সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ১১:৩০ পূর্বাহ্ন
মুলাদী প্রতিনিধি॥ বরিশাল মুলাদী উপজেলায় শিক্ষকের মারধরে আহত হয়ে আইরিন আক্তার (১৩) নামে এক শিক্ষার্থী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার কাজিরচর ইউনিয়নের ডিক্রীরচর ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায়।
বুধবার (৩০ মার্চ) বিকেলে আইরিন অসুস্থ হয়ে পড়লে পরিবারের সদস্যরা তাকে মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দিয়েছেন।
আইরিন কাজিরচর ইউনিয়নের ডিক্রীরচর এলাকার আমির হোসেন সরদারের মেয়ে ও ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী।
আইরিনের বাবা আমির হোসেন সরদার বলেন, বুধবার সকালে আইরিন মাদরাসায় যায়। বিকেলে বাড়িতে এসে অসুস্থ হয়ে পড়ে। কপালে হাত দিয়ে দেখা যায় জ্বর। শরীরের বিভিন্ন স্থানে বেতের আঘাতের দাগ। কে পিটিয়েছে জানতে চাইলে আইরিন জানায়, দুপুরের দিকে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক না থাকায় আইরিন তার সহপাঠী শাওনের ব্যাগ থেকে একটি গাইড বই বের করে। ওই সময় শাওন দুষ্টুমির ছলে গাইড নেওয়ার কথা বলে। বিষয়টি পাশের কক্ষ থেকে শিক্ষক আব্দুস ছাত্তার শুনতে পেয়ে বেত নিয়ে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে আইরিনকে পিটিয়ে আহত করেন।
তিনি আরও বলেন, বিকেলে আইরিন জ্বর ও শরীর ব্যথার যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছিল। এরপর তাকে মুলাদী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন।
আইরিনের সহপাঠী শাওন জানায়, শিক্ষক না থাকায় আইরিন ব্যাগ থেকে গাইড বই বের করছিল। ওই সময় আমি দুষ্টুমি করে বলেছিলাম, হুজুর আইরিন আমার বই নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কাউকে বিচার দিইনি। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই আব্দুস ছাত্তার হুজুর বেত নিয়ে আমাদের ক্লাসে ঢুকে আইরিনকে ৭/৮ টি আঘাত করেন। আইরিন এজন্য ক্ষমা চাইলেও হুজুর বেত দিয়ে আঘাত করতেই থাকেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মাদরাসাশিক্ষক মাওলানা আব্দুস ছাত্তার বলেন, ক্লাসে চিৎকার-চেঁচামেচি করছিল আইরিন। তার কারণে পাশের কক্ষে থাকা শিক্ষার্থীদের অসুবিধা হচ্ছিল। এ কারণে তাকে বেত দিয়ে দুইটি আঘাত করা হয়েছে। আঘাতগুলো বেশি জোরে করা হয়নি। এতে অসুস্থ হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না।
মাদরাসার পরিচালনা কমিটির সভাপতি এনামুল হক মন্টু বলেন, বিষয়টি সন্ধ্যার পর আমার কানে এসেছে। আগামীকাল মাদরাসায় গিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর মোহাম্মদ হোসাইনী বলেন, শিক্ষার্থীর অভিভাবকের অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন পেলে সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মুলাদী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সাইয়েদুর রহমান মাদরাসাছাত্রী আইরিনের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, বিকেলে ওই ছাত্রী হাসপাতালে ভর্তি হয়। চিকিৎসা শেষে ব্যবস্থাপত্র দিয়ে রাত ৯টার দিকে তাকে রিলিজ দেওয়া হয়েছে।
Leave a Reply