রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ১১:০০ অপরাহ্ন
আমতলী প্রতিনিধি॥ বরগুনার তালতলী ২০ শয্যার হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। চিকিৎসকদের অবহেলা ও অব্যবস্থাপনার কারণে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা সঠিক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। মুমূর্ষু রোগীদের ভর্তির জন্য হাসপাতালে নিয়ে এলেও অনেক সময় চিকিৎসকদের পাওয়া যাচ্ছে না বলে এমন অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
জানা গেছে, গত কয়েক দিনে করোনা মহামারির সঙ্গে ডায়েরিয়া রোগীর সংখ্যা পাল্লা দিয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে এ হাসপাতালে ডায়েরিয়া রোগে আক্রান্ত ১০ জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। আর এখন হাসপাতালে যে কয়জন রোগী ভর্তি রয়েছেন সকল রোগীই কিন্ত ডায়েরিয়া রোগে আক্রান্ত।
রোগী ও তাদের স্বজনদের অভিযোগ, ভর্তি রোগীরা এ হাসপাতাল থেকে সঠিক চিকিৎসা পাচ্ছেন না। হাসপাতালের চিকিৎসকরা নিয়মিত ডিউটি করেন না। অনেক সময় ঘণ্টার পর ঘণ্টা হাসপাতালে রোগী নিয়ে বসে থাকলেও কোনো চিকিৎসকের খোঁজ মেলে না। সেই সাথে হাপাতালের প্রতিটি কক্ষে ময়লা-অবর্জনাসহ নোংরা পরিবেশ বিরাজ করছে। এ সকল কক্ষ থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধ। রোগীদের ববহৃত টয়লেট বাথরুমগুলো একেবারে ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাথরুম ব্যবহারের জন্য নেই পর্যাপ্ত পানির ব্যবস্থা। এতে হাসপাতালে ভর্তি রোগীদের সাথে আসা সুস্থ্য মানুষজনও অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
ডায়েরিয়া রোগে আক্রান্ত নুসরাত জাহানের বাবা কামাল হোসেন অভিযোগ করে বলেন, গতকাল (মঙ্গলবার) রাত ৯ টায় আমার মেয়ে বাড়িতে বসে ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত হয়। আজ (বুধবার) সকাল ৭টার দিকে আমার স্ত্রী অসুস্থ মেয়েকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে আসে। সে সময় হাসপাতালে কর্মরত ৫ জন চিকিৎসকের কেহই হাসপাতালে উপস্থিত ছিলেন না। ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করে আমার স্ত্রী বিষয়টি আমাকে জানালে আমি সকাল ১০টার দিকে মুঠোফোনে স্থানীয় সাংবাদিকদের জানাই। তারা দ্রুত হাসপাতালে ছুটে আসেন। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে একে একে সকল চিকিৎসকরা হাসপাতালে উপস্থিত হতে থাকেন। এ সময় হাসপাতালে কর্মরত উপস্থিত ৫ জন চিকিৎসকদের উপস্থিতিতেই উপরোক্ত বিষয় জানতে চাইলে তারা এ বিষয় কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তারা বলেন, এ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশ ছাড়া আমাদের কিছু বলার নেই।
তালতলী ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. ফাইজুর রহমান মুঠোফোনে বলেন, বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি ১০ জন রোগীই ডায়েরিয়ায় আক্রান্ত। এদের মধ্যে ৩ জনের অবস্থা আশংকাজনক।
বরগুনা সিভিল সার্জন ডা. মারিয়া হাসানের সাথে মুঠোফোনে জানতে এ বিষয়ে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তার কাছে জিজ্ঞেস করেন।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোনায়েম সাদ মুঠোফোনে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। মহামারি করোনার মধ্যে রোগীরা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে এসে সঠিক চিকিৎসা ও চিকিৎসক পাবে না সেটা হতে পারে না। বিষয়টি আমি জেনে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।
Leave a Reply