শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৫, ০৫:২২ অপরাহ্ন
শামীম আহমেদ॥ বরিশালে ইসলামি ব্যাংক নার্সিং ইনস্টিটিউটের এক ছাত্রী কলেজের ফি দিতে না পারায় তাকে বিছানায় রাত কাটানোর প্রস্তাব দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটির এডমিন নুর উদ্দিন খান।
এমনকি এ কু-প্রস্তাবে রাজি না হয়ে প্রতিবাদ করায় কলেজের অফিস রুমে একাকি আটকে মানষিক নির্যাতন চালিয়ে যৌন কাজে রাজি করানোর চেষ্টা চালানো হয়।
ভুক্তভোগি ওই কলেজ ছাত্রী এসময় দানব নুর উদ্দিনের হাত বাঁচতে দ্রুত ফেসবুক লাইভে ঢুকে বন্ধুদের কাছে বাচাঁর আর্তি জানায়। অবস্থাদৃষ্টে বেকায়দায় পড়তে হবে বুঝে নুর উদ্দিন সটকে পড়ে।
পরক্ষনে ঘটনাটি জানাজানি হলে ইসলামি ব্যাংক নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা নারী লোভী নুর উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিচার চেয়ে বিক্ষোভ করে।
পাশাপাশি ওই ছাত্রীও বিচার চেয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করলেও তা গ্রহন না করে কলেজ অধ্যক্ষ ও ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও নাসির্ং ইনস্টিটিউটের একাডেমিক বোর্ডের পরিচালক ড.ইসতিয়াক এডমিন রক্ষা করতে নানা কুট কৌশল হাতে নিয়েছে। ভূক্তভোগি ছাত্রীকে পাগলী বলে আখ্যায়িত করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
একইসাথে চাপ প্রয়োগ করে ওই ছাত্রীর কাছ থেকে লিখিত রাখতে বা উল্টো ঘায়েল করতে কয়েক দফা চেষ্টা চালানো হচ্ছিল।
মিডিয়ার সাংবাদিকদের কাছে এ তথ্য ফাঁস হলে ভূক্তভোগি ছাত্রীকে হয়রানীর অপচেষ্টা থেকে পিছু হটে প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি ড.ইসতিয়াক ও সেই জামাত শিবিরের আদর্শের নার্সিং ইনইষ্টিটিউটের নারী লোভি অপরাধী নুর উদ্দিন খান।
তবে ভুক্তভোগি মেয়েটি প্রতিবাদি হওয়ায় এবং ঘটনাটি সাংবাদিকদের নজরদারিতে থাকায় উল্টো ফাঁসানো সম্ভবপর করতে পারেনি। সর্বশেষ আজ লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে বিচার করা হবে বলে আস্বস্থ করে ছাত্রী ও তার মায়ের কাছে সময় চায় পরিচালনা পর্ষদ। ভূক্তভোগি ছাত্রীর দেয়া বক্তব্য ও ফেসবুক মেসেঞ্জারের তথ্য বিশ্লেষনে দেখা যায়, বরিশাল ইসলামি নার্সিং ইনষ্টিটিউটে পড়তে আশা পিরোজপুর মধ্যবিত্ত পরিবারের ছাত্রীর করোনার মধ্যে কলেজের ফি বকেয়া পড়ে। সেখান থেকে বিশ হাজার টাকা পরিশোধ করা হয়।
অল্পকিছু টাকা কলেজ কর্তৃপক্ষ পাওনা থাকার সূত্র ধরে ইসলামি নার্সিং ইনষ্টিটিউটের প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুর উদ্দিন খান নিজ ইচ্ছায় ওই ছাত্রীর ফেসবু মেসেঞ্জারে টাকার জন্য চাপ দিতে থাকে। ছাত্রীটি তার পরিবারের দুরাবস্থার কথা তুলে ধরলে তা মানতে নারাজ।
এক পর্যায়ে মেসেঞ্জারেই ওই ছাত্রীকে প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরউদ্দিন খান তার সাথে একান্তে বিছানায় রাত কাটানোর প্রস্তাব দেন। কর্তৃপক্ষের এমন অনৈতিক আচরনে ওই ছাত্রী মেসেঞ্জারেই প্রতিবাদ করেন। সেজন্য মেয়েটিকে হুমকি দেওয়া হয় কলেজ পরীক্ষায় ফেল করানোর ।
