শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩৫ অপরাহ্ন
বাকেরগঞ্জ প্রতিনিধি:
বাকেরগঞ্জে সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত না করে অফিসে বসেই ধর্ষণ চেষ্টা মামলার প্রতিবেদন দিলেন উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জাহানারা পারভীন শিল্পি। এ ঘটনায় মামলার অভিযুক্তরা ক্ষোভ প্রকাশ করে পুনরায় তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার দাবি জানিয়েছেন। অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, উপজেলার পাদ্রীশিবপুর ইউনিয়নের আড়াইবেকী গ্রামের মরহুম সোহরাব মৃধার সাথে জমাজমি নিয়ে একই গ্রামের নাজমুল হুদা লালু মৃধার সাথে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিলো। এনিয়ে তাদের মধ্যে মামলাও চলমান। দেং মোঃ নং-২০২/২০১৭। সোহরাব মৃধার মৃত্যুর ওই জমি তার দুই পুত্র মাসুদ মৃধা ও হিরন মৃধা ভোগদখল করছেন। তাদের পিতার মৃত্যুর পর এলাকার ভুমিদস্যুখ্যাত নাজমুল হুদা লালু মৃধা ওই জমির জবর-দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেন।
চলতি বছরের ১০ মার্চ হিরন মৃধার শ্বশুড় মানিক হাওলাদার মারা যায়। তিনি পরদিন ১১মার্চ সকাল ৯টায় রঙ্গশ্রী ইউনিয়নের কাঁঠালিয়া গ্রামে তার শ্বশুড়ের জানাজার নামাজে অংশগ্রহন করেন। নাজমুল হুদা লালুর কন্যা ফারজানা আক্তার লিপির পুত্র নাছিম এলাকায় বখাটে হিসেবে পরিচিত। ১১মার্চ সকাল ৮টায় ফারজানা আক্তার লিপির পুত্র নাছিম এলাকার আবদুল্লাহ ও তার ছেলেকে ছুরি মেরে রক্তাক্ত আহত করে। ঘটনার সময় তিনি তার শ্বশুড় বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। অথচ সেই মারামারির ঘটনাকে পুঁজি করে ভুমিদস্যু নাজমুল হুদা লালু তার কণ্যা ফারজানা আক্তার লিপিকে বাদি করে তার বড় ভাই মাসুদ মৃধা, তার পুত্র পাদ্রীশিবপুর সেন্ট আল ফেড্রস স্কুলের দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র মারুফ মৃধাকে আসামী করে তাদের দুই ভাই ও ভাইপোর বিরুদ্ধে ধর্ষনের চেষ্টার অভিযোগে বরিশাল শিশু ও নারী নির্যাতন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার বিজ্ঞ বিচারক ঘটনা সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাকেরগঞ্জ উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জাহানারা পারভীন শিল্পিকে নির্দেশ প্রদান করেন। তিনি সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত না করে মামলার বাদির কাছ থেকে মোটা অংকের উৎকোচ গ্রহন করে তার পক্ষে একটি মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা জানান, মামলার বাদি ফারজানা আক্তার লিপির এলাকায় খারাপ রেকর্ড রয়েছে।
বিয়ের পর থেকে তিনি তার বাবার বাড়িতেই থাকছেন। তাদেও গোটা পরিবার এলাকায় মামলাবাজ হিসেবে পরিচিত। ব্যবসায়ী হিরন মৃধা সাংবাদিকদের নিকট ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এলাকার ভুমিদস্যু নাজমুল হুদা লালু তার নিজ কণ্যাকে দিয়ে ধর্ষণ চেষ্টার অজুহাত তুলে একটি মামলা দায়ের করলো। অভিযোগটি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত করলেই এর সত্যতা প্রকাশ পেতে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বাদির নিকটাতœীয় উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জাহানারা পারভীন শিল্পি সরেজমিনে ঘটনা তদন্ত না করে তার অফিসে বসেই কয়েকজনের সাক্ষ্য নিয়ে আদালতে একটি মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করেছেন।
হিরন মৃধা কান্না জড়িত কন্ঠে বলেন, ভুমিদস্যু নাজমুল হুদা লালু মৃধা ও তার মেয়ে মামলার বাদি ফারজানা আক্তার লিপি তাকেসহ তার বড় ভাই মাসুদ মৃধাকে খুন-জখমের হুমকি দিচ্ছে। এতে তিনি ও তার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। হয়রানীমূলক এ মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে তিনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সহযোগীতা কামনা করছেন। উপজেলা মহিলা ও শিশু বিষয়ক কর্মকর্তা জাহানারা পারভীন শিল্পি বলেন, তিনি যা ভালো মনে করেছেন তাই প্রতিবেদন দিয়েছেন। প্রয়োজনে মামলার বিবাদিরা আদালতে নারাজি দিক। সরেজমিনে তদন্ত করে প্রতিবেদন দিতে হবে এমন কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
Leave a Reply