুরির ঘটনা রূপান্তরের চেষ্টা করে।
সূত্র জানায়, ছিনতাই চেষ্টা ও হামলার ঘটনায় মামলা করতে চান ব্যবসায়ী সোহাগ সিকদার। কিন্তু মামলার না করতে স্থানীয় ইউপি সদস্য ধলু মোল্লা তাকে মামলা না করতে বিভিন্নভাবে ভয়-ভীতি দেখায়।
তবে এমন অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি সদস্য ধলু মোল্লা বলেন, রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে সড়ক শিকদারকে চিনতে চেষ্টা করে ওই পাঁচ কিশোর অপরাধী। কিন্তু তার সাথে স্থানীয় মাংস ব্যবসায়ী বাচ্চু কসাই থাকায় ব্যর্থ হয় ছিনতাইকারীরা। এজন্য তাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেলও নিক্ষেপ করে ওরা।
তিনি বলেন, ঘটনার পরপরই থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযান চালিয়ে ওই পাঁচ ছিনতাইকারীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। তাদের ছাড়ানোর ব্যাপারে আমার কোনো ভূমিকা নেই। বরং থানার ওসি চাচ্ছে ঘটনাটি মীমাংসার জন্য।
ইউপি সদস্য আরো বলেন, কিশোর অপরাধীদের বয়স কম হওয়ায় ঘটনাটি মীমাংসা করার জন্য প্রস্তাব দেন ওসি। আমি শুধু মাত্র ওসির কথা মতন ব্যবসায়ী সোহাগকে এ বিষয়ে প্রস্তাব দেই। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।
এদিকে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আনোয়ার হোসেন তালুকদার ঘটনাটি ছিনতাই বলে মানতে নারাজ। তিনি বলেন, রাত ৯ টার সময় কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটতে পারে না। মূলত ওই পাঁচ কিশোর স্থানীয় একটি ঘেড়ের ডাব চুরি করতে যায়।
এজন্য কেউ দেখে ফললে যাতে খুব সহজেই তাদের কাছে আসতে না পারে সেজন্য রাস্তার মাঝে গাছের গুড়ি ফেলে রাখে। ঠিক সেই মুহুর্তে ঘটনাস্থল থেকে যাওয়ার পথে ব্যবসায়ী সোহাগ তাদের দেখে ডাকাত ভেবে চিৎকার করে।
তিনি বলেন, ওরা ডাকাত হলে এমনিতেই ওখান থেকে পালিয়ে যেত। তাছাড়াও ওদের বয়স একেবারেই কম। নবম কি দশম শ্রেণীতে লেখাপড়া করে ওরা। ওরা যেটা করেছে সেটা কোন ধর্তব্য অপরাধের ভিতরে পড়ে না।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওসি বলেন, আমার থানায় কোন দালালের স্থান নেই। বিষয়টি নিয়ে আমি কমিশনার স্যারের সাথে কথা বলেছি। তার নির্দেশনা অনুযায়ী সমাজসেবা অধিদপ্তরের প্রবেশন অফিসারের মাধ্যমে কিশোরদের ও তাদের পরিবারের কাছ থেকে মুচলেকা রেখে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
Leave a Reply