শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০১:২৮ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলার ভোলাকোট ইউপি চেয়ারম্যান বশির আহম্মদ মানিকের বিরুদ্ধে ১৭ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। দুইটি সড়ক তিন বছর যাবত কাজ না করে বার বার প্রকল্প দেখিয়ে ১৭ লাখ ৮৫ হাজার ৭৪৮ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ পাওয়া গেছে ওই চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান কামাল হোসেন চৌধুরী বাদী হয়ে দুদকে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। স্থানীয় সূত্র ও উপজেলা প্রকল্প অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার দেহলা জাহাঙ্গীর কোম্পানির বাড়ি থেকে হরকার বাড়ি পর্যন্ত সড়ক ২০১৭-১৮ অর্থ বছর ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ৩৫ শ্রমিক বাবত ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়।
২০১৮-১৯ অর্থ বছর একই সড়কের জন্য একই প্রকল্প থেকে আবারো ৩৫ শ্রমিক বাবত ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ও ২০১৯-২০ অর্থ বছরে একই সড়কের নাম পরিবর্তন করে হরকার বাড়ির স্থলে সরকার বাড়ি প্রকল্প দেখিয়ে ভোলাকোট ইউপির ১% (ভূমি কর) প্রকল্প থেকে ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭শ’ ৪৮ টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়। অপরদিকে আথাকরা গোপাল বাড়ি থেকে নাপিত বাড়ি পর্যন্ত সড়কটিতে মাটি দ্বারা উন্নয়নের কাবিটা প্রকল্পের ২০১৭-১৮ অর্থ বছর ১ লাখ ৮০ হাজার, একই অর্থ বছর ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ৫৫ জন শ্রমিক বাবত ৪ লাখ ৪০ হাজার ও ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে একই সড়কের হিজবুল বাড়ি থেকে নাপিত বাড়ি পর্যন্ত নাম পরিবর্তন করে ৪০ দিনের কর্মসূচি প্রকল্প থেকে ৩০ জন শ্রমিক বাবত ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্ধ দেয়া হয়।
স্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে ও সরেজমিনে গিয়ে আত্মসাতের সত্যতা পাওয়া গেছে। দেহলা গ্রামের নূরনবী, জাহাঙ্গীর, খোদেজা বেগম, আথাকরা গ্রামের নিরধ ঘোষ, উমেষ ঘোষ, আলী আহম্মদ জানান, জাহাঙ্গীর কোম্পানির বাড়ির থেকে সরকার বাড়ি, আথাকরা গ্রামের গোপাল বাড়ি থেকে নাপিথ বাড়ি পর্যন্ত সড়কটি অত্যন্ত সরু ও খানাখন্দে ভরা। রিকশাসহ যে কোনো যান চলাচলের অযোগ্য।
এ সড়কটি অনেক পুরনো। বিগত ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে এ সড়কের জন্য সরকারি বরাদ্ধ হয়েছে বলে আমাদের জানা নেই। বরং ইট ভাটার মালিক ও মাটি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাঠের ফসলি জমির মাটি কেটে নেয়ার সময় ব্যক্তি উদ্যোগে ব্যবসায়ীরা সড়কের কয়েকটি স্থানে কিছু মাটি ফেলে খানাখন্দ ভরাট করে দেয়।
এছাড়াও তারা নিজেরা বাড়ির পুকুর লিজ দিয়ে ও গ্রামবাসীর কাছ থেকে টাকা তোলে ৪/৫ বছর আগে কংক্রিট দিয়ে সড়কটি মেরামত করেন। ভোলাকোট ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেন চৌধুরী জানান, পরিষদের সব সদস্য চেয়ারম্যান বশির আহম্মেদের কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর না দিয়ে উল্টো আমাদেরকে হুমকী ধমকী অব্যাহত রেখেছেন। পরে কোনো উপায়ান্তর না দেখে নোয়াখালী দুদক কার্যালয়ের উপ-পরিচালক বরাবর অভিযোগ করেছি।
এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান বশির আহম্মেদের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। রামগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা দিলীপ দে জানান, রামগঞ্জ উপজেলায় গত ডিসেম্বর মাসে যোগদান করেছি। যোগদানের পর থেকে যাচাই বাচাই করে প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছি। কাজ বুঝে বিল দিয়েছি। এর আগে কি হয়েছে আমার জানা নেই।
ইউএনও মুনতাসির জাহান জানান, এ ব্যাপারে কেউ লিখিত অভিযোগ করেননি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে দুদকে অভিযোগের একটি কপি হাতে পেয়েছি।
Leave a Reply