মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪৭ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ স্বামী ব্যাপক মারধর করেছে, তা মেয়ে নিজেই সকালে ফোনে জানান মাকে। আর সন্ধ্যার পর শাশুড়ি ফোনে জানান, তাদের মেয়ে হার্টফেল করেছে। এসে দেখে যাওয়ার জন্য বলেন। এ খবরে স্বামীর বাড়িতে মা গিয়ে দেখেন মেয়ের ঘরে লাশ ফাঁসিতে ঝুলছে।
গতকাল রবিবার সন্ধ্যার পর এ ধরনের রহস্যজনক ঘটনা ঘটেছে ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ডৌহাখলা ইউনিয়নের নন্দীগ্রামে। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ঘটনার পর থেকে দেবর, শ্বশুর, শাশুড়ি বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই গ্রামের মাসুদ মিয়ার স্ত্রী মুর্শিদা বেগম (৩২)। গত প্রায় এক যুগের দাম্পত্য জীবনে তাদের দুটি ছেলেসন্তান রয়েছে। সংসারজীবনে বিভিন্ন সময় যৌতুকের দাবিতে স্বামী মাসুদ মিয়া স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় অত্যাচার-নির্যাতন করতেন। এর মধ্যে স্ত্রী বেশ কয়েকবার কয়েক দফায় যৌতুকের টাকাও এনে দেন।
প্রায় তিন বছর আগে মাসুদের বড় ভাই হঠাৎ মারা যান। আর এই সংসারের সব দায়িত্ব পড়ে মাসুদের ওপর। এ অবস্থায় বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে মাসুদের গভীর সখ্য গড়ে ওঠে। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকে। গত শনিবার দুপুরের পর স্বামীকে খুঁজে না পেয়ে স্ত্রী মুর্শিদা দেখতে পান, পাশের একটি ঘরে বড় ভাইয়ের স্ত্রীর সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কে লিপ্ত তার স্বামী। এটা দেখার পর স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করলে মুর্শিদাকে অপপ্রচারের অপবাদ দিয়ে ব্যাপক মারধর করে বাবার বাড়ি চলে যেতে বলেন।
মুর্শিদার মা মালেকা বেগম জানান, স্বামীর মারধরের কথা মেয়ে মুর্শিদা তাকে ফোনে জানিয়ে বাড়িতে নিয়ে যেতে বলেন। ঘটনাটি জেনেও তিনি মন খারাপ ছাড়া আর কিছুই করেননি। এর মধ্যে গত রবিবার সন্ধ্যার পর মেয়ের শাশুড়ি সখিনা বেগম ফোন করে তাকে জানান, মুর্শিদা হঠাৎ হার্টফেল করেছে। দ্রুত এসে দেখে যাওয়ার জন্য বলেন। তাৎক্ষণিক তিনি মেয়ের স্বামীর বাড়িতে গিয়ে দেখেন, মেয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলে রয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে আত্মহত্যা করলে আগেই করত। মেয়েকে মেরে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।’ তিনি এর সঠিক বিচার চান।
গৌরীপুর থানার ওসি খান আব্দুল হালিম সিদ্দিকী বলেন, ‘এটা তো অপমৃত্যু, ফাঁসি। তার পরও লাশ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।’
Leave a Reply