'একি করলেন ডাক্তার নাজমুল'রোগীর হাতে ব্যথা,দিলেন কিডনি রোগের ইনজেকশন! Latest Update News of Bangladesh

সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:




‘একি করলেন ডাক্তার নাজমুল’রোগীর হাতে ব্যথা,দিলেন কিডনি রোগের ইনজেকশন!

‘একি করলেন ডাক্তার নাজমুল’রোগীর হাতে ব্যথা,দিলেন কিডনি রোগের ইনজেকশন!




নিজস্ব প্রতিবেদক:বরিশালে চিকিৎসা করাতে এসে দালালনির্ভর ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ভুয়া ডিগ্রিধারী পরিচয়দানকারী ডাক্তারের খপ্পরে পরে সর্বস্ব হারালেন ভোলা জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের দুই দিনমজুর পরিবার। সামান্য হাতের ব্যাথার জন্য আল্টাসোনগ্রাম পরীক্ষা করানো হয়েছে এক রোগীকে। অপর রোগীর রক্তের serum creatinine: 1.4 থাকা সত্বেও কিডনীতে আক্রান্ত বলে মাত্র ২৫ টাকার Neuro-v ইনজেকশন পুশ করে চিকিৎসক হাতিয়ে নিলো ৩ হাজার টাকা। শুধু তাই নয়, মাত্র এমবিবিএস পাশ ওই চিকিৎসক তার ভিজিটও নিলো ১২শত টাকা। মঙ্গলবার দিনভর আজব প্রতারণামূলক এই ঘটনাটি ঘটিয়েছে বরিশাল নগরীর জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব) কর্তৃপক্ষ ও ডা. নাজমুল হোসেন।

এই বিষয়টি নিয়ে নগরজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চলসৃষ্টি হয়েছে। এমন প্রতারক ও প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে ভুক্তভোগী রোগীর পরিবার বরিশাল জেলা প্রশাসক থেকে শুরু করে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসেসিয়েশন, ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে অভিযোগ প্রেরণ করেছেন।

ভুক্তভোগী রোগী শাহজাহান’র ছেলে মো. জুয়েল সাংবাদিকদের জানান, তার পিতা শাহজাহান মিয়া ভোলা জেলার গজারিয়া বাজারস্থ উত্তর দিঘলদী গ্রামের বাসিন্দা ও একজন কৃষক। ৯ সদস্যের পরিবার তাদের। তিনি সংসারের বড় ছেলে ও চট্টগ্রামে দিনমজুরের কাজ করেন। গত কয়েক দিন ধরে তার পিতা শারিরিক অসুস্থ্যতায় ভুগছিলেন। তার চিকিৎসার জন্য গ্রামে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে ১৫ হাজার টাকা ধার-দেনার মাধ্যমে সংগ্রহ করে শাহজাহান মিয়া ও পার্শ্ববর্তী শাহাজাল চৌকিদারের অসুস্থ (হাতে ব্যাথা) স্ত্রী শাহানুর বেগমকে সাথে নিয়ে গতকাল ৫ মার্চ মঙ্গলবার লঞ্চযোগে বরিশালে আসেন।

 

শাহজালাল, তার স্ত্রী পারু বেগম, ছেলে জুয়েল আর প্রতিবেশী শাহানুর বেগম বরিশাল লঞ্চ টার্মিনালে এসে এক অটোরিকশা চালককে বান্দরোডস্থ রাহাত আনোয়ার হাসপাতালের ডা. মো. আনোয়ার হোসেন’র চেম্বারে নিয়ে যেতে বলেন। তখন অজ্ঞাতনামা ওই অটোরিকশা চালক জানায় ‘ডা. মো. আনোয়ার স্যার বরিশালে নেই, তার অবর্তমানে রোগী দেখেন জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টারের (ডিজিটাল ল্যাব) ডা. নাজমুল হোসেন। অতঃপর অটোরিকশা চালক রোগীদের ডা. নাজমুল হোসেন’র চেম্বারে নিয়ে যায়।

 

সেখানকার সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব)’র কাউন্টারে দায়িত্বরত ম্যানেজারের সাথে অটোরিকশা চালক জুয়েলকে পরিচয় করিয়ে দিয়ে হাতে মুঠে টাকা নিয়ে সেখান থেকে সটকে পরেন। এর ৩০ মিনিট পর ৬শত টাকা করে মোট ১২শত টাকা ভিজিটের পরিশোদের পর ডা. নাজমুল হোসেন একে একে শাহজালাল ও শাহানুর বেগমকে দেখেন এবং পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য কাউন্টারে পাঠান। কাউন্টার ম্যানেজার পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য শাহজাহানের কাছ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা ও শাহানুর বেগমের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা নেন (উল্লেখ্য শাহানুর বেগমের ডান হাতে ব্যথায় ভুগতে ছিলেন, কিন্তু চিকিৎসক তাকে আল্ট্রসোনগ্রামসহ রক্তের বিভিন্ন পরীক্ষা দেন)।

