বরিশালে সংসারের অভাব ঘোচাতে বন্ধুর গলা কেটে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলা দেয়া হয় Latest Update News of Bangladesh

বুধবার, ২২ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:০২ পূর্বাহ্ন

বিজ্ঞপ্তি :
Latest Update Bangla News 24/7 আপনার চারপাশে ঘটে যাওয়া নানা খবর, খবরের পিছনের খবর সরাসরি ভয়েস অব বরিশালকে জানাতে ই-মেইল করুন- inbox.voiceofbarishal@gmail.com অথবা hmhalelbsl@gmail.com আপনার পাঠানো তথ্যের বস্তুনিষ্ঠতা যাচাই করে আমরা তা প্রকাশ করব।*** প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে!! বরিশাল বিভাগের সমস্ত জেলা,উপজেলা,বরিশাল মহানগরীর ৩০টি ওয়ার্ড ও ক্যাম্পাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! ফোন: ০১৭৬৩৬৫৩২৮৩




বরিশালে সংসারের অভাব ঘোচাতে বন্ধুর গলা কেটে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলা দেয়া হয়

বরিশালে সংসারের অভাব ঘোচাতে বন্ধুর গলা কেটে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলা দেয়া হয়

বরিশালে সংসারের অভাব ঘোচাতে বন্ধুর গলা কেটে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলা দেয়া হয়




ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ সংসারের অভাব ঘোচাতে অটোচালক বন্ধুর গলা কেটে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে বন্ধুর অটোরিকশা দিয়ে আয় করা শুরু করলেও ঘাতক বন্ধু ১২দিনের মাথায় কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়। শেষ রক্ষা হলো না ঘাতক বন্ধুর।

 

 

বন্ধুকে হত্যা করার ঘটনাটি সংঘটিত হয় স্ত্রী ও শাশুড়ির সামনেই। তারপর ঠাণ্ডা মাথায় শ্বশুরবাড়িতে ফিরে গিয়ে বন্ধুর অটো চালিয়ে স্বাভাবিকভাবেই জীবন যাপন করছিলেন। শেষ পর্যন্ত নিখোঁজ বন্ধুর অটোরিকশাটি শনাক্ত হওয়ায় ফাঁস হয়ে যায় নৃশংস সেই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।

 

 

নিহতের স্বজনদের চেষ্টায় অটোরিকশা গাড়িটি উদ্ধার ও সন্দেহভাজন দু’জনকে আটকের পর রিমান্ডে নেয়া হলে বেরিয়ে আসতে শুরু করে এ চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ডের কারণ।

 

 

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আল আমিন জানান, বিসিসি নগরের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী এলাকার ধান গবেষণা সড়কের কুদ্দুস মিয়ার বাসার ভাড়াটিয়া সুমি বেগমের থানায় দায়ের করা একটি জিডির সূত্র ধরে তদন্ত কাজ শুরু করেন তিনি। এর পরে অটোরিকশার মালিক রিফাতের দায়ের করা মামলায় যার কাছ থেকে অটোটি উদ্ধার করা হয়েছে তাকে ও তার স্ত্রীকে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন করলে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ডে গ্রেফতাররা স্বীকার করেন তারা কিভাবে ঠাণ্ডা মাথায় হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছেন।

 

 

জানা যায়, বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী এলাকার ধান গবেষণা সড়কের কুদ্দুস মিয়ার বাসার ভাড়াটিয়া সুমি বেগমের সঙ্গেই থাকতেন তার বোনের ছেলে রুমান। রুমানের মা-বাবা বেঁচে না থাকায় ছোটবেলা থেকেই সুমি বেগমের সঙ্গে বড় হয়েছেন। পেশায় রুমান একজন অটোচালক।

 

 

সুমি বলেন, অন্যান্য দিনের মতো গত ২৯ জুন রাত ১০টার দিকে মোবাইলে রুমান জানায় সে একটি বড় ট্রিপ পেয়েছে। বাকেরগঞ্জ যাবে। আমি নিষেধ করেছিলাম। রাতে এত দূর না যাওয়ার জন্য। কিন্তু রুমান জানায়, সমস্যা নেই। তার বন্ধু আসলামের সঙ্গে যাবে। আসলাম তার স্ত্রী ও শাশুড়িকে নিয়ে কাংকি যাবে। ভাড়াও দিবে বেশি।

 

 

জানা যায়, আসলামও বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী এলাকার ধান গবেষণা সড়কে বসবাস করে। ২৯ জুন রাত ১০টায় সাগরদী থেকে বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৪ নম্বর দুধল ইউপির ২ নম্বর ওয়ার্ড চাটরার উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়।

 

 

ওইরাত ৩টার দিকে সুমি আক্তারের সঙ্গে একবার মোবাইল ফোনে কথাও হয় রুমানের। কিন্তু তারপর তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। আর ফিরেও আসেনি রুমান। বোনের ছেলেকে খুঁজে না পাওয়ায় ৩০ জুন বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় একটি জিডি করেন সুমি বেগম। এর কয়েকদিন পরে রুমানের ভাড়ায় চালানো অটোটির সন্ধান পায় স্বজনেরা।

 

 

সুমি আরো বলেন, অটো নিয়ে বাকেরগঞ্জের দুধল ইউপির আটরা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস শুরু করে আসলাম। সেখানে অটো চালিয়ে রোজগারও শুরু করে। এর সন্ধান পেয়ে কোতোয়ালি থানার পুলিশ সঙ্গে নিয়ে ৯ জুলাই বিকেলে অটোটি উদ্ধার করে নিখোঁজ রুমানের স্বজনেরা। আটক করা হয় আসলাম ও তার স্ত্রী খাদিজাকে। ওইদিনই অটোর মালিক রিফাতের করা মামলায় আসলাম ও খাদিজাকে গ্রেফতার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

 

 

দুই দিনের রিমান্ডে আসলাম স্বীকার করে, অভাবের তাড়নায় তিন মাস আগেই পরিকল্পনা করে প্রয়োজনে মার্ডার করে হলেও দরিদ্রতা ঘোচাতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী আসলাম রুমানকে নিয়ে বাকেরগঞ্জ শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়। রাত আনুমানিক ৩টার পরে দুধল ইউপির চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ খান উজ্জ্বলের বাড়ির পাশে অটোটি থামাতে বলে। অটোতে তার স্ত্রী খাদিজা বেগম, শাশুড়ি সাহিদা বেগম ছিলেন। গাড়িটি রুমান থামালে ‘পান খাওয়ার’ জন্য কাছের রাঙ্গামাটি নদীর পাড়ে নিয়ে যান।

 

 

সেখানে নিয়ে পরিকল্পনা অনুযায়ী রুমানকে ল্যাং মেরে ফেলে দিয়ে কোমরে থাকা ধারালো চাকু দিয়ে চেপে ধরে একাই গলা কেটে হত্যা করে আসলাম। তারপর লাশটি নদীতে ফেলে দেয়। কিন্তু লাশটি ভেসে ওঠায় আসলাম নদীতে নেমে পেট কেটে লাশটি ভাসিয়ে দেয় নদীতে। ফজরের আজানের সময় অটোর কাছে ফিরে আসে আসলাম। এসে জানায় তিনি রুমানকে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে এসেছে। তারপর অটোটি নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে চলে যায় সে।

 

 

এ ঘটনায় পুলিশ বলছে, একা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে পারে না। এতে অন্যরাও সহায়তা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি জানতে সব তথ্য-উপাত্ত খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্তকারী কর্মকর্তা আরো বলে গ্রেফতারের পর পুলিশকে গল্প শুনিয়েছিল অভিযুক্ত আসলাম দম্পতি। আসলাম দাবি করেছিল, ১ লাখ ২৫ হাজার টাকায় রুমানের কাছ থেকে অটোটি ক্রয় করে রাখেন সে। দপদপিয়া জিরো পয়েন্টে বসে ওই রাতে টাকা দিয়ে দেন তিনি।

 

 

মূলত, সেকেন্ড হ্যান্ড অটো ক্রয় করতে এত টাকা দরকার হয় না। সাধারণত ৫০-৬০ হাজার টাকায় সেকেন্ড হ্যান্ড অটো পাওয়া যায়। কিন্তু সেকেন্ড হ্যান্ড অটো চড়া মূল্য দিয়ে কিনবে কেন আসলাম এমন সন্দেহ থেকেই ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করে পুলিশ। এর পর একে একে ফাঁস হতে থাকে রহস্য।

 

 

বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ ঘটনায় নতুন করে হত্যা মামলা করা হবে। তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আল আমিন জানান, রুমানের লাশ এখনও উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। লাশ উদ্ধারে অভিযান চলছে।

সোশ্যাল মিডিয়াতে শেয়ার করুন



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *










Facebook

© ভয়েস অব বরিশাল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Developed BY: AMS IT BD