শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:
বরিশালের নবগ্রাম রোডে অভিযানের পর থেকেই বন্ধ রয়েছে জামায়াতের গোপন আস্থানা মডেল মহিলা মাদ্রাসা। গত দু’দিন ধরে ওই মাদ্রাসায় শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এমনকি মাদ্রাসার আবাসিক হলও বন্ধ রয়েছে। বছরের শেষ সময়ে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষার পূর্ব মহুর্তে মাদ্রাসা অঘোষিত ভাবে বন্ধ রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।
জানাগেছে, গত শুরুবার বিকালে হঠাৎ করেই নবগ্রাম রোডের সিকদার প্যালেসে অবস্থিত মডেল মহিলা মাদ্রাসার আড়লে জামায়াতের গোপন আস্থায় অভিযান চালায় কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ। এসময় গোপন বৈঠক কালে সেখান থেকে আটক করা হয় জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ও দুই জেলার আমীর সহ ১০ নেতাকে। এমনকি একই দিন সন্ধ্যায় দ্বিতীয় দফায় পরিচালিত অভিযানে ওই মাদ্রাসা থেকে আরো ৪ জামায়াত নেত্রীকে আটক করা হয়। যারা সবাই ওই মাদ্রাসার শিক্ষক বলে পুলিশের কাছে পরিচয় দিয়েছে। তাছাড়া ওইরাতেই আটক ১০ জন সহ জামায়াতের ১৪ নেতার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। ওই মামলায় মাদ্রাসার চেয়ারম্যান মো. নূরুল ইসলাম ও মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাহফুজুর রহমান আমীন সহ ৪ জনকে পালাতক আসামী করা হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, শুক্রবার বিকালে অভিযানের কারনে শনিবার থেকেই অঘোষিত ভাবে মডেল মহিলা মাদ্রাসাটি বন্ধ রয়েছে। উড়ছে না জাতিয় পাতাক। গত দু’দিন শিক্ষার্থীরা মাদ্রায় আসলে বন্ধ শুনে গেট থেকেই ফিরে যাচ্ছে। এমনকি সিকদার প্যালেসে থাকা মাদ্রাসার মহিলা হলও অঘোষিত ভাবে বন্ধ করে দিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, নবগ্রাম রোডে মডেল মহিলা মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই সেখানে জামায়াতের গোপন কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে আসছে। ওই মাদ্রাসাটির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে পিওন পর্যন্ত সবাই জামায়াতের সাথে সম্পৃক্ত। তাছাড়া মাদ্রাসাটি যেই সেকদার প্যালেসে অবস্থিত সেই বাড়ির মালিক নিজেও জামায়াতের ডোনার বলে সূত্র নিশ্চিত করে। বাড়ির মালিক জামায়াত নেতা আব্দুর রাজ্জাক সিকদার আমেরীকা প্রবাসী। প্রতি মাসে একবার করে তিনি দেশে আসেন। প্রতি মাসেই মডেল মহিলা মাদ্রায় তার উপস্থিতিতে জামায়াতের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে বৈঠক হয়ে আসছিলো। এই মাদ্রাসা থেকেই বরিশালের ৬ জেলায় জামায়াতের কার্যক্রম চলে আসছিলো বলে সূত্র নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় সূত্রগুলো জানিয়েছে, জামায়াতের অর্থে পরিচালিত নবগ্রাম রোডের মডেল মহিলা মাদ্রাসার প্রতি রহস্যজনক কারনে তেমন খোঁজ খবর রাখছেন না মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড বা মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। প্রতিষ্ঠা পরবর্তী সর্বশেষ কবেনাগাদ মাদ্রাসাটি শিক্ষা মন্ত্রনালয় কিংবা মাদ্রাসা অধিদপ্তর পরিদর্শন করে তা জানা নেই সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরও। তাদের উদাসিনতা এবং রহস্যজনক ভূমিকার কারনেই মাদ্রাসাটি ধীরে ধীরে জামায়াতের গোপন ঘাটিতে পারিনত হয়। জামায়াতের নীতি আদর্শের শিক্ষা দেয়া হয় শিক্ষার্থীদের।
অপরদিকে গতকাল রোববার জামায়াতের গোপন আকড়া নবগ্রাম রোডের মডেল মহিলা মাদ্রাসা পরিদর্শন করেছে কোতয়ালী মডেল থানার টিম। থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. আসাদুজ্জামান সহ পুলিশের একটি টিম মাদ্রাসা সম্পর্কে খোঁজ খবর নেন। মাদ্রাসাটিতে কে বা কারা আসা যাওয়া করছে এবং এখানকার কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হন তারা।
Leave a Reply