এইদিনে হানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠি ও নলছিটি, লাল সবুজের পতাকা উড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা Latest Update News of Bangladesh

বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:০২ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩
সংবাদ শিরোনাম:
বিসিএসসহ সব সরকারি চাকরির আবেদন ফি কমল, প্রজ্ঞাপন জারি খালেদা জিয়া-তারেক রহমানকে আমন্ত্রণ জানালেন রাষ্ট্রপতি অলরাউন্ডার র‌্যাঙ্কিংয়ে মিরাজের উত্থান, উঠে এলেন দুই-এ স্বেচ্ছায় সরে গেলে সাধারণ ক্ষমা, নইলে ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা’: উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম সাইবার যুদ্ধের মাধ্যমে বিএনপির সংগ্রাম অব্যাহত রাখার আহ্বান ফখরুলের অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ প্রমাণে তৎপর বর্তমান দলগুলো: নাহিদ ইসলাম বরিশালে ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সাংবাদিকতা: সংস্কার ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক মতবিনিময় সাহস থাকলে দেশে আসুন, শেখ হাসিনাকে মাসুদ সাঈদীর চ্যালেঞ্জ জাতিসংঘ মানবাধিকার পরিষদের ভাইস প্রেসিডেন্ট হলো বাংলাদেশ প্রবাসীর বিরুদ্ধে স্ত্রীর অন্তরঙ্গ ছবি ভাইরালের অভিযোগ




এইদিনে হানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠি ও নলছিটি, লাল সবুজের পতাকা উড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা

এইদিনে হানাদার মুক্ত হয় ঝালকাঠি ও নলছিটি, লাল সবুজের পতাকা উড়ায় মুক্তিযোদ্ধারা




ঝালকাঠি প্রতিনিধি ॥ আজ ৮ ডিসম্বর ঝালকাঠি ও নলছিটি হানাদার মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে হানাদারমুক্ত হয়েছিলো ঝালকাঠি ও নলছিটি। ১৯৭১সন এই দিন পাক হানাদার বাহিনী চারদিক থেকে অবরুদ্ধ হয়ে পরে এবং সকাল থেকে শহরে কারফিউ জারি করে পলায়নের জন্য তাদের অস্র গান বুলেট তুলতে থাকে। বেলা সাড়ে ১২টায় ঝালকাঠিতে অবস্থানকারী পাক বাহিনীরা পালিয়ে যায়। অন্যদিকে এই খবর ছরিয়ে পরলে ঝালকাঠির আস পাশ অবস্থানকারী মুক্তিবাহিনী বিকাল থেকে শহরে অনুপ্রবেশ করে। তারা চার দিক থেকে থানা ঘেরাউ করে রাখে। সন্ধ্যায় মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সেলিম শাহনেয়াজ থানায় আসে এবং ততকালীন পুলিশ বাহিনী তাদের কাছে অস্র জমা দিয়ে আত্মসমার্পন করে। রক্তপাতহীনভাবে ঝালকাঠি হানাদার মুক্ত হয়। এ সময় মুক্তির আনন্দে সাধারণ মানুষ রাস্তায় আনন্দ উল্লাস করে। অন্যদিকে একই দিন বিকালে মুক্তিযোদ্ধা সাব সেক্টর কমান্ডার সেকেন্দার আলীর নেতৃত্বে নলছিটি থানা ঘেরাউ করে। প্রাথমিক পর্যায়ে থানায় অবস্থানকারী পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে এবং এক পর্যায়ে মুক্তিযোদ্ধারা থানায় প্রবেশ করলে পুলিশ বাহিনী অস্র সমর্পন করে আত্মসমর্পন করে।

রনাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা নলছিটি উপজেলা সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার কাজী মাহবুবুল আলম লাটু জানান, ১৩ই নভেম্বর ঝালকাঠি জেলার একমাত্র সম্মুখ যুদ্ধ্স্থান তৎকালীন নলছিটি থানাধীন চাচৈর গ্রামে প্রচন্ড বেগে সম্মুখযুদ্ধ শুরু হয়। এ যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধারা পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। মুক্তিযোদ্ধা আউয়াল এ যুদ্ধে শহীদ হলেও প্রাণ হারায় বহু পাকসেনা। তৎকালীন নলছিটি থানা (বর্তমানে ঝালকাঠির সদর উপজেলা)’র নথুল্লাবাদ ইউনিয়নের চাচৈরে অবস্থিত ‘চাচৈর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ ছিল নলছিটির মুক্তিযোদ্ধাদের সাব-ক্যাম্প। ১৯৭১ সালের ১২ই নভেম্বর রাতে যুদ্ধকালনি নলছিটির মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মরহুম মো.সেকান্দার মিয়ার নেতৃত্বে ২৮ জন সশস্ত্র মুক্তিযোদ্ধা খবর পায় চাচৈর সাব-ক্যাম্পে পাক হানাদার বাহিনী আক্রমণ করবে। বিষয়টি ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমরকে জানালে ১৩ই নভেম্বরর সকালে তিনি ১২০ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ঝালকাঠি সদর থানা কমান্ডার সুলতান হোসেন মাস্টার ১৫০জন সাথে চাচৈর সাব-ক্যাম্পের যোগ দেয়। এ সময় ক্যাপ্টেন শাহজাহান ওমর মুক্তিযোদ্ধাদের রণকৌশল জানিয়ে দেন। পাকহানাদার বাহিনী ক্যাম্পের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে অপারেশন চালানোর জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রস্তুতি নেয় মুক্তিযোদ্ধারা। সকাল ১০ টায় এক প্লাটুন পাকহানাদার বাহিনী ঢুকে পড়ে চাচৈর গ্রামে। মুক্তিযোদ্ধারা উত্তর, পূর্ব ও পশ্চিম ৩ দিক থেকে পাকহানাদার বাহিনীর উপর আক্রমণ শুরু করে। দক্ষিণ দিক খোলা পেয়ে সেদিকে পিছু হটতে থাকে পাকহানাদার বাহিনী। ইতোমধ্যে অনেক রাজাকার ও পাক হানাদার সদস্য নিহত হয়। মুক্তিযোদ্ধারা চতুর্দিক থেকে একই এলাকার খান বাড়ি ঘিরে থাকায় মাঝখানের আঙিনায় ঢুকে আশ্রয় নেয় রাজাকার ও হানাদার বাহিনী। ইতোমধ্যে গুলি লেগে তাদের মধ্যে অনেকেই আহত হয়।

তিনি আরও জানান, পূর্বের সেই কৌশলে দক্ষিণ দিকের ছনবনে মুক্তিযোদ্ধারা গোপনে হামলা করার প্রস্তুতি নিয়ে বাকি ৩ দিক থেকে গুলি ও বোমা নিক্ষেপ করে আতঙ্কিত করতে থাকে। এদিকে পাকসেনারাও পাল্টা গুলি ছুঁড়লে শুরু হয় সম্মুখযুদ্ধ। এ সময় কাঠিপাড়ার আ. আউয়াল, খান বাড়ির বাসিন্দা আদু খান, হামেদ আলী, সেকান্দার মাঝি, আলেয়া ও তার ছোট ভাই শহীদ হন। দুপুর গড়িয়ে বিকেল হলে হানাদার বাহিনী দক্ষিণ দিক খোলা দেখে সেখান থেকে পালিয়ে যাবার চেষ্টা করে। সেখানে ওঁৎ পেতে থাকা মুক্তিযোদ্ধারা সুযোগ বুঝে ব্রাশ ফায়ার করলে ঘটনাস্থলেই নিহত হয় ১৮ জন পাকহানাদার। সকাল ১০টা থেকে শুরু হয়ে সন্ধ্যা পর্যন্ত চলে যুদ্ধ। এ সম্মুখযুদ্ধে রাজাকার ও পাকহানাদার কমান্ডারসহ প্রায় ৬০জন নিহত এবং যুক্তিযোদ্ধাসহ ৬ জন শহীদ হন। আলোচিত এই যুদ্ধে লজ্জাজনক পরাজয় ঘটে পাক বাহিনীর। বিজয়ী হন মুক্তিযোদ্ধারা।

পরে ১৫ই নভেম্বর নলছিটির মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মো. সেকান্দার আলীর নেতৃত্বে নলছিটি থানা আক্রমন করা হয়। এতে সেখানে কয়েক হানাদার নিহত হয়। এরপর ৭ই ডিসেম্বর রাতে ঝালকাঠি শহরে র্কাফিউ ঘোষণা করা হয়। এদিন নলছিটির সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মরহুম ওলিউল ইসলামের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধারা নলছিটি থানা আক্রমন করে। রাতে মুক্তিযোদ্ধারা নলছিটি থানা ঘেরাও করে রাখে। এ সময় নলছিটি থানা পুলিশ প্রাথমিক পর্যায় প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও চারিদিক থেকে অবরুদ্ধ অবস্থা দেখে তারা মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে আত্মসমর্পণ করতে বাধ্য হয়। এতে পাকসেনা, রাজাকার, আলবদরদের পরাজয় ঘটে। ৮ই ডিসেম্বর সকালে নলছিটি থানার তৎকালীন পুলিশ কর্মকর্তারা নলছিটির মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার সেকান্দার আলী মিয়ার কাছে অস্ত্রসহ আত্মসমর্পণ করে। সব বাহিনীকে নিরস্ত্র করে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের নলছিটির তালতলা ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ফলে ৮ই ডিসেম্বর হানাদার মুক্ত হয় নলছিটি।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD