রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৫২ অপরাহ্ন
স্টাফ রিপোর্টার:কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনরোধে ফেব্রুয়ারীর মাঝামাঝি সময় বেলতলা এলাকায় জিওব্যাগ ফেলার কাজ শুরু করে পানি উন্নয়নবোর্ড। এরপর পুরোদমে কাজ চলছে নদী ভাঙন রোধের। তবে সপ্তাহখানেক পূর্বে ওই স্থান থেকে মাত্র ৫শ গজ দূরে নদীর ঝুনাহার ও পোটকার চর নামক স্থানে বালু উত্তোলনের কাজ শুরু করে দুই ড্রেজার ব্যাবসায়ী। জানা গেছে, ৪ টি পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে দিনে কয়েক লাখ ফুট বালি কেটে বিক্রি করছে।
ড্রেজার ব্যাবসায়ীরা দাবি করছেন সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে তারা বালু কাটছেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ন কবির জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।
সাধারণ মানুষের দাবির প্রেক্ষিতে বরিশাল সদর আসনের সংসদ সদস্য পানি সম্পদ প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল (অব) জাহিদ ফারুক শামীম কীর্তনখোলা নদীর ভাঙনরোধে জিওব্যাগ ফেলার কাজের উদ্ভোধন করেন। একইসাথে তিনি জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেন, কীর্তনখোলা নদীতে যেন কোন ড্রেজার দিয়ে বালু কাটা না হয়-বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসনের একটি সূত্র।
তবে ভাঙনরোধে কাজ শুরু হওয়ার কিছুদিন পরেই অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কাজ শুরু করে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। চক্রটি কীর্তনখোলার পোটকার চর, ঝুনাহার ও কদমতলা পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে বালু উত্তোলন চালিয়ে যাচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে বালু উত্তোলনের জন্য ক্ষমতাসীন দলের নেতা ও প্রশাসনকে গোপনে ম্যানেজ করে ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকছে নদীর বালুগ্রাসকারীরা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, পোটকার চর এলাকায় দুইটি ড্রেজার বসিয়ে বালু তুলছে ড্রেজার ব্যাবসায়ী হানিফ। এরমধ্যে একটি ড্রেজার আবার বালু তুলতে তুলতে নদীর চরবাড়িয়া ইউনিয়ের তীরবর্তী কদমতলা নামক স্থানে গিয়ে পৌছেছে। জানা গেছে, প্রতিদিন তিনি লক্ষাধিক ফুট বালি তোলেন এই ব্যবসায়ী। আর ওই বালু নদী দিয়ে জাহাজে করে চরবাড়িয়া ইউনিয়নের কদমতলা হয়ে বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। এ বিষয় চরবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শুরু করে কাউনিয়া থানা, জেলা প্রশাসন সবাই মোটা অংকের অর্থ নেন বলে দাবী ড্রেজার মালিক হানিফের।
নদীর ঝুনাহার পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, দুটি ডেজ্রার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। ড্রেজার মালিক বাচ্চু মিয়া মাঝে মঝে একটি ড্রেজার নিয়ে নদীর মধ্যে গিয়ে বালু তুলে তা তালতলি বন্দরের দিকে নিয়ে যান।
ড্রেজার মালিক বাচ্চু জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমাকে বালু তোলার অনুমতি দিয়েছেন। তাই আমি কাটছি। এখানে অবৈধভাবে বালু কাটার কিছু নেই।ড্রেজার মালিক হানিফ হাওলাদার বলেন তার দুইটি ড্রেজার বালু কাটছে। অনুমতি নিয়েই এ বালু কাটা হচ্ছে।
বরিশাল সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানান, গুচ্ছগ্রামের একটা প্রকল্প আমাদের ছিলো। তবে ওই প্রকল্পে বালু ভরাটের কাজ শেষ হয়ে গেছে। এখন যারা বালু কাটছে তারা অবৈধভাবে কাটছে।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব ও উন্নয়ন) শহিদুল ইসলাম জানান, নদীতে বালু কাটার কোন অনুমতি আমরা দেইনি। যদি কেউ কেটে থাকে তা বেআইনিভাবে।
Leave a Reply