উজিরপুর থানায় রিমান্ডে নারী আসামিকে যৌন নির্যাতন, তদন্তে কমিটি Latest Update News of Bangladesh

শনিবার, ১১ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:৪১ অপরাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




উজিরপুর থানায় রিমান্ডে নারী আসামিকে যৌন নির্যাতন, তদন্তে কমিটি

উজিরপুর থানায় রিমান্ডে নারী আসামিকে যৌন নির্যাতন, তদন্তে কমিটি

উজিরপুর থানায় রিমান্ডে নারী আসামিকে যৌন নির্যাতন, তদন্তে কমিটি




উজিরপুর প্রতিনিধি॥ বরিশালের উজিরপুর থানায় রিমান্ডে নিয়ে হত্যা মামলার এক নারী আসামিকে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন বরিশাল রেঞ্জ পুলিশের উপ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. আখতারুজ্জামান।

 

 

ডিআইজি জানান, রেঞ্জ অফিসের পুলিশ সুপার সোয়াইব হোসেনকে প্রধান করে গঠন করা তদন্ত কমিটির অপর সদস্য হলেন জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ফরহাদ হোসেন। এ কমিটিকে ৩ দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

 

 

এদিকে বরিশাল শেরেবাংলা চিকিৎসা মহাবিদ্যালয় (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালক ডা.সাইফুল ইসলাম রোববার বিকালে বলেন, ওই নারী আসামীর শারীরিক অবস্থার প্রতিবেদন আদালতে পাঠানো হয়েছে। তবে ওই আসামীকে নির্যাতন করা হয়েছে কি-না সে ব্যাপারে কিছু জানাতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন তিনি।

 

 

গত শুক্রবার (২ জুলাই) হত্যা মামলার রিমান্ড শেষে বরিশাল সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয় ওই নারীকে। এসময় রিমান্ডে যৌন নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগ করেন আসামি। পরে আদালতের বিচারক মাহফুজুর রহমান আসামির অভিযোগ আমলে নিয়ে নির্যাতন এবং হেফজতে মৃত্যু ধারা মোতাবেক অনতিবিলম্বে মিতুর দেহ পরীক্ষা করে জখম ও নির্যাতনের চিহ্ন এবং নির্যাতনের সম্ভাব্য সময় উল্লেখপূর্বক প্রতিবেদন ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালককে এ নির্দেশ দেওয়া হয়।

 

 

নারী আসামির ভাই অভিযোগ করেন, উজিরপুর মডেল থানায় দায়ের করা হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ছিল আমার বোন। গ্রেফতার করে তাকে থানায় নিয়ে যাওয়ার পরপরই এক নারী পুলিশ সদস্য লাঠি দিয়ে তাকে মারধর করেন। পরে উপস্থিত সার্কেল এসপিও তাকে লাঠি দিয়ে পেটান। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। গত ৩০ জুন দুই দিনের রিমান্ডের জন্য তাকে ফের থানায় নেওয়া হয়। এদিন তাকে মারধর না করা হয়নি। তবে পরেরদিন সকালে (১ জুলাই) মামলার তদন্ত কর্মকর্তার রুমে আমার বোনকে ডেকে পাঠানো হয়। এ সময় উক্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুল আমার বোনকে যৌন নিপীড়ন করেন। এরপর এক নারী পুলিশ সদস্যকে ডেকে এনে তাকে দিয়ে আমার বোনকে লাঠিপেটা করান। এক পর্যায়ে তদন্ত কর্মকর্তা নিজেও তাকে লাঠি দিয়ে পেটান।

 

 

তিনি আরো বলেন, ১৫ থেকে ২০ মিনিট পেটানোর পর আমার বোন জ্ঞান হারায়। জ্ঞান ফিরে সে নিজেকে হাসপাতালে হাতে স্যালাইন লাগানো অবস্থায় দেখতে পায়। পরবর্তীতে আমার বোনকে ফের থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং ওসির রুমে নিয়ে হাজির করা হয়।

 

 

তখন পুলিশের পক্ষ থেকে তাকে খুনের অপরাধ স্বীকার করার জন্য চাপ দেওয়া হয়। কিন্তু আমার বোন তা স্বীকার করেনি। ওই নারী আসামি বর্তমানে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন।

 

 

এদিকে ওই নারী আসামির পরিবারের পক্ষ থেকে আরো অভিযোগ করা হয়েছে, নির্যাতনের বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে হুমকি দিয়েছেন থানার পুলিশ সদস্যরা। এমনকি এ ঘটনা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করার জন্য স্থানীয় একজন সাবেক এমপিকে দিয়েও চাপ সৃষ্টি করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

 

 

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে উজিরপুর মডেল থানার ওসি জিয়াউল আহসান বলেন, থানায় রিমান্ডের সময় নারী আসামির ওপর শারীরিক বা যৌন নির্যাতন করা হয়নি। রিমান্ডে নিলে সবাই পুলিশের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে বলে পাল্টা অভিযোগ করেন তিনি।

 

 

মিতুর আইনজীবী মজিবর রহমান বলেন, বিভিন্ন স্থানে পুলিশের হেফাজতে আসামি মারা যাচ্ছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমার মক্কেলকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে আরজি করা হয়েছিল। আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে সতর্কতার সঙ্গে আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ মিতুকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের নামে শারীরিক ও যৌন নির্যাতন করেছে। এটা গুরুতর অন্যায়। তিনি বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানান।

 

 

প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ভাই বরুণ চক্রবর্তী থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার আসামি হিসেবে ওই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। থানা পুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন বরিশালের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজিরপুর আমলি আদালত আসামির দুইদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই মিতুকে আদালতে হাজির করে পুলিশ।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD