সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২৫, ০২:৪১ পূর্বাহ্ন
আগৈলঝাড়া প্রতিনিধি॥ বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার বাগধা ইউনিয়নের খাজুরিয়া গ্রামে নিজ ঘর থেকে তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নুশরাত জাহান নোহার (৯) মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় আদালতে হত্যা মামলার এজাহার জমা দেয়া হয়েছে।
সোমবার দুপুরে নিহতের মা তানিয়া বেগম ৩ জনকে আসামি করে এজাহার জমা দেন। সিনিয়র ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক শাম্মি আক্তার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর মামলাটি নথিভুক্ত করা এবং ওই পর্যন্ত নথির কার্যক্রম স্থগিত রাখারও নির্দেশ দেন।
এজাহারে উল্লেখিত আসামিরা হচ্ছেন, নিহতের বাবা ও বাদীর সাবেক স্বামী সুমন মিয়া, সুমনের চতুর্থ স্ত্রী ঝুমুর জামান ও সুমনের বোন লিপি বেগম।
বাদী তার এজাহারে উল্লেখ করেছেন, ২০১৭ সালের ৬ আগস্ট সুমন মিয়া তাকে তালাক দেন। এরপর থেকে সে ঢাকায় বসবাস করে আসছেন। তার সন্তান নিহত নোহাকে সুমনের বাবা আব্দুর রহিম মিয়া খুব আদর করতেন। কিন্তু তা সহ্য করতে পারতেন না সুমন ও তার স্ত্রী ঝুমুর।ঘটনার দিন গত ৯ সেপ্টেম্বর নোহা উপজেলার দারুল ফালাহ প্রি ক্যাডেট একাডেমিতে সাপ্তাহিক পরীক্ষা দিতে যায়। সেখানে কম নম্বর পাওয়া শিক্ষক তাকে বকাঝকা ও লাঠি দিয়ে পিটায় বলে ওই পরিবারের সকলকে জানায়। এ জন্য ঘরে বসে সে কিছুক্ষণ কান্নাকাটিও করে।
বাদীর দাবি, এ ঘটনাকে পুঁজি করে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তার মেয়ে নোহাকে বালিশচাপায় হত্যা করে আসামিরা। এরপর গামছা ও ওড়নায় যুক্ত করে নোহাকে আড়ার সাথে ঝুলিয়ে দিয়ে আত্মহত্যার প্রচার চালানো হয়। এমনকি বিষয়টিকে গ্রহণযোগ্য করতে সুমন মিয়া বাদী হয়ে শিক্ষক সুমন পাইককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন, যা ছিল সম্পূর্ণ সাজানো নাটক।
শিশুর মা তানিয়া বেগম আরও বলেন, ৯ বছরের শিশু আত্মহত্যা চিন্তাও করতে পারে না। সেখানে গামছা ও ওড়না যুক্ত করে আড়ার সাথে ফাঁস দেয়া কোনভাবেই সম্ভব নয়। এ কারণে তিনি আদালতে ওই তিনজনকে আসামি করে হত্যা মামলার এজাহার জমা দিয়েছেন বলে জানান।
প্রসঙ্গত, গত ৯ সেপ্টেম্বর দারুল ফালাহ প্রি-ক্যাডেট একাডেমির তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী নোহার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। অভিযোগ ওঠে, মাদ্রাসায় অকৃতকার্য হওয়ায় শিক্ষক মারধর ও গালমন্দ করায় নোহা অভিমান করে আত্মহত্যা করে।
এ ঘটনায় পরদিন ১০ সেপ্টেম্বর নিহত নোহার বাবা সুমন মিয়া বাদী হয়ে আত্মহত্যার প্ররোচণা চালিয়ে শিক্ষক সুমন পাইককে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকে পলাতক রয়েছে আসামি সুমন পাইক।
Leave a Reply