শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:১৭ অপরাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি॥ বরগুনার আমতলীতে মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠার দুই মাস পরে প্রেমিক কর্তৃক সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন প্রেমিকা (১৭) বয়সের এক কিশোরী। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল (১২ ডিসেম্বর) গভীর রাতে উপজেলার হলদিয়া ইউনিয়নের কুলাইরচর গ্রামে প্রেমিকের বাড়ির পাশের একটি ধানক্ষেতের মধ্যে।
আজ সোমবার দুপুরে পুলিশ প্রেমিকসহ অপর সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে। ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে এসেছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন।
ভুক্তভোগী ভিকটিম ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার আঠারোগাছিয়া ইউনিয়নের সোনাখালী গ্রামের ওই ভিকটিম কিশোরীর সাথে গত ২ মাস পূর্বে হলদিয়া ইউনিয়নের কুলাইরচর গ্রামের ইউসুফ মৃধার পুত্র ১ সন্তানের জনক জুয়েল মৃধা (২২) মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর গত ১ মাস পূর্বে উপজেলার গাজীপুর বন্দরে বসে দু’জনের মধ্যে সরাসরি দেখাও হয়। গতকাল সকালে ভিকটিম তার খালাবাড়ী গাজীপুরে বেড়াতে আসে। যা ভিকটিম তার ব্যবহৃত মুঠোফোনে তার প্রেমিক জুয়েল মৃধাকে জানায়। এরপর ওই দিন রাত ৮টার দিকে কেনাকাটার নাম করে খালার বাসা থেকে বের হয়ে গাজীপুর বন্দরে গিয়ে ভিকটিম তার প্রেমিক জুয়েল মৃধার সাথে দেখা করেন। এ সময় কৌশলে প্রেমিক জুয়েল প্রেমিকা ভিকটিমকে জুয়েলের বাড়িতে নেওয়ার জন্য ভিকটিমের ব্যবহৃত মুঠোফোন নিয়ে যায়। এক পর্যায়ে ভিকটিম তার প্রেমিকের বাড়িতে যেতে রাজি হয়। তখন প্রেমিক জুয়েল মৃধার সহযোগী একই গ্রামের বশির মোল্লার পুত্র কাওসার মোল্লাকে (১৮) সাথে নিয়ে ভিকটিমকে জুয়েল মৃধা তার বাড়ি কুলাইচর গ্রামে নিয়ে যায়। ওই দিন রাত অনুমান ১০টার দিকে ভিকটিমকে বাড়ির পরিবর্তে পার্শ্ববর্তী ধানক্ষেতে নিয়ে জুয়েল ও কাওসার একাধিকবার ধর্ষণ করে বলে ভিকটিম জানায়। পরে রাত ১২-১টার দিকে কাওসার ভিকটিমকে গোপনে তাদের বাড়িতে নিয়ে রাখে।
আজ সোমবার খুব ভোরে ভিকটিমকে সহযোগী ধর্ষক কাওসারের রুম থেকে বের করে রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া হয়। এ সময় ভিকটিম কান্না করতে করতে টেপুরা বাজারের দিকে যাওয়ার সময় পথচারী বাবুল শিকদার নামে এক ব্যক্ত তাকে কান্না করতে দেখে কথা বলেন। ভিকটিম তাকে সব খুলে বলেন। শুনে বাবুল শিকদার ভিকটিমকে স্থানীয় ইউপি সদস্য জোসেফ তালুকদারের বাড়িতে নিয়ে যান। পরে তিনি চৌকিদার পাঠিয়ে প্রেমিক জুয়েল ও সহযোগী কাওসারকে ধরে ইউপি সদস্য জোসেফ তালুকদারের বাড়িতে নিয়ে যান। প্রাথমিকভাবে ঘটনার সত্যতা পেয়ে আমতলী থানা পুলিশকে সংবাদ দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে জুয়েল মৃধা ও সহযোগী কাওসারকে আটক করে।
ইউপি সদস্য জোসেফ তালুকদার ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, মুঠোফোনে প্রেমের ফাঁদে ফেলে কিশোরীকে প্রেমিক জুয়েল মৃধা তাদের বাড়িতে নিয়ে আসে। পরে কৌশলে ধানক্ষেতে নিয়ে জুয়েল ও তার সহযোগী কাওসার একাধিকবার ধর্ষণ করেছে বলে ভিকটিম আমাদের জানিয়েছে।
আমতলী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রনজিৎ কুমার সরকার মুঠোফোনে বলেন, এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। ভিকটিমকে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। আগামীকাল তার মেডিক্যাল পরীক্ষার জন্য কোর্টে আবেদন করা হবে।
Leave a Reply