শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:০৬ পূর্বাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল ডেস্ক॥ বরিশালে সিটি করপোরেশন (বিসিসি) নির্বাচনে ভীত-সন্ত্রস্ত পরিবেশ তৈরির চেষ্টার পাশাপাশি লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করছেন মেয়র প্রার্থীরা। এমন কোনো ঘটনা ঘটলে কড়া আন্দোলনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়মী লীগের মনোনীত প্রার্থী ছাড়া বাকি মেয়র প্রার্থীরা। শনিবার নগরের বিভিন্ন এলাকায় গণসংযোগের সময় এ হুঁশিয়ারি দেন তারা।
গণসংযোগকালে জাতীয় পার্টির প্রার্থী ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, ‘ভোট দিতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন ভোটাররা। তবে বরিশালে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড এখনও নিশ্চিত হয়নি। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এখানে বিভিন্নভাবে ভীত-সন্ত্রস্ত পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছে।
‘ছাত্রলীগের বিশেষ এক নেতা এসে নৌকার লোগো লাগিয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন বরিশালে। তিনি বরিশালের সিটি নির্বাচনে বিভাগের বিভিন্ন জেলা থেকে লোক এনে একটা ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছেন। তাদের উদ্দেশ্য, জনগণ যেন ভোটকেন্দ্রে না যায়। এ ধরনের অবস্থা চলতে থাকলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে সম্মিলিতভাবে তা প্রতিহত করার ঘোষণা দেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘সরকারের কাছে অনুরোধ জানাচ্ছি, তারা যেন এখানে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ডটা নিশ্চিত করেন। নাহলে সারা দেশে ভোট চুরির বিরুদ্ধে যে গণআন্দোলন শুরু হবে, সেই আন্দোলনে পদত্যাগ করতে বাধ্য হবে সরকার।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘বরিশালে ধীরে ধীরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নষ্ট হওয়ার দিকেই যাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। আমাদের কিছু লোককে হয়রানি করা হয়েছে।
‘টুপি-দাড়ি দেখে আমাদের লোকজনকে জিজ্ঞাসা করা হচ্ছে, কোথায় বাড়ি? কেন এসেছেন? অথচ, নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে কোথাও লেখা নেই যে শহরের বাইরের কেউ ভোট চাইতে পারবে না বা আসতে পারবে না।
তিনি বলেন, ‘আশেপাশের কিছু লোক তো আসতেই পারে এবং সব প্রার্থীর নির্বাচনী প্রচারণার জন্যই তারা আসেন। আমি মনে করি নির্বাচনী আচরণবিধির মধ্যে যা আছে, সেই দিকে প্রশাসনের লক্ষ্য রাখা উচিত। এর বাইরে অতি উৎসাহিত হয়ে অন্য কিছু না করাই ভালো।
‘নির্বাচনী বিধি ছাড়া যদি আমি কোনো কাজ করি, তাহলে বলবেন। কিন্তু বিধির মধ্যে থেকে কাজ হলে অতি উৎসাহী হয়ে আমাদের বাধা দেয়ার কোনো আইনগত ভিত্তি নেই। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি করব, বরিশালের নির্বাচনের দিকে গোটা দেশ তাকিয়ে আছে। ফলে নির্বাচন যদি কোনো অবস্থায় প্রশ্নবিদ্ধ হয়, যদি গ্রহণযোগ্য না হয়, তাহলে বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ আন্দোলনের পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেবে।
ভোটারদের সমর্থনের ব্যাপারে এসময় তিনি বলেন, ‘ভোটারদের কাছ থেকে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছি। তারা ইতোমধ্যে ভোট দেয়ার প্রস্তুতি নিয়ে ফেলছে। যে ব্যক্তির মাধ্যমে বরিশালের সব দিকের উন্নয়ন হবে, সে রকম একজন প্রার্থীকে ভোটাররা যাতে নির্বাচিত করেন, আমি সে দাবি জানাই। ফেয়ার-ফ্রি ভোট হলে হাতপাখা জয়লাভ করবে।
জাকের পার্টির প্রার্থী মিজানুর রহমান বাচ্চুও মাঠে নেমে যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছেন বলে জানান। তিনি বলেন, যদি সুষ্ঠু নির্বাচন হয় ও কমিশন যদি সঠিকভাবে ভোট গ্রহণের ব্যবস্থা করতে পারে, তাহলে আমি জয়ের আশা রাখি।
তবে এখন পর্যন্ত অস্বাভাবিক কিছু দেখছেন না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ (খোকন সেরনিয়াবাত)।
এদিকে নির্বাচনে প্রচারের কাজে বাধা দেয়ার অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা কামরুল আহসান রুপনের তিন কর্মীকে আটকের অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে রুপন বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে গেলেও তারা সঠিকভাবে কিছু বলছে না। বিকেল সাড়ে ৪টায় আদালতে গিয়ে জানতে পারলাম রমজান, মোনায়েম খান, সৈয়দ রফিকুল ইসলাম মন্টু নামে আমার তিন কর্মীকে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ বিনা কারণে গ্রেপ্তার করেছে। কিন্তু তাদের এখনও আদালতে তোলেনি।
এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ সূত্র জানায়, বরিশাল মেট্রোপলিটনের কাউনিয়া ও কোতোয়ালি থানা পুলিশ শুক্রবার রাত থেকে শনিবার সকাল পর্যন্ত সন্দেহজনক কয়েকজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তাদের ছেড়ে দেয়াও হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেন কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুর রহমান মুকুল।
Leave a Reply