 

দুপুরে প্রাপ্ত রিপোর্টগুলো সবই ভাল বলেন ডা. নাজমুল হোসেন দাবি করে বলেন শাহজাহান মিয়া কিডনি রোগে আক্রান্ত (অথচ তার রিপোর্টেserum creatinine: 1.4 উল্লেখ ছিলো)। চিকিৎসক নাজমুল হোসেন আরও বলেন, এই মুহূর্তে শাহজাহানের শরীরে একটি ইনজেকশন পুশ করতে হবে। ইনজেকশনটির তার কাছে আছে দাম ৩ হাজার টাকা। ওই ৩ হাজার টাকা দেয়া মাত্রই মাত্র ২৫ টাকা মূল্যের একটি Neuro-v ইনজেকশন পুশ করেন। এসময় ইনজেকশনটির খালি ভায়েল সংগ্রহ করে হাতে রাখেন জুয়েল।

এদিকে শাহানুর বেগম’র সকল রিপোর্ট ভাল দাবি করে তার প্রেসক্রিপশনে ৭ ধরনের ওষুধ লিখে দিয়ে তাকে বিদায় দেয়া হয়। বিকেলে ডাক্তারের চেম্বার থেকে বের হয়ে একটি ফার্মেসীতে ওই ইনজেকশনের খালি ভায়েল নিয়ে যোগাযোগ করে জুয়েল জানতে পরেন তার মূল্য মাত্র ২৫ টাকা। তখন তিনি বুঝতে পারেন দিনভর তার সাথে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ডাক্তার প্রতারণা করেছেন। বিষয়টি তিনি বিভিন্ন সংবাদকর্মীদের কাছে তুলে ধরেন।

সংবাদকর্মীরা এ বিষয়ে ডাঃ নাজমুল হোসেন’র সাথে যোগাযোগ করেন। ডাঃ নাজমুল হোসেন তার প্রেসক্রিপশন ও নগরীর জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টারে (ডিজিটাল ল্যাব) সাটানো সাইনবোর্ডে উল্লেখ করেছেন তিনি এমবিবিএস (ঢাকা), পিজিটি (মেডিসিন) পাশ। এছাড়া তিনি মেডিসিন, গ্যাস্ট্রোলজি, বাতব্যথা, হার্ট, ষ্ট্রোক, নাক, কান, গলা, বক্ষব্যাধি, চর্ম, যৌনরোগে উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত, সাবেক মেডিকেল অফিসার, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল, সাবেক সহকার রেজিষ্টার, গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজ, সভার, ঢাকা, BMDC:73299| উচ্চতর প্রশিক্ষণের বিষয় জানতে চাইলে তিনি (ডা. নাজমুল হোসেন) তার কোন প্রমাণপত্র দেখাতে পারেন নি। চিকিৎসক কেন ইনজেকশন বিক্রি করবেন এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পাশাপাশি দালালের বিষয়ে ডায়াগনস্টিক কর্তৃপক্ষ দায়ী বলে তিনি দাবি করে বলেন, ৬শত টাকার ভিজিটের ৩শত টাকা তাকে ডায়াগনস্টিক মালিককে দিতে হয়।

তিনি আরও বলেন, আমার কাজ রোগী দেখা আর ডায়াগনস্টিকের কাজ যেভাবেই হউক রোগী এনে দেয়া। এছাড়া রোগী শাহানুরের হাতের ব্যাথায় আল্ট্রাসোনগ্রাম পরীক্ষা করানোর বিষয়ে তিনি কোন উত্তর দিতে রাজি হননি। সবশেষ তিনি পুরো বিষয়টি গোপন রাখতে সংবাদকর্মীদের অনুরোধ জানান। এমতাবস্থায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে- জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব) অশিংদার ডিবি পুলিশের এক (এসআই) উপ-পরিদর্শক।

এদিকে জর্ডন রোডস্থ সাউথ এ্যাপেক্স ডায়াগনস্টিক সেন্টার (ডিজিটাল ল্যাব) ও ডা. নাজমুল হোসেন এমন প্রতারণার প্রতিকার চেয়ে রোগীর ছেলে মো. জুয়েল বরিশাল জেলা প্রশাসক, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক, সিভিল সার্জন, ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যাসেসিয়েশন, ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে অভিযোগ প্রেরণ করেছেন।

 

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD