সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৩১ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বুধবার সড়ক দুর্ঘটনায় ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এসব দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও বহু মানুষ।
সিলেট: ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ট্রাকের ধাক্কায় পিকআপে থাকা ১৫ নির্মাণশ্রমিক নিহত হয়েছেন। ভোর ৬টার দিকে শ্রমিক বহনকারী পিকআপটির সঙ্গে আলুভর্তি ওই ট্রাকের সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে ১১ জন এবং এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পর আরও চারজন মারা যান। আহত আরও ১২ নির্মাণশ্রমিক ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
পিকআপে করে ৩০ নির্মাণশ্রমিক ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজারে ভবনের ছাদ ঢালাইয়ের কাজে যাচ্ছিলেন। অন্যদিকে মুন্সীগঞ্জ থেকে আলু নিয়ে ট্রাকটি সিলেটে যাচ্ছিল। দক্ষিণ সুরমা উপজেলার নাজিরবাজারের কুতুবপুর এলাকায় দুই গাড়ির সংঘর্ষের পর মহাসড়কে প্রায় তিন ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
সিলেট ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক মনিরুজ্জামান জানান, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও এলাকাবাসী হতাহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান। ঘটনাস্থলেই ১১ জন নিহত হন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন- সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলার গছিয়া গ্রামের প্রয়াত বারিক উল্লাহর ছেলে সিজিল মিয়া, পাতাইরা কাইসা গ্রামের প্রয়াত জলিম উদ্দিনের ছেলে একলিম মিয়া, আলীনগরের প্রয়াত শিশু মিয়ার ছেলে হারিছ মিয়া, শান্তিগঞ্জ উপজেলার তলেরবন্ত গ্রামের প্রয়াত আমানউল্লাহ তালুকদারের ছেলে আউলাদ তালুকদার, দিরাইয়ের ভাটিপাড়ার প্রয়াত মফিজ মিয়ার ছেলে সায়েদ নূর, শান্তিগঞ্জের মুরাদপুরের প্রয়াত হারুন মিয়ার ছেলে দুলাল মিয়া, বাবনগঞ্জের প্রয়াত ওয়াহাব আলীর ছেলে শাহিন মিয়া, নেত্রকোনার বারহাট্টার প্রয়াত ইসলাম উদ্দিনের ছেলে আউলাদ মিয়া, দিরাই ভাটিপাড়ার সিরাজ মিয়ার ছেলে সৌরভ মিয়া, মধুপুরের প্রয়াত সোনাই মিয়ার ছেলে সাধু মিয়া, ভাটিপাড়ার শাহজাহান মিয়ার ছেলে বাদশা মিয়া, হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার হলদিউড়া গ্রামের আব্দুর রহিমের স্ত্রী আনোয়ারা বেগম, ভাটিপাড়ার শমসের নূরের ছেলে মেহের ও মধুপুরের সুনা মিয়ার ছেলে নুনু মিয়া।
ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে দায়িত্বরত মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ জানান, প্রথমে ঘটনাস্থল থেকে ১১ জনের মরদেহ মর্গে আনা হয়। এরপর আরও মরদেহ আসে। নিহতদের মধ্যে ১২ জনই সুনামগঞ্জের দিরাই ও শান্তিগঞ্জের, একজন করে হবিগঞ্জ ও নেত্রকোণার বাসিন্দা রয়েছেন।
কক্সবাজার: কক্সবাজারের মেরিন ড্রাইভে ও চকরিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যু হয়েছে। দুপুরে পৃথক স্থানে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। এর মধ্যে দুজন ঘটনাস্থলে ও অপর দুইজন হাসপাতালে মারা যান।
ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) রেজাউল জানিয়েছেন, মেরিন ড্রাইভ সড়কে বেপরোয়া মোটরসাইকেল ও ইজিবাইকের সংঘর্ষে এক যুবক নিহত হন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও তিনজন। মেরিন ড্রাইভ সড়কের উখিয়ার জালিয়াপালং ইউনিয়নের শফির বিল এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ইমারত মোল্লা যশোরের আবদুস সাত্তারের ছেলে। তিনি ইনানীর পালংকি রেস্টুরেন্টের মার্কেটিং এবং সিকিউরিটির দায়িত্বে ছিলেন।
আহতদের মধ্যে রাজাপালং ইউনিয়নের পিনজিরকুল এলাকার শাহাজাহান মিস্ত্রির ছেলে রিদুয়ান, হলদিয়াপালং ইউনিয়নের বাসিন্দা গুরা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আকতার চট্রগ্রাম নেয়ার পথে মারা যান।
অপরদিকে চকরিয়ায় ওভারটেক করতে গিয়ে সিমেন্টবাহী কাভার্ড ভ্যানের ধাক্কায় বাইক চালক ফরহাদ হোসেন নিহত ও আরোহী রেজাউল করিম আহত হয়েছেন। কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের হারবাং ইউনিয়নের উত্তর হারবাং ভান্ডারিডেবা মোচারা মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ফরহাদ লক্ষ্মীপুর জেলার রামগঞ্জ ডুমুরিয়ার মোহাম্মদ মোস্তাকের ছেলে। আহত রেজাউল নোয়াখালী জেলার পরিষদকমপুরের জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন চিরিঙ্গা হাইওয়ে থানার ইনচার্জ খোকন কান্তি রুদ্র।
পাবনা: পাবনার ঈশ্বরদীতে সিএনজিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে ট্রাক্টরের মুখোমুখি সংঘর্ষে মাহবুব আলম নামে এক ব্যক্তি এবং তার ১৬ মাস বয়সি ছেলে আবদুর রহমান নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় সিএনজি চালকসহ আহত তিনজনকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের তেঁতুলতলা ঈশ্বরদী-পাবনা মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। কোনো অভিযোগ না থাকায় বুধবার সকালে ময়নাতদন্ত ছাড়াই দুজনের মরদেহ পরিবারের সদস্যদের হস্তান্তর করা হয়েছে।
নিহত মাহবুব আলম রাজশাহীর বাঘা উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের রফিকুল আলমের ছেলে। পাকশী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশীষ কুমার সান্যাল এসব তথ্য জানান।
ফেনী: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের খাইয়ারা নামক স্থানে মুরগির ডিম বোঝাই একটি পিকআপ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার বিভাজনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে চালক ও হেলপার নিহত হয়েছেন। বুধবার বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- পিকআপ চালক মো. সোহাগ। তিনি চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকার জাহাঙ্গীর হোসেনের ছেলে। অপরজন হলেন গাইবান্ধা জেলার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার খামার পাঁচগাছিয়া গ্রামের মো. মুনতাহারের ছেলে জহির আহাম্মদ।
ফেনীর মুহুরীগঞ্জ হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাশেদ খান চৌধুরী এ তথ্য জানান।
লক্ষ্মীপুর: লক্ষ্মীপুরে বোমা ফাটিয়ে স্বর্ণের দোকানে ডাকাতি শেষে পালিয়ে যাওয়ার সময় ডাকাতদলের ব্যবহৃত পিকআপ ভ্যান চাপায় সফিউল্যা নামে এক পথচারী নিহত হয়েছেন। এ সময় আরও ২ জন পথচারী আহত হন। এ ঘটনায় ডাকাতদলের ব্যবহৃত পিকআপসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে শহরের কলেজরোড এলাকার চৌধুরী সুপার মার্কেটের আর কে শিল্পালয়ে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। আহত স্বর্ণ ব্যবসায়ী অপুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। পিকআপ চাপায় আহত ইসমাইল হোসেনকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহত স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিচ্ছেন। তার নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
Leave a Reply