এ ঘটনার বেশ কিছুদিন পর হোষ্টেলে এসে নিজের লাগেজ নেওয়ার সময় নুর উদ্দিন তার কক্ষে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানীর চেষ্টা চালায়। ছাত্রীটি নিজের ইজ্জত বাঁচাতে দ্রুত ফেসবুক লাইভে এসে বন্ধুদের কাছে সাহায্য চায়। বিষয়টি টের পেয়ে প্রশাসনিক কর্মকর্তা অপরাধী নুরউদ্দিন মোবাইল কেড়ে নেয় এবং কুকুরের মতো খিস্থিখেউর করে ছাত্রীটির সাথে।
এঘটনার ভিডিও শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে বেশ কয়েকদিন বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। চাপের মুখে কলেজ অধ্যক্ষ আলিমা বেগম গেল ১৪ ও ১৫ ডিসেম্বর জরুরী সভা করেন। তবে ইসলামি নার্সিং ইনষ্টিটিউটের ব্যবস্থাপনায় থাকা জামায়ত শিবিরের একটি অংশ নুর উদ্দিন খানের পক্ষে অংশ নিলে বিচার করা সম্ভব হয়নি। এমনকি ছাত্রীর লিখিত অভিযোগটি ছিড়ে ফেলা হয়।
পড়ে ভুক্তভোগি ওই ছাত্রীর মাথায় সমস্যা আছে বা এবনরমাল বলে মিথ্যা ধুয়া ছড়ানো হয়। কলেজের ভিতরের এ খবর মিডিয়ার কানে পৌছালে নড়েচড়ে বসে কর্তৃপক্ষ। মেয়েটির প্রতিবাদের ভাষ্য অনড় থাকায় তোপের মুখে পড়ে গেল বৃহস্পতিবার ২৪ ডিসেম্বর ফের নতুন করে ছাত্রীর কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ গ্রহন করে এবং শনিবার ২৬ ডিসেম্বর সভা ডেকে ভূক্তভোগি ছাত্রী ও তার মাকে বিচার করার কথা বলে সময় চান ইসলামি ব্যাংক হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ও নার্সিং ইনষ্টিটিউট কলেজর পরিচালনা বোর্ডের সভাপতি ড.ইসতিয়াক।
তিনি মুঠোফোনে এ প্রতিবেদককে জানান,ঘটনার প্রথমদিকে লিখিত অভিযোগটি রাখা হয়নি এটা ভুল করেছে। আমরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার করবো। তবে মেয়েটির পাগলামি করার দোষ আছে বলে মিথ্যা কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করেন সাংবাদিকদের কাছে। এবিষয়ে নার্সিং ইনষ্টিটিউটের অধ্যক্ষ আকলিমা বেগম বলেন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুর উদ্দিন প্রায় কলেজে বসে ওই মেয়েটিকে বিরক্ত করতো।
আমি অনেকবার বারন তাকে করেছি,শুনেনি। নতুন ভাবে লিখিত ও মৌখিক অভিযোগ গ্রহন করে সময় নেওয়া হয়েছে মেয়েটির পরিবারের কাছ থেকে। খুব শীগ্রই এর একটি সমাধান করা হবে। প্রথমদিকে নিজেরা নিজেরা চেষ্টা করেছিলাম সমাধান করার জন্য।
নুরউদ্দিনের খামখেলির কারনে আর সম্ভব হয়নি। কলেজের হিসাব রক্ষক আসমা জাহান মুন্নি হিসাব জানান, এধরনের ঘটনা ফের যাতে আমাদের কলেজে যাতে না ঘটে সেজন্য কঠোর বিচার হওয়া উচিৎ নুর উদ্দিনের।
এ ঘটনার প্রশ্নে অভিযুক্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুর উদ্দিন খান সাক্ষাতে ও টেলিফোনে জানান,তিনি তার কলেজের ওই ছাত্রীকে মেসেঞ্জারে কিভাবে লিখলেন তা বুঝে উঠতে পারেন নি। ভূক্তভোগি মেয়েটি সংবাদকর্মিদের কাছে বলেন,আমার সাথে কলেজে যা হয়েছে তা অমানবিক। মনে পড়লে পড়া লেখা আর করতে ইচ্ছে করছে না। তবে মিডিয়ার কাছে দাবি করে বলেন ভাই আপনারা দু:চরিত্র নুর উদ্দিন’র এমন বিচারের ব্যবস্থা করবেন যাতে আর কোন মেয়ের সাথে এধরনের অ-নৈতিক কাজ করতে না পারে।
Leave a Reply