মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:১৯ অপরাহ্ন
তানজিল জামান জয়,কলাপাড়া(পটুয়াখালী) প্রতিনিধি।। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার উপকুলীয় এলাকার ৪০টি জেলে পাড়ায় ২ হাজার ৮০০টি জেলে পরিবারের ২৮ হাজার ৯৪০ জন সদস্য রয়েছে। তাদের পরিবারের এখন হাহাকার বিরাজ করছে। গত ৯ অক্টোবর ৩০অক্টোবর সরকার মা ইলিমশ মাছ ধরার উপর নিষেধাঞ্জা জারি করায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে তাদের। মা ইলিশ রক্ষায় নদ নদী ও সাগর মোহনায় ২২ দিনের নিষেধাঞ্জা চলছে। তাই মা মাছ শিকারে বিরত থাকা জেলেরা এখন বেকার। বৃহসপতিবার ৯ দিন হয়ে গেলেও তাদের জন্য সরকারি সহায়তার খবর নেই। এ অবস্থায় দুর্দিনে রয়েছে উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও-দুটি-পৌরসভা-কয়েক-হাজার-জেলে।
সরেজমিনে ঘুরে স্থানীয় জেলে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে, উপজেলার মৎস্য বন্দর আলীপুর,মহীপুর, লালুয়া, কুয়াকাটা, ধুলাসার, বাবলাতলার ঢোস, খাজুরা,ফাতরা, আন্দারমানিক ও রাবনাবাঁধ মোহনা, লালুয়া, গঙ্গামতি, ধানখালী, বাহের চর বাজার, খালখোড়া বাজার, চরমোন্তজ স্লুইজ বাজার ছোটবাইশদিয়ার কোড়ালিয়ার বাজার, বড়বাইশদিয়াচরগঙ্গার বাজার ওই সব এলায় বেশি ভাগ মানুষ জেলে। এ কাজ করে তারা জীর্বিকা নির্বাহ করেন। কিন্তু নিষেধাঞ্জা চলায় এখন জেলেরা বেকার হয়ে পড়েছে।
এ ছাড়া গত বছর এ সময় তাদের জন্য সরকারি সহায়তা জুটলে ও এ বছর তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।
ধুলাসার ইউনিয়নের গঙ্গামতি গ্রামের মো.আলী হোসেন খাঁন জানান, নিষোঞ্জা চলায় অবসর সময়ে বাড়ীতে বসে জাল সেলাই করছেন। তিনি আরো জানান, অবরোধ নিষেধাঞ্জা থাকায় মাছ ধরতে যাই নাই কিন্তু আমাগোতো অন্য কোনো আয় ইনকাম ও নেই । টানা ২২ দিনের অবরোধ দেখায় গত বার চাইল দাওয়া ওই ছিল্ তাও অবরোধে শেষে দাওয়া ওইছে। যহন চাইল দেয়ওহন আমরা নদীতে থাহি।্ এবার চাইল দাওনের কোন নাম গন্ধ নাই। ওইলে এবার কি আমাগোত্ইো জাইল্লাগো না খাইয়া থাকতে হবে পরিবার পরিজনকে নিয়ে।
স্থানীয় জেলেদের অভিযোগ, ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করে জোরপুর্বক ইলিম মাছ শিকার করে। তারা বাংলাদেশী পতাকা ব্যবহার করে বঙ্গোপসাগরে ইলিশ মাছ শিকার করে। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার মা ইলিশ রক্ষার জন্য অবরোধ দিলে ও ভারতীয় জেলেরা তা না মেনে মা ইলিশ শিকারে এখন ব্যস্ত দিন কাটায়। তারা পশুর , শিবসা, রায়মঙ্গল, মালঞ্চ, কৃষা, ভাঙ্গারা নদী এবং সুন্দর বনের নারিকেলবাড়ীয়া ,মান্দার বাড়ীয়া, আলোরকোল, পেয়ারওয়েবয়া এলাকায ভারতীয় জেলেরা মাছ শিকার করছে। কয়েক দিন আগে জাতীয় পত্রিকায় উঠেছে ভারতীয় জেলেরা বাংলাদেশে প্রবেশ ইলিশ শিকার করছে তা ছাপা হয়েছে। কিন্ত বাংলাদেশের জেলেরা ২২দিনের অবরোধ পালন করছে। নিষেধাজ্ঞা সময়ে সরকারি তেমন সাহায্য না পাওয়ায মানবেতর দিন কাটাচ্ছে জেলে পরিবারগুলো। জাল, নৌকা ও ট্রলারসহ মাছ ধরার যাবতীয় সরজ্ঞাম মেরামত করে কেউ কেউ সময় পার করছেন। কেউ কেউ আবার জাল বুনে অলস সময় পার করছেন।
কলাপাড়া উপজেলা মৎস্য অফিস সুত্রে জানা গেছে,এ বছর নিষেধাঞ্জা চলাকালীন উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভা ১৮০০০ হাজার তিন শত পাঁচ জন নিবদ্ধিত জেলের মধ্যে ১১ হাজার ছয় শত পয়ঁিত্রশ জন জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কর্মসুচী আওতায় ২০ কেজি করে ২৩২ টন চাল বরাদ্ধ করা হয়েছ্।ে কিন্তু খাদ্য গোদামে চাল না আসার কারনে জেলেকে বিশেষ ভিজিএফ কর্মসুচী আওতায় ২০ কেজি করে চাল দেয়া হবে কিন্তু চাল না আসা জেলেদেরকে চাল দেয়া সম্ভব হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সুত্রে আরো জানাগেছে, চলতি বছরে উপজেলার ১২টি ইউনিয়নে দুটি পৌরসভা নিবদ্ধিত জেলের সংখ্যা ১৮০০০ হাজার তিন শত পাঁচ জন। ইলিশ শিকারে বিরত থাকা জেলেদের জন্য গত বছরের মতো এবারো ও সহায়তা দেয়ার কথা ।
কলাপাড়া মৎস্য বন্দর আলীপুর মৎস্য জীবি সমিতির সভাপতি আনসার উদ্দিন মোল্লা জানান, নিষেধাঞ্জা চলায় এখন উপজেলার হাজার হাজার জেলে বেকার রয়েছে। এ সময়ই সহায়তা দেয়া উচিত। তা হলে জেলেরা সুফল ভোগ করতো এবং মা ইলিশ রক্ষা পেত। কিন্তু এখনো সহায়তার কোন খোঁজ কবর নেই। এবার সহায়তা দেয়া হবে কিনা তাও নিশ্চিত না ।
এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মনোজ কুমার সাহা জানান, ইতো মধ্যে মা ইলিশ শিকারে বিরত থাকা জেলেদের সহায়তা দেয়ার সম্ভবনা রয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জেলা চাল না আসার কারনে বিশেষ ভিজিএফ কর্মসুচীর আওতায় ২০ কেজি করে চাল সহায়তা দেয়া সম্ভব হয়নি। কিছু দিনের মধ্যে চাল আসলেই জেলেদের সহায়তা করা হবে। আমার এলাকায় কোনো জেলে সাগরে ইলিশ মাছ ধরতে না পারে এজন্য কোষ্টগার্ড এবং এইচ,ডিবি,বলেশ্বর টহল রয়েছে।
Leave a Reply