সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪১ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক:বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগ বা ছুটিতে যাবার বিষয়টি লিখিতভাবে না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবার ঘোষনা দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। সমঝোতা বৈঠকে নেয়া সিদ্ধান্তে সহোমত প্রকাশের প্রায় দেড়ঘন্টা পরে শনিবার (০৬ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৬ টায় শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাব মিলানায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা।আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধি মহিউদ্দিন আহমেদ সিফাত বলেন, ‘আমরা আগেই বলেছিলোম বৈঠকে আমরা আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের একটা অংশ এসেছি। সভায় যে যেসব বিষয় উঠে আসবে সেগুলো নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করা হবে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের মতামতের উপর ভিত্তি করেই আন্দোলনের বিষয়ে জানানো হবে।কিন্তু তার আগেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনসহ কিছু লোক আন্দোলন স্থগিতের অপপ্রচার করে বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে। আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই উপাচার্যের পদত্যাগ কিংবা ছুটির বিষয়ে লিখিত না পাওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাব।
সে অনুযায়ী পূর্বের ন্যায় রোববার (০৭ এপ্রিল) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে আমরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করবো। পাশাপাশি পরবর্তী কর্মসূচির বিষয়েও দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে জানিয়ে দেয়া হবে।এর আগে রবিবার থেকে ক্লাশ ও পরীক্ষাসহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে বলে জানিয়েছিলেন রেজিষ্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান। টানা একাদশ দিনের আন্দোলনের মাথায় সার্কিট হাউজে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে বৈঠকে বসেন পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ প্রশাসনিক উর্ধতন কর্মকর্তারা। টানা প্রায় সাড়ে ৪ ঘন্টার বৈঠক শেষে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী প্রতিনিধিরা বৈঠকের সিদ্ধান্তের সাথে একমত পোষণ করেন।
বৈঠক শেষে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিষ্ট্রার ড. হাসিনুর রহমান জানান, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক শামীম, বরিশাল সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহসহ প্রশাসনিক উর্ধতন কর্মকর্তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি বৈঠক করেছেন। বৈঠকে নানান বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। সে আলোচনার সিদ্ধান্তের ওপর শিক্ষার্থীরা একমত পোষন করেছেন, তারা আন্দোলন থেকে সরে যাওয়ার কথা বলেছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ সন্ধ্যার মধ্যে হল আনুষ্ঠানিকভাবে খুলে দেয়া হবে এবং ডাইনিং ও চালু করে দেয়া হবে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা একাডেমিক ভবনের কিছু জায়গায় তালা দিয়েছে, সে তালা খুলে দিলে রবিবার থেকে ক্লাশ ও পরীক্ষাসহ বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক কার্যক্রম স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। তিনি বলেন, এ সংক্রান্ত একটি নোটিশ সন্ধ্যার মধ্যে দিয়ে দেয়া হবে।
বৈঠকে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অবঃ) জাহিদ ফারুক শামীম এমপি শিক্ষার্থীধৈল উদ্দেশে বলেন, অনেক চেষ্টার পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দিয়েছেন। আমরা কখনই চাইবো না আমাদের এই ইউনিভার্সিটি নিয়ে কেউ কোন ষড়যন্ত্র করুক। আমরা কখনই চাইবো না ভিসি নতুন নতুন কোন নিয়ম করুক যেটা সিন্ডিকেট কর্তৃক অনুমোদন হবে না। সার্বিক দিক বিবেচনা করে দ্রুত আমরা সব সমস্যার সমাধান করে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়কে আবার সচল করবো।
বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলনের সাথে একাত্বতকা প্রকাশ করে বলেন, শিক্ষার্থীদের এই যৌক্তিক আন্দোলনের সাথে আমি একাত্বত্মা প্রকাশ করছি, আমরা চাই শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন যেন অন্যদিকে না যায়, আমরা সার্বিক দিক বিবেচনা করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করছি।প্রসঙ্গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের আয়োজন সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের না জানানোর কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের রাজাকারের সন্তান বলে গালি দিলে আন্দোলন আরো বেগবান হয় এবং তারই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষনা করে কতৃপক্ষ। তবে এই বন্ধের পরও হল ত্যাগ না করে টানা ১২ দিন আন্দোলন চালিয়ে যায় শিক্ষার্থীরা। এতে করে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ে অচলাবস্থা চলছে।
Leave a Reply