রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪২ অপরাহ্ন
ঝালকাঠি সংবাদদাতা॥ গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারের পর ঝালকাঠির কাঁঠালিয়ার নরসুন্দর শেফালী রানীকে জমি ও ঘর দিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে মঙ্গলবার (২ জুলাই) সকাল ১১টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এমপি কাঁঠালিয়ার দোগনা গ্রামে গিয়ে শেফালী রানীর হাতে জমির দলিল তুলে দেন। তাকে চার শতাংশ জমিতে তিনলাখ টাকা ব্যয়ে একটি একতলা ভবন করে দেওয়া হবে। জমি ভবন নির্মাণের সুসংবাদ শুনে শেফালী রানী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
শেফালী রানী বলেন, আমার মতো একজন গরিব মানুষের কথা শুনে প্রধানমন্ত্রী জমি ও ঘর দিয়েছেন, আমি খুব খুশি। এখন আমার ছেলে মেয়ে নিয়ে ভাল করে থাকতে পারবো। আমি যতদিন বেঁচে থাকবো, ততদিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান স্যারের কথা মনে রাখবো।
প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শেফালী রানীর দুরবস্থার কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরায় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের খবর রাখেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশে শেফালী রানীকে চার শতাংশ জমি ও একটি ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে। তিনটি বেড রুম, একটি কিচেন রুম ও একটি টয়লেট থাকবে। এর পরেও যদি কোন কিছুর প্রয়োজন হয় শেফালী রানীকে তাও দেওয়া হবে। আমি মনে করি ভবন করে দেওয়ার পরে শেফালী ও তাঁর পরিবারের মনে যে দুঃখ ছিল তা মুছে যাবে। এর মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রীর যে ভিশন গৃহহীনকে ঘর দেওয়ার কাজ সফল হয়েছে। এ কার্যক্রমের দ্বারা এটাই প্রমান হয় বর্তমান সরকার একটি কল্যাণমুখী সরকার, শেখ হাসিনা একজন মানবতার নেত্রী।
পরে দোগনা বাজারে সুধিজনদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুল রহমান। জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান এমপি। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালায়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোহসীন, ঝালকাঠির পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিন ও কাঁঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির ও শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহামুদুর রহমান রিপন।
১৫ বছর আগে স্বামী নিরুদ্দেশ হওয়ার পর অসহায় হয়ে পড়েন শেফালী রানী শীল (৫০)। পাঁচ ছেলে মেয়ের লেখাপড়া ও সংসার চালানো দায় হয়ে পড়ে তাঁর। বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে যে টাকা পাওয়া যেতো, তা দিয়ে কোন রকমের খাবার ঝুটতো। কখনো একবেলা খেয়ে পুরো দিন কাটতো ছয় সদস্যের এ পরিবারের। বাধ্য হয়ে স্বামী পেশাকে বেছে নিলেন তিনি। সেই থেকে ১৫ বছর ধরে পুরুষের চুল দাড়ি কাটছেন ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার দোগনা গ্রামের শেফালী রানী। দোগনা বাজারে এক প্রবাসীর ঘরের বারান্দায় তিনি সেলুন দেন। এ কাজেই চলছে তাঁর ছয় সদস্যর সংসার। সামান্য আয়ে অভাব অনটনের মধ্যে কেটে যাচ্ছিল তাঁর দিন।
Leave a Reply