বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:০৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ দীর্ঘ আট মাস পর বরিশাল নগরীতে দিন-দুপুরে জুয়েলারি দোকানে চুরির রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে বরিশাল, ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন এলাকায় টানা ৯ দিন অভিযান চালিয়ে চুরির সাথে জড়িত ৯ জনকে গ্রেপ্তার এবং চুরি যাওয়া স্বর্ণালঙ্কারের আশিংক উদ্ধার করা হয়েছে।
অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং অপরাধীদের গ্রেপ্তারে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান।
রোববার বেলা ১২টায় পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানানো হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- সুমন, অলি, জামাল, আলাউদ্দিন, হাসান, নয়ন ও জসিম ওরফে জনি। এছাড়া চোরাই স্বর্ণালঙ্কার কেনার অভিযোগে চট্টগ্রামের বউ বাজার এলাকার স্বর্ণা জুয়েলার্সের মালিক পবন রায় ও শিফা জুয়েলার্সের মালিক আলম হোসেনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
কোতোয়ালী মডেল থানার সহকারি পুলিশ কমিশনার মো. রাসেল জানান, গত ২০ মার্চ দুপুর আড়াইটার দিকে বরিশাল নগরীর ব্যস্ততম কাটপট্টি এলাকায় আশরাফ এন্ড সন্স জুয়েলারি বন্ধ করে দুপুরের খাবার খেতে বাসায় যান মালিক বাচ্চু মিয়া। তাকে অনুসরণ করে সংঘবদ্ধ চক্র ব্যস্ততম রাস্তার পাশে লুঙ্গি এবং বিছানার চাদর মেলে সাটার ও কলাপসিবল গেটের তালা কেটে ভেতরে ঢুকে মাত্র ৭ মিনিটের মধ্যে ১২৬ ভরি স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে যায়।
ওইদিনই জুয়েলারি মালিক অজ্ঞাতদের আসামি করে কোতোয়ালী মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনাস্থল গিয়ে ওই জুয়েলারির সামনে এবং ভেতরে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে অপরাধীদের চিহ্নিত করে।তবে এদের মধ্যে একজন ছাড়া অন্যান্যরা বরিশালের বাইরের বাসিন্দা হওয়ায় তাদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারে তেমন অগ্রগতি হচ্ছিলো না। এ অবস্থায় বরিশালের সুমন নামে এক সন্দেহভাজন যুবককে আটক করলে জিজ্ঞাসাবাদে পুরো ঘটনার বের হয়ে আসে।
তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী ঢাকা, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম এলাকায় টানা ৯ দিন অভিযান চালিয়ে চক্রের আরও ৮ সদস্য এবং চোরাই মাল কেনার অপরাধে চট্টগ্রামের এক জুয়েলারি মালিককে আটক করা হয়। তাদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া ১১টি আংটি এবং একটি নেকলেস উদ্ধার করে পুলিশ।
জুয়েলারি মালিক বাচ্চু মিয়া চুরি যাওয়া পুরো স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারসহ চক্রের অন্যান্য সদস্যেদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
পাশের জুয়েলারি মালিক অমল কর্মকার বলেন, চোর চক্র এতটাই দুর্ধর্ষ যে ওইদিন চুরির সময় মাত্র দেড় হাত দূরে থেকেও চুরির ঘটনা ধরতে পারিনি। তার দাবি, এই চক্রকে সমূলে গ্রেপ্তার করতে না পাড়লে নিশ্চিন্তে ব্যবসা করতে পারবেন না তারা।
বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার শাহাবুদ্দিন খান দেরিতে হলেও জুয়েলারি চুরির রহস্য উদঘাটন এবং অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করায় তদন্ত কর্মকর্তাদের বাহবা দেন। এ ক্ষেত্রে সিটি ক্যামেরার ফুটেজ গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হিসেবে কাজ করেছে বলে দাবি করেন তিনি। এ জন্য নগরী নিরাপদ রাখতে বেশি বেশি সিসি ক্যামেরা স্থাপনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
Leave a Reply